ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),রাজশাহীর পুঠিয়া প্রতিনিধি, বৃহস্পতিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৩ : রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বিড়ালদহ সৈয়দ করম আলী দারুস সুন্নাহ ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে এমপি ডা. মনসুরের বাড়িতে নিয়ে নির্যাতনের অভিযোগে সাত ক্যাডারের বিরুদ্ধে থানায় মামলার অভিযোগ গ্রহণ করেনি পুলিশ। কারণ মামলায় ৭ প্রত্যক্ষ আসামির সঙ্গে এ ঘটনার হুকুমদাতা হিসেবে এমপি মনসুর রহমানের নাম উল্লেখ করা হয়। তাই পুঠিয়া থানা পুলিশ মামলাটি গ্রহণ না করে বাদীকে বলেছে স্পিকারের অনুমতি আনতে। একদিন আগেই মামলার আবেদন থানায় জমা দেন অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান।
Advertisement
ভুক্তভোগীর দেয়া আবেদনে অভিযুক্তরা সবাই রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনের সংসদ সদস্য ডা. মনসুরের অনুসারী। অভিযুক্তরা হলেন- মাইনুল ইসলাম মাহিন (৩০), শরিফুল ইসলাম ডাবলু (২৯), তুষার (২৪), আব্দুর রহমান (৩৫), হুমায়ুন ওরফে হুমা (৪২), বাবলুর রহমান (৪৫) ও কামাল হোসেন (৪৮)। তবে এমপি মনসুর রহমানের নাম নির্দেশদাতা হিসেবে উল্লেখ করেন ভুক্তভোগী।
অভিযোগে ভুক্তভোগী জানান, ১৪ অক্টোবর রাজশাহী-৫ আসনের এমপি মনসুর রহমান ফোন করে তাকে তার রাজশাহী শহরের কাজিহাটার বাসায় যেতে বলেন। তিনি পাবনায় নিজের বাড়িতে আছেন জানিয়ে পরে দেখা করবেন বলেন। এ সময় এমপি মনসুর মাদরাসা অধ্যক্ষকে বলেন, আমি মনসুর রহমান এলাকার এমপি। না এলে ঘাড়ে পাক দিয়ে আনা হবে। অধ্যক্ষ এজাহারে বলেন, মাদরাসায় দাপ্তরিক কাজ থাকায় তিনি পরদিন এমপির বাসায় যেতে পারেননি।
Advertisement
এদিকে গত সোমবার তিনি মাদরাসায় দাপ্তরিক কাজে ব্যস্ত ছিলেন। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে একটি মাইক্রোবাস গিয়ে থামে মাদরাসার ভেতর। মাহিনের নেতৃত্বে মাইক্রোবাস থেকে বের হয়ে আসামিরা সরাসরি তার কক্ষে প্রবেশ করেন। তাকে কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়ে টানতে টানতে তুলে এনে মাইক্রোবাসে তোলা হয়। মাইক্রোবাসের ভেতরে একদফা তাকে কিল-ঘুসি মারে আসামিরা। ঘণ্টাখানেকের মধ্যে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় এমপি মনসুরের কাজিহাটার বাসভবনে। সেখানে এমপির সামনেই আরেক দফা মারধর করা হয়। এ সময় এমপি মনসুর তাকে মাদরাসার কমিটি গঠন নিয়ে বিভিন্নভাবে শাসানি দেন। দুই ঘণ্টা আটকে রাখার পর অধ্যক্ষকে পুলিশের গাড়িতে তুলে দেয়া হয়। তাকে হত্যার উদ্দেশ্যেই অপহরণ করা হয়েছিল। কিন্তু মাদরাসার শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করলে সন্ত্রাসীরা তাকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হন।
অধ্যক্ষ আরও বলেন, আমি ও আমার পরিবারের নিরাপত্তার জন্য সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছি। সন্ত্রাসীরা যে কোনো সময় আবার আমাকে অপহরণ করতে পারে বলে আশঙ্কায় ভুগছি। তা ছাড়া তারা মাদরাসার শিক্ষার্থীদেরও অপহরণ ও তাদের ক্ষতিসাধন করতে পারে এমন আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে মামলার আবেদন জমা দেয়ার পর থেকেই তাকে নানারকম চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে জানিয়ে অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান বলেন, সারাদিন হুমকির ওপর আছি। বিভিন্নজন বিভিন্ন নম্বর থেকে ফোন করে বলছে, তাদের নামে মামলা করেছি কেন? মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।
মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে পুঠিয়া থানার ওসি তদন্ত রফিকুল ইসলাম কোনো মন্তব্য করতে রাজী হননি।