ব্যাংক কর্মকর্তা ও সিটি কর্পোরেশন কর্মকর্তাকে পেটানোর পর এবার ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের আদাবর থানা পুলিশের এক উপ-পরিদর্শকের (এসআই) বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এক ছাত্রীকে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত এসআইয়ের নাম রতন কুমার।
জানা যায়, আশা ইউনিভার্সিটির ছাত্রী ফারহানা আক্তারকে ইউনিভার্সিটি থেকে বের হয়ে বই কিনতে শিয়া মসজিদের দিকে রিকশায় যাচ্ছিলেন। এ সময় এসআই রতন কুমার ফারহানাকে হয়রানির চেষ্টা করেন। শুধু তাই নয়, রিকশা থেকে জোর করে নামিয়ে একটি দোকানের ভেতরে তাকে নেয়া হয়। পরে ফারহানাকে ইয়াবা ব্যবসায়ী বানানোর অপচেষ্টাও চালান এসআই।
বিষয়টি জানতে পেরে রাতেই রতন কুমারকে প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নেন তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার(ডিসি) বিপ্লব কুমার সরকার। তিনি নিজে প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নির্যাতনের শিকার ফারহানা আক্তার জানান, ঘটনার পরপরই থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। এ ঘটনায় আদালতে মামলা করবো।
ঘটনাটি বিকেলে ঘটলেও রাত ১১টা পর্যন্ত তেজগাঁও বিভাগের ডিসিকে জানায়নি সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ। ডিসির কাছে যেন ঘটনাটি না পৌঁছায় সেজন্য থানার ওসিসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা তা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চালান।
তবে সকালে এ বিষয়ে তেজগাঁও জোনের ডিসি বিপ্লব সরকার বলেন, ঘটনা বিকেলে হলেও রাত ১১টা ৩মিনিটে শোনার পরপরই এসআই রতনকে প্রত্যাহার করার আদেশ দিয়েছি।
ওই ছাত্রীর অভিযোগ, বিকেলে তিনি ইউনিভার্সিটি থেকে বেরিয়ে বই কিনতে শিয়া মসজিদের দিকে রিকশায় যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে মসজিদের বিপরীতে আদাবর থানার এসআই রতন কুমারসহ পুলিশের তিন সদস্য তাকে বহনকারী রিকশাটি থামান। কোনো কিছু বলার আগেই তার কাছে ইয়াবা আছে কি না জানতে চান এসআই। এতে তিনি চরম বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন। এক পর্যায়ে শিয়া মসজিদের বিপরীতে একটি ইলেকট্রিকের দোকানে পুলিশ সদস্যরা জোর করে তাকে নিয়ে যান। সেখানে নেয়ার পর এসআই রতন তাকে অনৈতিক প্রস্তাবও দেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয়পত্র দেখানোর পরেও তাকে ইয়াবা ব্যবসায়ী বানানোর অপচেষ্টা করা হয়। জনসম্মুখে অথবা থানায় গিয়ে ব্যাগ দেখাতে চাইলে রাজি হননি রতন। পরে ফারহানা থানায় গিয়ে অভিযোগ করেন।
ফারহানার স্বামী সজিব আহমেদ বলেন, স্থানীয় লোকদের সহায়তায় ফারহানা ছাড়া পেলে এসআই রতন একজনকে দিয়ে আবার তার স্ত্রীকে ফোন করান। তখন ওপাশ থেকে লোকটি বলেন, আপনাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এরপর আপনাকে যেখানে স্যার আসতে বলে সেখানে যাবেন। এছাড়াও কিছু আপত্তিকর কথাবার্তা বলেন।
তবে অভিযুক্ত এসআই রতন কুমারের দাবি, ফারহানাকে রিকশা থেকে নামিয়ে তল্লাশি করা হয়নি। তাকে তিনি আগে থেকে চেনেন। তিনি আদাবরের যুবদল নেতা সজিব আহমেদ রানার স্ত্রী। তার স্বামীর বিরুদ্ধে নাশকতার অভিযোগ রয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে একই এলাকায় ব্যাংক কর্মকর্তা গোলাম রাব্বীকে মাদক ব্যবসায়ী সাজানোর অপচেষ্টা করে নির্যাতন করেছিলেন মোহাম্মদপুর থানার এসআই মাসুদ। পরে তাকে প্রত্যাহার করা হয়।