ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি ,বুধবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ : ছাত্রলীগের দুই কেন্দ্রীয় নেতাকে থানায় নিয়ে নির্যাতন, পরবর্তীতে নানা নাটকীয়তার পর সেদিনের হাসাপাতলের ইটিটি রুমে ঘটে যাওয়া ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
Advertisement
ভিডিওতে বারডেম হাসাপাতলে নারীদের জন্য নির্ধারিত ওই ইটিটি রুমে দেখা যায় এডিসি হারুনকে। নারীদের জন্য নির্ধারিত ইটিটি রুমে কোনো পুরুষের প্রবেশ করার কথা নয়।
এদিকে এ ঘটনায় মুখ খুলেছেন ডিএমপির অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার সানজিদা আফরিন। যিনি রাষ্ট্রপতির সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) আজিজুল হক মামুনের স্ত্রী।
তিনি ৩১তম বিসিএসের কর্মকর্তা। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ক্রাইম বিভাগে অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন তিনি।
সানজিদা আফরিন বলেন, আমার হাজবেন্ড তার সঙ্গে থাকা লোকজনকে বলেন, এই দুজনের ভিডিও কর।
মঙ্গলবার ১২ (সেপ্টম্বর) গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।
সানজিদা আফরিন নিপা বলেন, আমার বেশ কিছুদিন ধরে কার্ডিয়াক সমস্যা হচ্ছে। ২০১৯ সাল থেকে আমি হাইপারটেনশনের ওষুধ খাচ্ছি। গত ৪-৫ মাস ধরে সমস্যাটা বেড়ে যায়। গত ২-৩ সপ্তাহ ধরে চেস্ট পেইনটা একটু বেড়ে যায়। তাই ডাক্তার দেখানোর দরকার ছিল।
Advertisement
নিপা বলেন, বারডেম হাসপাতাল যেহেতু স্যারের (এডিসি হারুন) জুরিসডিকশনের (আওতা) মধ্যে পড়ে তাই ডাক্তারের সিরিয়াল পাওয়ার জন্য আমি স্যারের হেল্প চেয়েছিলাম।
তিনি বলেন,যখন ডাক্তার দেখাতে যাই ডাক্তার ছিলেন কনফারেন্সে। পরে আমি স্যার ( হারুন) কে জানাই স্যার ডাক্তার তো কনফারেন্সে। তিনি বললেন দাঁড়ান আমি আসতেছি দেখি। এরপর স্যার এলেন। আসার পর ডাক্তার ম্যানেজ হলো। ডাক্তার কিছু টেস্ট দিলেন। ব্লাড টেস্টের জন্য স্যাম্পল দিলাম। ইকো টেস্ট আর ইসিজি করানো হলো। তখন ইটিটি প্রায় শেষের দিকে বাইরে গোলমালের আওয়াজ পেলাম। প্রথম যে সাউন্ডটা (শব্দটা) কানে আসে স্যার (এডিসি হারুন) চিৎকার করে বলছেন—‘ভাই আপনি গায়ে হাত তুললেন কেন? আপনি তো আমার গায়ে হাত তুলতে পারেন না’।’
সানজিদা বলেন, প্রথমে ধারণা হয়েছিল অন্য কারও সঙ্গে হয়তো স্যারের (হারুন) ঝামেলা হয়েছে। কিন্তু কিছুক্ষণ পর দেখতে পাই আমার হাজবেন্ড (আজিজুল হক মামুন)। উনি আসলে ওখানে কী করছিলেন কেন গিয়েছিলেন জানি না। ওনাকে টোটালি আউট অব মাইন্ড লাগছিল (মানসিকভাবে স্থির ছিলেন না), খুবই উত্তেজিত ছিলেন। ওনার সঙ্গে আরও কয়েকজন ছেলে ছিল, তাদের আমি চিনি না। তারা স্যারকে (এডিসি হারুন) মারতে মারতে ইটিটি রুমে নিয়ে এলেন।
সানজিদা আরও বলেন, ওই সময় স্যার নিজের সেফটির (নিরাপত্তার) জন্য আমি যেখানে দাঁড়ানো ছিলাম সেই রুমের কোণায় দৌঁড়ে এসে দাঁড়ালেন। ইটিটি রুমে এত লোক ঢোকাতে, সেখানে একটা অকওয়ার্ড সিচুয়েশন (বিব্রতকর পরিস্থিতি) তৈরি হয়। কারণ ইটিটি রুমে রেস্ট্রিকশন (কড়াকড়ি) থাকে। তখন আমি শাউট করছিলাম।
তিনি আরও বলেন, এরপর আমার হাজবেন্ড তার সঙ্গে থাকা লোকজনকে বললেন, ‘এই দুজনের ভিডিও কর’। এরপর সবাই ফোন বের করে ভিডিও করে। তারা যখন ভিডিও করে তখন আমি আমার হাজবেন্ড এবং তার সঙ্গে থাকা লোকজনের সঙ্গে চিল্লাচিল্লি করি। এরপর যারা ভিডিও করছে তাদের মোবাইল কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে ব্যথা পাই। আমি চাচ্ছিলাম না সেই অবস্থায় কেউ আমার ভিডিও করুক। আর আমার হাজবেন্ডের সঙ্গে যেসব ছেলে ছিল আমি তাদের কাউকে চিনতামও না।
সানজিদা আরও বলেন, সেই অবস্থায় আমার হাজবেন্ড আমাকে চড় মারেন এবং স্যারকে বের করার চেষ্টা করছিলেন। তখন স্যারের কাছে বিষয়টি সেফ মনে হয়নি। এরপর স্যার কিছুক্ষণ অপেক্ষা করছিলেন। তখন হাসপাতালের সিকিউরিটির লোকজনও এলেন। এর ১০-১৫ মিনিট পর ফোর্স এলে তারা সেখান থেকে বের হয়ে যায়।
Advertisement
ঘটনার স্থান কোথায় এবং সময় জানতে চাইলে সানজিদা বলেন, ঘটনা ঘটেছে বারডেম হাসপাতালের চারতলার কার্ডিওলজি বিভাগে। ডাক্তার দেখানোর সিরিয়াল ছিল সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে। এরপর ৭টার দিকে স্যার (হারুন) এসেছিলেন। ডাক্তার আসার পর আমি ডাক্তারের চেম্বারে ঢুকি।
অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার সানজিদা আফরিন