ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),বগুড়া প্রতিনিধি ,শুক্রবার, ২৫ আগস্ট ২০২৩ : সমিতিতে ১ লাখ টাকা রাখলে বছরে ২০ হাজার টাকা লাভ দেওয়া হবে- এমন প্রলোভন দেখিয়ে ‘প্রদীপ বহুমুখী সমবায় সমিতি’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান গ্রাহকের প্রায় ১৮ কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে বগুড়ার গাবতলী উপজেলার দূর্গাহাটা ইউনিয়নে।
Advertisement
গত কোরবানির ঈদের দিন থেকে সমিতির নির্বাহী পরিচালক কামরুল হাসান মিল্টনসহ সংশ্লিষ্ট কাউকে খুঁজে পাচ্ছে না সমিতির শতাধিক গ্রাহক। এরপর থেকেই গ্রাহকেরা তাদের টাকা ফেরত পেতে বিভিন্ন জনের দ্বারে ঘুরছেন।
বুধবার (২৩ আগস্ট) টাকা ফিরে পাওয়ার আশায় এবং ওই সমিতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বগুড়া জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন প্রতারণার শিকার ব্যক্তিরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালে মিল্টন দূর্গাপুর ইউনিয়নে প্রদীপ বহুমুখী সমবায় সমিতির কার্যক্রম শুরু করেন। পুরো ইউনিয়নে সমিতির লোক ছড়িয়ে দেন গ্রাহক বৃদ্ধি এবং সমিতিতে ডিপোজিট করার জন্য। ১ লাখ টাকা রাখলে বছরে ২০ হাজার টাকা লাভ দেওয়া হবে এমন প্রলোভন দেখিয়ে প্রায় ৩ হাজারের মতো গ্রাহককে তার সমিতিতে ডিপোজিট করান।
প্রথম দিকে গ্রাহক সংখ্যা কম থাকায় সমিতি থেকে লাভের টাকা প্রয়োজন মতো উঠাতে চাইলে গ্রাহককে তার টাকা দিয়ে দেওয়া হতো। এতে সবার মাঝে সমিতির প্রতি বিশ্বাস বেড়ে যায়। একপর্যায়ে গ্রাহক তাদের লাভের টাকা সমিতিতেই রেখে দেন। এছাড়া, অনেকে ডিপিএস সিস্টেমেও অল্প করে মাসিক টাকা রাখা শুরু করেন।
Advertisement
ধীরে ধীরে সমিতির গ্রাহক সংখ্যা বাড়তে থাকে। এছাড়া, ম্যাচিউরড হয়ে যাওয়া ডিপিএসের মালিকেরা টাকা ফেরত চাইলে শুরু হয় তালবাহানা। গত কোরবানির ঈদের দিন সমিতির নির্বাহী পরিচালক কামরুল হাসান মিল্টনসহ সংশ্লিষ্ট সবাই আত্মগোপনে চলে যান।
সমিতিতে টাকা রাখা গাবতলী উপজেলার নাসরিন সুলতানা বলেন, মিল্টনের সমিতিতে টাক রাখলে বছর শেষে ২০ হাজার টাকা লাভ দেবে এবং যখন খুশি তখন টাকা উঠানো যাবে। এছাড়া, মিল্টন আমাদের গ্রামের ছেলে। সেই বিশ্বাস থেকে মা-ভাই-বোন মিলে প্রায় ২৪ লাখ টাকার মতো রাখি। কিন্তু টাকা দেয়ার কথা বলে সে উধাও হয়ে গেছে। কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করছি সে যেন বিদেশে পালিয়ে যেতে না পারে।
রনি আক্তার নামে আরেক নারী বলেন, প্রায় এক বছর হলো সমিতিতে টাকা রাখি। এর মধ্যে, টাকার প্রয়োজন পড়লে তুলতে গেলে শুরু হয় তালবাহানা। সর্বশেষ চলতি মাসে টাকা ফেরত দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গত কোরবানির ঈদের দিন মিল্টন তার বউ ও ছেলেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে। এছাড়া, সমিতির কার্যালয়ে তালা দেওয়া।
এ বিষয়ে গাবতলী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সনাতন সরকার বলেন, এ সংক্রান্ত কোনো অভিযোগ আমার কাছে আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Advertisement
জেলা সমবায় অফিসার মাসুদ পারভেজ বলেন, কোনো সমবায় সমিতি এভাবে গ্রাহকের টাকা ডিপোজিট করাতে পারে না।
বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) আফসানা ইয়াসমিন বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। আমরা বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখবো। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।