ডাকাতির টাকায় কক্সবাজারে কিশোরীর আমোদ ভ্রমণ

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি,সোমবার, ০৭ আগস্ট ২০২৩ : ঢাকায় কিশোরীর নেতৃত্বে এক বাসায় দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ওই তরুণীসহ এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন কিশোর বা অপ্রাপ্তবয়স্করা অংশগ্রহণ করে। পরে তারা লুট করা টাকা ও অন্যান্য সামগ্রী নিজেদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা করে কক্সবাজার ভ্রমণে যায়। এ ঘটনার মাস্টারমাইন্ড ১৫ বছরের ওই কিশোরীর ডাকাতির ঘটনায় পুলিশ প্রশাসন নড়েচড়ে বসেছে।

Advertisement

রোববার (৬ আগস্ট) দুপুরে নিউ মার্কেট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শফিকুল গনী সাবু ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি)কে বলেন, আমরা এ ঘটনায় পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করেছি। আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছে। পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।

এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ঘটনার তদন্তে নেমে আমরাও চিন্তায় পড়ে যাই, যে একজন কিশোরীর পক্ষে এটা কীভাবে সম্ভব? এ ধরনের কোনও কিশোরী কিংবা কিশোর গ্রুপ আছে কিনা সে বিষয়ে পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দারাও মাঠে কাজ করছে।

মামলার তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, ১৭ জুলাই রাতে ওয়াসার সাবেক প্রকৌশলী মনিরুল হকের বাসায় ডাকাতির অভিযোগে দুই কিশোরী, দুই কিশোর ও এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়। দুই কিশোরীর মধ্যে একজন দলের নেত্রী কিংবা মাস্টারমাইন্ড। ডাকাতির সময় ৭০ বছর বয়সী প্রকৌশলী হজের জন্য সৌদি আরব ছিলেন। তখন তার বাসায় ৬৫ বছর বয়সী ফিরোজা বেগম নামের এক গৃহকর্মী ছিলেন, ছিলেন ওই প্রকৌশলীর গাড়ি চালক রিপনও। কিশোরীর নেতৃত্বে ডাকাত দল রাত ৮টার দিকে দেওয়াল টপকে সেন্ট্রাল রোডের বাসায় প্রবেশ করে। ড্রাইভার রিপনকে মেরে ফেলার হুমকিতে একটি কক্ষে আটকে রেখে জিম্মি করে ফেলে। রিপনের কাছে থাকা ১১ হাজার টাকা ও মোবাইল ছিনিয়ে নেয়। পরে রিপন সৌদিতে অবস্থানরত প্রকৌশলী মনিরুলকে বিষয়টি জানান। এ ছাড়াও, প্রকৌশলীর রেখে যাওয়া নগদ ২০ লাখ টাকা, দামি মোবাইল ও ঘড়ি ছিনিয়ে নেয় উঠতি বয়সী এসব দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় ২০ জুলাই রিপন বাদী হয়ে নিউ মার্কেট থানায় মামলা দায়ের করেন। বেরিয়ে আসে চমকে দেওয়ার মতো কিশোরীর নেতৃত্বে ডাকাতি ঘটনার।

Advertisement

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তদন্তের স্বার্থে ওই বাসার সিসি ফুটেজ সংগ্রহ করে পুলিশ। সেখানে দেখা যায়, ১৭ বছরের এক কিশোরী এবং ২৩ বছর বয়সের নাহিদুজ্জামান নাহিদকে শনাক্ত করা হয়। পরে তাদের কলাবাগান, কাঁঠালবাগান এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) আলমগীর হোসেন বলেন, আমাদের কাছে প্রথমে এ বিষয়টি রহস্যজনক মনে হলেও তদন্ত নেমে তাদের সংশ্লিষ্টতা পাই। ২৩ জুলাই ওই কিশোরীসহ আরও একজনকে কক্সবাজার থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেই বাসায় ডাকাতির মূল মাস্টারমাইন্ড। পরে তারা ডাকাতের টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগবাটোরা করে নেয়। এর মধ্যে নেতৃত্ব দেওয়া মেয়েটি পায় এক লাখ ৭৫ হাজার টাকা, লুট করা একটি ঘড়িও সে নিয়েছিল। আর কিশোর ভাগ পেয়েছিল ২ লাখ টাকা। লুট করা তিনটি মুঠোফোন সে নিয়েছিল। ওই কিশোরের কলাবাগানের বাসা থেকে ২ লাখ টাকা এবং তিনটি  মুঠোফোন জব্দ করা হয়। ডাকাতির টাকায় কক্সবাজার গিয়ে আমোদ ভ্রমণ করে। অবশ্য প্রযুক্তির সহযোগিতা নিয়ে তাদের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে গ্রেপ্তার করা হয়।

সোমবার (৭ আগস্ট) সকালে এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান হারুন অর রশিদ ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি)কে বলেন, ঘটনাটি আমরাও শুনেছি। এ ধরনের অপরাধের সঙ্গে আর কারা কারা থাকতে পারে সম্ভাব্য সে বিষয়ে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে কিশোর গ্যাংয়ের সংশ্লিষ্ট থাকতেও পারে। এ কারণে আমরা কিশোর গ্যাং নিয়েও কাজ করছি।

Advertisement