সৌর বিদ্যুতে চাহিদা মেটাতে চায় দেশ, ভবন মালিকদের অনাগ্রহ (ভিডিও)

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি , শুক্রবার, ০৭ জুলাই ২০২৩ : ২০৪১ সালের মধ্যে জ্বালানি চাহিদার ৪০ শতাংশ সৌর বিদ্যুৎ থেকে মেটাতে চায় বাংলাদেশ। কিন্তু বেশিরভাগ ভবন মালিকের অনাগ্রহের কারণে এর বাস্তবায়ন নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

Advertisement

সরকারি প্রতিষ্ঠানে সৌর প্যানেলের খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, তারাও এই প্যানেল বসাচ্ছে শো-পিসের মতো। যা বসানোর কিছু দিনের মধ্যে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

ঢাকার প্রতিটি বাড়ির ছাদেই সৌর প্যানেল স্থাপনের যে পরিকল্পনা জ্বালানি মন্ত্রণালয় করেছিল, রাজধানীর নিকুঞ্জ আবাসিক এলাকার ছাদগুলো দেখলেই এর বাস্তবতা বোঝা যায়।

নিকুঞ্জের যখন এমন অবস্থা তখন উত্তরার ছবিটা একটু ভিন্ন। কারণ এখানে নতুন দালান করলে বাধ্যতামূলকভাবে সৌর প্যানেল রাখতে হয়। বাড়ির মালিকরা নির্মাণের সময়ে সেটি করলেও পরে আর তা রক্ষণাবেক্ষণ করছেন না। তাই বেশিরভাগ বাড়িতেই সৌর প্যানেল আছে নামমাত্র।

সরেজমিন রাজধানীর বিটিএমসি ভবনে গিয়ে দেখা যায়, সরকারি সিদ্ধান্তে এক সময় সৌর প্যানেল বসানো হলেও এখন তা আবর্জনার স্তূপের মতো পড়ে আছে।

রাজউকের উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ শাখার সদস্য তন্ময় দাস বলেন, শুধু নীতিমালা নয়, তারা এখন বিল্ডিং কোডের ভেতরে সৌর প্যানেল বসানোর উদ্যোগ নিয়েছেন। তবে এটি সবাই মেনে চলছে কিনা তা নজরদারী করা দূরহ বলে মনে করছে রাজউক।

Advertisement

সম্প্রতি বিদ্যুতের লোডশেডিং কিছুটা বাড়ার পর সৌর প্যানেলের দামও বেড়ে গেছে। তবে বিক্রিও বেড়েছে। অভিযোগ আছে, নবাবপুরের ব্যবসায়ীরা নিম্নমানের ব্যাটারি ও সৌর প্যানেল বিক্রি করেন। তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ব্যবসায়ীরা।

সৌর বিদ্যুতের অভিভাবক প্রতিষ্ঠান স্রেডার তথ্য মতে, ঢাকায় ২০২০ সালে সৌর বিদ্যুৎ থেকে উৎপাদন হয়েছে ৫৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। গেলো তিন বছরে উৎপাদন বেড়েছে মাত্র ২৮ মেগাওয়াট। যা লক্ষ্যমাত্রা চেয়ে অনেক কম।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ম. তামিম বলেন, বাড়ির ছাদের সৌর বিদ্যুৎ থেকে খুব বেশি আশা না থাকলেও এই খাতে আরেকটু নজর দেওয়া গেলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করাটা অসম্ভব নয়।

স্রেডার তথ্য মতে, বাংলাদেশে শুধু বাড়ির ছাদে সৌর প্যানেল থেকে গড়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে ৮৬ মেগাওয়াট। এর মধ্যে ঢাকায় ৬৪.০৩৬ মেগাওয়াট।

Advertisement

২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বে কার্বন নির্গমন অর্ধেক করে ২০৫০ সালের মধ্যে শূন্যে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা আছে। সেটি বাস্তবায়ন চ্যালেঞ্জিং হলেও জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০৪১ সালের আগে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনের মোট জ্বালানির ৪০ শতাংশ বিকল্প জ্বালানির যে লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে তা অর্জন করা কঠিন হলেও অসম্ভব নয়। তাই বাড়ির ছাদে সৌর বিদ্যুতের যে পরিকল্পনা রয়েছে তা বাস্তবায়নও সেই চ্যালেঞ্জে উত্তীর্ণ হতে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। এর জন্য এখন থেকেই সরকারের এই খাতে আরও বেশি নজর দেয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞদের।