আমি টোকেন টেস্ট পলিসি হিসেবে নির্বাচনে এসেছি: মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান (ভিডিও)

SHARE

য়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),কিশোরগঞ্জ-২ প্রতিনিধি,বৃহস্পতিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৩  : জয়ের ব্যাপারে কতটুকু আশাবাদী এমন প্রশ্নের জবাবে কিশোরগঞ্জ-২ (কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান বলেছেন, একটুও না। বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) বিকেলে জেলা রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে ফেরার পথে নতুন জেলখানা মোড়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বালার সময় তিনি এমন মন্তব্য করেন।

Advertisement

সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান বলেন, আপনারা জানেন যে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর সরকার অনেক হামলা-মামলা করছে। তারা ঘর থেকে বের হতে পারছে না। লাখ লাখ নেতাকর্মী আজকে গৃহহারা, বাড়িহারা। তারা বাইরে থাকছে, এদের আমাদের ঘরে ফিরিয়ে আনতে হবে।

তিনি বলেন, সরকার যদি মনে করে তারা মানুষকে পিটাইয়া-মাইরা দেশ শাসন করবে। জেলে দিয়ে দেশ শাসন করবে- এটা মেনে নেয়া যায় না। হয়তো আমি ভীতু বলে কথা বলতে পারতেছি না। কিন্তু আমি মনে করি দলে যারা সাহসী ভাইয়েরা আছে তাদের বেরিয়ে আসা উচিৎ। এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া উচিৎ। শক্ত প্রতিবাদ করা উচিৎ। হাজার না আজকে লাখ-লাখ বিএনপির নেতাকর্মী গৃহহারা। রাতে অন্যের বাড়িতে ঘুমাচ্ছে। এটা একটা সভ্য দেশে কাম্য নয়। আজকে সরকার যতই উন্নতি করুক এই সরকারকে জনগণ মেনে নেবে না।

বিএনপির বহিষ্কৃত এ নেতা বলেন, আমি মনে করি সরকারকে নিজের স্বার্থে দেশের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনা উচিৎ। নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে হলে দেশের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনা দরকার। বিএনপি নির্বাচনে আসে না- এটা বিএনপির ব্যাপার। বিএনপি যদি নির্বাচন বয়কট করতে চায় তখন আপনারা দেখেন নির্বাচন বয়কট করে কিনা। আপনারা হামলা-মামলা করবেন কেন, লোকদের বাড়িতে ঘুমাতে দেবেন না কেন। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে অভিযোগ করেন, আপনারা মামলা করেন। মামলা করবেন আবার জামিন দেবেন না, লোকদের দাবড়াইয়া বেড়াবেন। আবার বলবেন নির্বাচনে আসতে হবে। এভাবে তো হবে না।

মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান বলেন, আমি টোকেন টেস্ট পলিসি হিসেবে নির্বাচনে এসেছি। আমি বলতে চাই, হ্যাঁ আমরা নির্বাচন করতে চাই। কিন্তু কি পরিবেশ করে সেটাও আমরা দেখতে চাই। নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ করতে পারে কিনা সেটাও দেখতে চাই। আমার দল (বিএনপি) তোমাদের বিশ্বাস করতে পারছে না বলে তারা নির্বাচনে আসছে না। আমি তোমাদের বিশ্বাস করেছি, তাই আমি নির্বাচনে এসেছি। এখন আমি দেখতে চাই তোমরা কেমন পরিবেশ বজায় রাখো।

Advertisement

তিনি বলেন, বিএনপির তো কর্মসূচির শেষ নাই, বিএনপি যদি নির্বাচনে আসে বিএনপিকে কর্মসূচি চালিয়ে যেতে হবে। আজকে হরতাল গেল, হরতালের পরে কি কর্মসূচি দেবে আমি জানি না। আমি বিনীতভাবে অনুরোধ করবো এই সমস্ত কর্মসূচির নামে মানুষকে হয়রানি না করে আপাতত রেস্ট করেন, অপেক্ষা করেন। নির্বাচনে আসেন নাই ঠিক আছে। নির্বাচনে আসার সময় চলে গেছে এখন আর বলে লাভ নেই। ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা করেন। নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে আমিই আন্দোলনের পরিবেশ তৈরি করে দেবো। তখন আমরা ব্যাপক আন্দোলন করার সুযোগ পাবো। ততদিন একটু স্বস্তি দেন, আমরা নেতাকর্মীদের জেল থেকে বের করে নিয়ে আসি।

বিএনপির বহিষ্কৃত এ নেতা আরও বলেন, আমার একমাত্র প্রচেষ্টা হবে, আমি আপ্রাণ চেষ্টা করব সারা বাংলাদেশে যত নেতাকর্মী জেলে আছে, তাদের মুক্ত করে নিয়ে আসতে। আমি দেশমাতা বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আনার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো। আমি চেষ্টা করবো আমার কটিয়াদী-পাকুন্দিয়ার যত নেতাকর্মী জেলে আছে, তাদের জেল থেকে মুক্ত করতে। আমি ইতোমধ্যে নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি। আমি আজ বলে দিচ্ছি, সবাই যেন বাড়িতে ঘুমায়, বাড়িতে থাকে। যদি কারও বাড়িতে পুলিশ যায়, আমি এর জবাবদিহি চাইবো। পুলিশ কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চাইব কেন তারা যাচ্ছে।

মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান বলেন, আমি আপনাদের মাধ্যমে বলতে চাই কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া সকল নেতাকর্মীরা যাতে বাড়িতে চলে আসে, বাড়িতে থাকে, রাস্তাঘাটে চলে। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক বা না করুক- এটা তাদের একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার। একজন নাগরিক হিসেবে তার পূর্ণ অধিকার সে যেন পায়। সে যেন তার নিজের বাড়িতে থাকতে পারে। যাদের গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে রাখা হয়েছে আগামী রোববারের মধ্যে আমি তাদের মুক্তি চাই। আমার এখানে বিএনপির যে আইনজীবী আছেন, অ্যাডভোকেট জালাল সাহেব উনাকে বলবো- যারা জেলে আছে তাদের জামিন আবেদন দাখিল করার জন্য। আমরা দেখি তাদের জামিন কেন দেবে না। দরকার পড়লে আমি নিজেও কোর্টে থাকবো।

Advertisement

তিনি বলেন, আমি আমার এলাকায় ভোটারদের কাছে একটাই মেসেজ দিতে চাচ্ছি, সরকার নিজেই স্বীকার করেছে আগের যে এমপি ছিলেন, তাকে এখানে পরিবর্তন করে দেয়া হয়েছে। তবে পরিবর্তন করে যাকে এই এলাকায় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেয়া হয়েছে, সেটা এলাকার জন্য ঠিক হয়নি। এলাকার জনগণের স্বার্থের জন্য, কল্যাণের জন্য, নিরাপত্তার জন্য এখানকার আইনশৃঙ্খলা উন্নত করার জন্য আমার মনে হয় এখানে পরিবর্তন দরকার। আওয়ামী লীগ যাকে মনোনয়ন দিয়েছে, আমি মনে করি এলাকার মানুষের জন্য ভালো হবে না। জনগণ যাতে ভালো একজন প্রার্থীকে সিলেক্ট করে দেয়।