শ্রেণিকক্ষে ছাতা মাথায় ক্লাস

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি, সোমবার, ০৭ আগস্ট ২০২৩ : বরগুনার তালতলী উপজেলার তালুকদারপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বৃষ্টি হলেই টিনের চালা দিয়ে পানি পড়ে। এতে শ্রেণি কক্ষের ভেতরে ছাতা মাথায় দিয়ে বসে ক্লাস করতে হয় শিক্ষার্থীদের। টিনের চালা দিয়ে পড়া বৃষ্টির পানিতে শ্রেণি কক্ষগুলোও ভরে যায়। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ওই বিদ্যালয়ে পাঠ নিতে ৪ শতাধিক শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের।

Advertisement

জানা গেছে, ১৯৭৬ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হলেও ২০১১ সালে ৬ কক্ষবিশিষ্ট একটি সেমিপাকা টিনশেড ভবন নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে প্রায় ৫ শতাধিক শিক্ষার্থী অধ্যায়ন করছে। ওই ভবনের একটি কক্ষ শিক্ষকদের অফিস কাম লাইব্রেরি হিসেবে ব্যবহার করা হলেও বাকি ৫টি কক্ষে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠদানে ব্যবহৃত হয়। বর্তমানে জরাজীর্ণ পুরাতন ওই সেমিপাকা টিনশেড ভবনের ৬টি রুমই ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। অন্য কোনো শ্রেণিকক্ষ না থাকায় বাধ্য হয়েই ওই জরাজীর্ণ ভবনের কক্ষে ক্লাস নিচ্ছেন বলে শিক্ষকরা জানান।
গতকাল দুপুরে সরজমিন বিদ্যালয়টিতে গিয়ে দেখা গেছে, বাহিরে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। এরমধ্যে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠদান দিচ্ছেন। এ সময় ওই পুরাতন আধাপাকা জরাজীর্ণ টিনশেড ভবনের ষষ্ঠ শ্রেণির কক্ষে ঢুকে দেখা যায়, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা মাথায় ছাতা দিয়ে বসে ক্লাস করছেন।

Advertisement

পুরাতন টিনের চালা দিয়ে অনবরত বৃষ্টির পানি শ্রেণিকক্ষে পড়ছে। অল্প সময়ের মধ্যেই শ্রেণি কক্ষগুলো বৃষ্টির পানিতে ভরে যায়। একই অবস্থা অন্যান্য শ্রেণী কক্ষগুলোতেও। ষষ্ঠ শ্রেণির নাঈম, রোমান, আরাফাত ও সোহাগীসহ অনেক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের টিনের চাল ফুটো থাকার কারণে শ্রেণিকক্ষে বৃষ্টির পানি পড়ায় আমাদের ছাতা মাথায় দিয়ে ক্লাস করতে হয়। ছাতা মাথায় দেয়ার পড়েও পানি পড়ে আমাদের বই খাতা ও পোশাক ভিজে যায়। এরপরেও আমরা বৃষ্টিতে ভিজে ক্লাস করছি। সপ্তম থেকে দশম শ্রেণির একাধিক শিক্ষার্থীরা জানায়, বিদ্যালয়টিতে ঝড় বৃষ্টির ও জরাজীর্ণ ওই পুরাতন শ্রেণি কক্ষের মধ্যে আমাদের পাঠদান নিতে হচ্ছে। বৃষ্টির মধ্যে অনেকটা বাধ্য হয়েই আমাদের ছাতা মাথায় দিয়ে ক্লাস করতে হচ্ছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবু তাহের বলেন, বর্তমানে বিদ্যালয়ের পুরাতন আধাপাকা টিনশেড ভবনটি খুবই জরাজীর্ণ। গত তিন চার বছর থেকেই ভবনটি বেহাল অবস্থায় পরিণত হয়েছে। একটু বৃষ্টি হলেই চাল থেকে পানি পড়ে ক্লাসের ভিতর জমা হয়ে যায়। তখন শিক্ষক ও  শিক্ষার্থীদের ছাতা মাথায় দিয়ে বসে ক্লাস করতে হয়। বই খাতাসহ নিজেরা যেন ভিজে না যায় সেজন্য অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীদের বাড়ি থেকে ছাতা নিয়ে আসতে বলা হয়। তিনি আরও বলেন, পুরাতন সেমিপাকা টিনশেড ভবনটির সংস্কারের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেও এখনো কোনো সুফল পাইনি। তাই অনেকটা বাধ্য হয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির মধ্যে ভিজে ক্লাস করছেন।

উপজেলা শিক্ষা অফিসার লুৎফুল কবির মো. কামরুল হাসান বলেন, ওই বিদ্যালয়ে একটি নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ চলমান আছে। যতদ্রুত সম্ভব নির্মাণ কাজ শেষ করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে। আর জরাজীর্ণ ও আধা সেমিপাকা টিনশেড ভবনের কক্ষগুলো দ্রুত মেরামত করার ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Advertisement