ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),শেরপুর প্রতিনিধি, শনিবার, ২২ জুলাই ২০২৩ : লাশ দাফনের জন্য কবরস্থান পেয়েছেন শেরপুরের তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠী বা হিজড়ারা। শুক্রবার (২১ জুলাই) বিকেলে কবরস্থানটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন জেলার সদ্য বিদায়ী পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান।
Advertisement
এ সময় তার স্ত্রী পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি-পুনাকের সভাপতি সানজিদা হক মৌ সেখানে তিনটি গাছ লাগান।
জানা গেছে, পুলিশ সুপার কামরুজ্জামান ও তার স্ত্রী নিজস্ব অর্থায়নে শেরপুর সদর উপজেলার কামারিয়া ইউনিয়নের আন্ধারিয়া-সুতিরপাড় এলাকায় ১১ শতক জমি কিনে কবরস্থানটি নির্মাণ করেন। এতে ব্যয় হয়েছে প্রায় ১০ লাখ টাকা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সদর উপজেলার চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সোহেল মাহমুদ, সদর থানার ওসি বছির আহমেদ বাদলসহ হিজড়া জনগোষ্ঠীর সদস্য ও স্থানীয় সুধীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
Advertisement
পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘কবরস্থান নির্মাণের মাধ্যমে আমি কেবল একটি মানবিক কাজে সামিল হতে পেরেছি। আমি বিশ্বাস করি সবার ভালোবাসায় একদিন হিজড়ারা মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে, সমাজের অন্যান্য মানুষের সঙ্গে একই মর্যাদায় বাঁচতে পারবে।’
তিনি আরও বলেন, যেখানেই থাকি না কেন, শেরপুরের হিজড়াদের প্রতি আমাদের সহমর্মিতা অব্যাহত থাকবে। এ সময় তিনি এখানকার হিজড়াদের কারও মৃত্যু হলে তাকে জানানো এবং লাশ দাফনের সব ব্যয় বহন করারও ঘোষণা দেন।
শেরপুর জেলা হিজড়া কল্যাণ সমিতির সভাপতি নিশি সরকার বলেন, ‘আমরা পুলিশ সুপার এবং তার সহধর্মিণীর প্রতি কৃতজ্ঞ। মৃত্যুর পর আমাদের মরদেহ দাফনের জন্য কবরস্থান নির্মাণ এবং লাশ দাফনের দায়িত্ব নেওয়ায় তাদের কাছে চির ঋণী হয়ে গেলাম।’
Advertisement
উল্লেখ, নাগরিক প্লাটফর্ম জনউদ্যোগের অনুপ্রেরণায় ২০১৮ সালে গঠন করা হয় শেরপুর জেলা হিজড়া কল্যাণ সংস্থা। তৎকালীন জেলা প্রশাসক আনারকলি মাহবুবের প্রচেষ্টায় জেলা সমাজসেবা বিভাগ জেলার ৫২ জন হিজড়াকে তালিকাভুক্ত করে এবং আত্মকর্মসংস্থানমূলক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন। তৎকালীন পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে তালিকাভুক্ত সকল হিজড়াদের তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে জাতীয় পরিচয়পত্র ও ভোটার তালিকাভুক্ত করা হয়।