ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),আইন আদালত প্রতিনিধি,বুধবার, ০৫ জুলাই ২০২৩ : নরসিংদী যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক শামীমা নূর পাপিয়াকে গতকাল সোমবার গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে কুমিল্লা কারাগারে আনা হয়েছে। কাশিমপুর কারাগারে তিনি ‘রাইটারের’ পদ থাকলেও কুমিল্লা কারাগারে পাপিয়াকে ‘নকশিকাঁথা সেলাই ও ঝাড়ুদার’ হিসেবে কাজ করতে হবে।
Advertisement
মঙ্গলবার (৪ জুলাই) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লা কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন।
কারাগারের সূত্র জানা যায়, গাজীপুর থেকে গতকাল রাতে কুমিল্লা কারাগারে আনার পরই পাপিয়াকে নারী ওয়ার্ডে রাখা হয়। ঝাড়ু দেওয়া এবং নকশিকাঁথা সেলাই করার কাজ নির্ধারিত রয়েছে তার জন্য। আর জেলকোড অনুযায়ী সাজাপ্রাপ্ত বন্দিদের জন্য কাজ করা বাধ্যতামূলক। নকশিকাঁথা সেলাই কিছুটা কঠিন হওয়ায় শুরুতেই বন্দিদের ঝাড়ুদারের কাজ দেওয়া হয়। এ কারণেই পাপিয়া এই কাজ পেয়েছেন।
কুমিল্লা কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ‘জেলবিধি অনুযায়ী তাকে (পাপিয়া) দায়িত্ব দেওয়া হবে। সোমবার তিনি আমাদের এখানে এসেছেন। তার প্রতি বিশেষ নজরে রাখা হবে।’
কারা কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারে ৪০ মাস ধরে বন্দী আছেন পাপিয়া। ২৭ বছরের সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি হিসেবে জেলবিধি অনুযায়ী পাপিয়াকে ‘রাইটার’ হিসেবে নিযুক্ত করা হয়।
Advertisement
সম্প্রতি তিনি রুনা লায়লা নামের এক হাজতিকে নির্যাতন করেন, তার কাছ থেকে টাকাপয়সা লুট করে নেন—এমন অভিযোগে রুনার ছোট ভাই জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগও করেন। পরে গঠন করা হয় দুটি তদন্ত কমিটি। এর মধ্যে, সোমবার বিকেলে পাপিয়াকে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের (ভারপ্রাপ্ত) জেল সুপার মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তাকে স্থানান্তর করা হয়েছে।’
উল্লেখ্য, নথি চুরির একটি মামলায় শিক্ষানবিশ আইনজীবী রুনা লায়লাকে গত ১৬ জুন কাশিমপুর মহিলা কারাগারে আনা হয়। কারাগারের সাধারণ ওয়ার্ডে নেওয়ার পর রুনার দেহ তল্লাশি করে কর্তব্যরত মেট্রন তার কাছে ৭ হাজার ৪০০ টাকা পান। ওই টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য পাপিয়া ও তার সহযোগী কয়েদিরা গত ১৯ জুন রুনার ওপর অমানবিক নির্যাতন করেন বলে অভিযোগ তার পরিবারের। একপর্যায়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় রুনাকে মেঝেতে ফেলে রাখা হয়। এ নিয়ে কারাগারের ভেতরে কেস টেবিল বা সালিস বসে। সেখানে ত্রিমুখী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন বন্দী, দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। তবে পাপিয়ার ভয়ে সাধারণ কয়েদিরা রুনা লায়লার ওপর অমানুষিক নির্যাতনের প্রতিবাদও করতে পারেননি।
Advertisement
হাসপাতালে ভর্তি নির্যাতিত রুনা লায়লা বলেন, ‘কারাগারের ভেতরে রাতে তারা লাঠি ও কম্বল চাপা দিয়ে আমাকে মারতে চেয়েছিল। পরে তারা জেলহাজতের আসামিদের দিয়ে গণপিটুনি দেয়। একপর্যায়ে পানি খেতে চাইলে আমাকে নর্দমার পানি খেতে দেয়। আমাকে মহিলা পুলিশও মারধর করে। মহিলা পুলিশের মুখে মুখোশ ছিল।’