ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি,বুধবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৩ : গাজা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের ইসরায়েল সমর্থন বিপদে ফেলতে যাচ্ছে জো বাইডেনকে। চলমান যুদ্ধে তার ইসরায়েলের পাশে থাকার অঙ্গীকারের কারণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের উপর ক্ষুব্ধ আরব ভোটাররা। যার প্রভাবে আগামী মার্কিন নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্রের মুসলীম ভোটাররা বাইডেন থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন বলে মনে করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে তার প্রতিদ্বন্দ্বি ডোনাল্ড ট্রাম্প তো বহু আগেই মুসলীম ভোটারদের বাতিলের খাতায়। গাজা যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের পাশে আছে। বাইডেনের এমন মন্তব্যে ক্ষুব্ধ গোটা আরব বিশ্ব।
Advertisement
খোদ আমেরিকান মুসলীম জনগোষ্ঠী বাইডেনের মুখে এমন বাণী মেনে নিতে পারেনি। তারা বলছে, গাজায় গণহত্যায় বাইডেনের এই সমর্থনের জবাব ২০২৪ সালের নির্বাচনে দেয়া হবে। ১৯৪৮ সালে নির্বাচনের আগে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হ্যারি ট্রুম্যান ইহুদীদের সমর্থন পেতে নির্লজ্জভাবে ইসরায়েল রাষ্ট্রপ্রতিষ্ঠায় স্বীকৃতি দিয়েছিলেন। তখনকার প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রে মুসলীম জনগোষ্ঠী সেভাবে প্রভাব বিস্তার করতে না পারলেও সময়ের পরিক্রমায় পালে্ট গেছে চিত্র।
Advertisement
এবার ২০২৪ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জো বাইডেন সম্ভবত তার পুরোনো প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্পের মুখোমুখি হচ্ছেন। আর এবারকার নির্বাচনের প্রধান নির্ধারণী বিষয় হবে ইহুদি নয়, বরং আরব ভোট। ১৯৪৮ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হ্যারি ট্রুম্যান ইহুদি ভোটকে প্রাধান্য দিলেও ২০২৪ সালে বাইডেনের সেই পথে হাঁটার সুযোগ নেই। কারণ বিভিন্ন রাজ্যে কত আরব ও মুসলিম ভোট রয়েছে সেই হিসাবটাই বাইডেনে পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়াবে। যুক্তরাষ্ট্রের ৭ টি দোদুল্যমান রাজ্যের অন্তত ৫টিতে উল্লেখযোগ্য আরব ও মুসলিম ভোটার রয়েছেন।
এদের ৭০ শতাংশ বা তার চেয়ে বেশি ডেমোক্র্যাটদের ভোট দিয়ে থাকেন। এবার বাইডেনের ইসরায়েলপ্রীতি সে অবস্থার পরিবর্তন আনবে। এটা নিশ্চিত করেই বলা যায়। তারা জোট বেঁধে বাইডেনকে ভোট না দিলে কিংবা ভোটদানে বিরত থাকলে রাজ্যের ১৬টি ইলেকটোরাল ভোটে দারুণ প্রভাব পড়বে। গাজায় চলমান যুদ্ধ এবং দখলদার ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় ৪ হাজার শিশুসহ ১০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনির মৃত্যু যুক্তরাষ্ট্রের আরব ও মুসলিম ভোটারদের তীব্র বেদনা ও ক্রোধের কারণ হয়ে উঠেছে।
Advertisement
এই যুদ্ধে বাইডেন প্রশাসন ইসরায়েলি হামলাকে ন্যায়সংগত আত্মরক্ষা বলেই ক্ষান্ত হয়নি বরং সে অর্থ, সৈন্য ও অস্ত্র-বারুদ দিয়েও সমর্থন জোগাচ্ছে। বাইডেনকে মনে রাখতে হবে ২০২০ সালের মার্কিন নির্বাচনে সাত ‘দোদুল্যমান রাজ্যে মুসলিম ভোট ট্রাম্পের বিরুদ্ধে তার জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। জনমত জরীপে ট্রাম্প এগিয়ে থাকলেও এবার মুসলীম জনগোষ্ঠীর কাছে ট্রাম্পও যা বাইডেনও তা। অতএব গাজায় নিরীহ ফিলিস্তিনি ও শিশুদের হত্যাবন্ধে যুদ্ববিরতির আহ্বান না জানানো পর্যন্ত বাইডেনের নির্বাচনি পথ মসৃণ হবে না, তা হলফ করে বলাই যায়।