ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি ,শুক্রবার, ১৮ আগস্ট ২০২৩ : অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন ও মৃত্যু সনদের রেজিস্ট্রেশন করতে পারছেন না নাগরিকরা। শুধু রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয় থেকে দেয়া গুটিকয়েক ইউজার আইডির মাধ্যমে তা করা যাচ্ছে। এতে উত্তর সিটিতে দীর্ঘ অপেক্ষার পর সনদ মিললেও দক্ষিণ সিটিতে একদমই বন্ধ। এ নিয়ে মুখ বন্ধ স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের রেজিস্ট্রার জেনারেলের।
Advertisement
জন্ম নিবন্ধন কিংবা মৃত্যু সনদের জন্য অনলাইন রেজিস্ট্রেশনের পর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সিটি করপোরেশন কার্যালয় কিংবা ইউনিয়ন পরিষদের অফিসে জমা দিয়ে যে কেউ এতদিন পেতেন এই সনদ। কয়েক মাস ধরে ওই সাইটে বন্ধ মানুষের প্রবেশাধিকার।
রাজধানীর মহাখালীতে সিটি করপোরেশনের জোন ৩, আঞ্চলিক কার্যালয়। মাস খানেক আগেও এখানে সেবাপ্রার্থীরা অনলাইন রেজিস্ট্রেশনের পর কাগজপত্র জমা দিলে পেতেন জন্ম নিবন্ধন সনদ। এখনও তা হচ্ছে তবে ভোগান্তি আর দীর্ঘ অপেক্ষার পর। রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয় থেকে দেয়া ইউজার আইডি দিয়ে একজন ব্যক্তিকে করতে হচ্ছে এতো মানুষের রেজিস্ট্রেশন।
ভুক্তভোগী একজন বলেন, এখানে অনেক মানুষ আসে। আমরা ঠিকমতো আবেদন করতে পারি না। সারাদিনে হয়তো দশটা আবেদন করা যেতে পারে। কিন্তু লোক হয় ৫০ জন বা ১০০ জন। আরেকজন বলেন, এটা যদি আমরা বাসা থেকে কিংবা বাইরে থেকে করতে পারতাম তাহলে সব থেকে বেশি ভালো হতো। কিন্তু আমরা এখানে এসে হয়রানি হচ্ছি। আরেক ভুক্তভোগী বলেন, গত চার-পাঁচদিন ধরে ঘুরছি। বাইরে আবেদন করা যাচ্ছে না। আর এখানেও দেখলাম যে ওনাদের পর্যাপ্ত পরিমাণে সাপোর্ট নেই।
উত্তর সিটিতে সনদ মিললেও দক্ষিণে পুরোপুরি বন্ধ। কারণ আইনে নিবন্ধকের ক্ষমতা ও এর অর্থ আদায়ের দায়িত্ব করপোরেশনের থাকলেও সম্প্রতি নতুন পেমেন্ট গেটওয়ে করায় কোনো অর্থ এখন আসছে না সিটি কর্তৃপক্ষের কাছে। ফলে সনদ দেয়ার কার্যক্রমও বন্ধ রেখেছে করপোরেশন। এতে দিশাহীন সেবাপ্রার্থীরা।
Advertisement
একজন বলেন, সবকিছু অনলাইনে হয়েছে ভালো হয়েছে, আমরা খুব খুশি হয়েছি। কিন্তু মাঝে মধ্যে সার্ভার যেভাবে সমস্যা করছে এটা আমাদের জন্য চরম ভোগান্তি। আরেকজন বলেন, বাচ্চাদের স্কুল-কলেজে যে একটা অনলাইন সিস্টেমে যাচাই-বাচাই করার ব্যাপার আছে ওটাও করতে পারছি না। ওটার জন্য আমাদের অনেক কর্মকাণ্ড স্থগিত হয়ে রয়েছে।
দক্ষিণ সিটির ভাষ্য যেহেতু সনদ দেয়ার সব কাজ করে থাকে সিটি কর্তৃপক্ষ তাই রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয়ের এমন সিদ্ধান্ত বেআইনী। উত্তর সিটির মেয়র বলছেন, সমস্যা সমাধানে একাধিকবার তাগাদা দিয়েও কাজ হচ্ছে না।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, আমি একজন মেয়র হিসেবে রেজিস্ট্রার জেনারেলের সঙ্গে কথা বলেছি। প্রত্যেকদিন কথা বললে বলে দিব, দিব, দিব। এখন তো দেখতেছি দেখি না কি হয় ওইরকম অবস্থা হয়ে গেছে ভানুর জোকসের মতো। আমি খুবই বিব্রত।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, এই ফি টি আমাদের বরাবরে স্থানান্তর করার কথা। তথা কোডটি আমাদের ব্যবহার করতে হবে তবেই একমাত্র এটি নিরসন করা সম্ভব হবে। অন্যথায় এটিকে বিদ্যমান আইন বা বিধিমাল সংশোধন করতে হবে।
Advertisement
এবিষয়ে জানতে বুধবার (১৬ আগস্ট) রেজিস্টার জেনারেলকে ফোন দিলে তিনি সামনাসামনি বক্তব্য দেবেন বলে জানান। বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) তার কার্যালয়ে গেলে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হননি অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা।