গত চারদিন ধরে শরীয়তপুরে শীতের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় দুর্ভোগ বেড়েছে ছিন্নমূল মানুষের। তীব্র শীত আর এক টানা ঘন কুয়াশার কারণে শরীয়তপুরের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। তুষারাচ্ছন্ন বাতাস আর ঘন কুয়াশায়সহ হাড় কাপাঁনো শীতে জবুথবু হয়ে পড়েছে এ জেলার মানুষ।
শিশু ও বৃদ্ধরা ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এতে সর্দি, কাশি ও হাপানিজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। মজুর পরিবারের মধ্য বয়সী ও বৃদ্ধরা কর্মহীন হয়ে পড়েছে।
শরীয়তপুরের বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে দেখা যায়, জেলার গোসাইরহাট, ডামুড্যা, ভেদরগঞ্জ, নড়িয়া, জাজিরা ও সদর উপজেলা জুড়ে নেমে এসেছে উত্তর পশ্চিমের কনকনে শৈত্যপ্রবাহ। প্রচণ্ড তীব্র শীত আর এক টানা ঘন কুয়াশার কারণে শরীয়তপুরের জনজীবন অচল হয়ে পড়েছে। একই সঙ্গে ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে জনপদ। ঘন কুয়াশার কারণে যাবাহনগুলোকে দুপুর ১টা পর্যন্ত হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে। শীতের প্রকোপে অভাব মানুষের জীবন বাঁচানোই দায় হয়ে পড়েছে।
উত্তর বালুচরা গ্রামের আবদুল আজিজ শিকদার বলেন, আমরা খেটে খাওয়া মানুষ । প্রতিদিন কাজ না করলে আমাদের সংসার চলে না। কয়েকদিন যাবত অতিরিক্ত কুয়াশা ও প্রচণ্ড ঠান্ডা বাতাসের কারণে আমরা কাজে যেতে পারছি না। সরকারের পক্ষ থেকেও কোনো সহযোগিতা পাচ্ছি না।
জাজিরা উপজেলার নাওডোবা গ্রামের কৃষক মজিদ মিয়া বলেন, আমরা প্রতিদিন বদলা দিয়ে সংসার চালাই। ঘন কুয়াশা ও ঠান্ডার কারণে হাত পা অবশ হয়ে আসছে। কোনো কাজকর্ম করতে পারছি না।
গোসাইরহাট উপজেলার কুচাইপট্রির খবির খা বলেন, তীব্র শীত আর এক টানা ঘন কুয়াশার কারণে আমরা ক্ষেতে যেতে পারছি না। কিভাবে যে সংসার চালাবো জানি না।
ডামুড্যা উপজেলার পূর্ব ডামুড্যার মো. মনির হোসেন বলেন, কয়েকদিন যাবত শীতের কারণে আমরা বাসা থেকে বের হতে পারছি না। কবে যে শীত কমবে তাতো জানি না।
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. শেখ মোস্তফা খোকন বলেন, তীব্র শীতের কারণে সর্দি, কাশি ও হাপানিজনিত রোগের রোগী বেশি দেখছি। আগের তুলনায় সদর হাসপাতালে সর্দি, কাশি ও হাপানিজনিত রোগীর সংখ্যা বেশি। আমরা সঠিকভাবে চেষ্টা করছি তাদের চিকিৎসা দেয়ার জন্য।
গোসাইরহাট উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ নাসির উদ্দিন বলেন, অন্যান্য উপজেলার চেয়ে আমাদের উপজেলায় চরাঞ্চল বেশি। তাই আমরা চরাঞ্চলের শীতার্থ মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করছি। শীত থাকা পর্যন্ত শীতবস্ত্র বিতরণ চলবে।
জেলা প্রশাসক রাম চন্দ্র দাস বলেন, অন্যান্য জেলার মতো শরীয়তপুরেও তীব্র শীত আর এক টানা ঘন কুয়াশার কারণে জনজীবন অচল হয়ে পড়েছে। অন্যান্য বছরের ন্যায় এ বছরও শীতার্থদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করছি।