ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),বগুড়া প্রতিনিধি, শনিবার, ০১ জুলাই ২০২৩ : মরিচ উৎপাদনকারী জেলা হিসেবে পরিচিত বগুড়ায়ও কাঁচা মরিচের দাম আকাশছোঁয়া। শনিবার (১ জুলাই) বগুড়ার পাইকারি বাজারে কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৪৫০ টাকায় এবং খুচরা ৫৮০ টাকায়।
Advertisement
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঈদের আগে থেকেই বাড়তে শুরু করা কাঁচা মরিচের দাম অতীতের সব রেকর্ড ভেঙ্গেছে। কাঁচা মরিচের এমন মূল্য বৃদ্ধিতে ক্রেতারা হতাশ হয়ে পড়েছেন।
ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, দেশে উৎপাদিত কাঁচা মরিচের সংকট দেখা দেয়ায় এবং ঈদের কারণে ভারত থেকে আমদানি বন্ধ থাকায় দাম অস্বাভাবিক বেড়েছে। তবে, আগামী দু-একদিন পর দাম কিছুটা কমে আসবে। পুরোপুরি কমবে আরও ১০-১২ দিন পর।
বগুড়ার রাজাবাজারে মরিচ কিনতে আসা আলতাফ জানান, তিনি ঈদের ১০ দিন আগে আধা কেজি কাঁচা মরিচ ৬০ টাকা দিয়ে কিনেছিলেন। আজ ২৫০ গ্রাম কিনেছেন ১২৫ টাকায়। দাম কিছুটা কম রাখতে বললেও দোকানদার রাখেননি। কিনতেই হবে তাই বেশি দামেই কিনেছেন।
কামাল হোসেন নামের একজন জানান, কাঁচা মরিচ ৬০০ টাকা কেজি চাওয়া হচ্ছে। তবে, দামাদমি করলে ৫৮০ টাকায় পাওয়া যায়। আধা কেজি কাঁচা মরিচ কিনলেই বাজারের সব টাকা শেষ হয়ে যায়।
শফিকুল ইসলাম নামের এক বিক্রেতা বলেন, ‘আমাদের কিনতে হচ্ছে বেশি দামে, তাই বিক্রিও করতে হচ্ছে বাড়তি দামে। লোকসান দিয়ে তো আর বিক্রি করা যায় না।’
Advertisement
বগুড়া রাজাবাজার ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক পরিমল প্রসাদ রাজ বলেন, ‘দেশে উৎপাদিত মরিচ সংকটের কারণে দাম এতটা বেড়েছে। ভারত থেকে আমদানি বন্ধ না থাকলে দাম এতটা বাড়ত না। সোমবার থেকে আমদানি শুরু হলে দাম কিছুটা কমবে। এছাড়া, বগুড়ার নন্দীগ্রাম এবং সাপাহারের মরিচ আগামী ১০-১২ দিনের মধ্যে জমি থেকে উঠানো হবে। তখন দাম নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আসবে।’
বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য) এনামুল হক বলেন, ‘বগুড়ায় দুই সময়ে (রবি মৌসুম এবং খরিদ মৌসুম) মরিচ চাষাবাদ হয়। রবি মৌসুমে মরিচ চাষ হয় ৭ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে। আর খরিদ মৌসুমে ৬৭৫ হেক্টর জমিতে। বগুড়ায় সবচেয়ে বেশি মরিচ উৎপাদন হয় সারিয়াকান্দি, সোনাতলা, গাবতলী, ধুনট এবং নন্দীগ্রামে। এছাড়া, সদর, শিবগঞ্জ এবং শাজাহানপুররেও কিছু পরিমাণে মরিচ উৎপাদিত হয়।’
খরিদ মৌসুমে চাষ কম হওয়ার কারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সারিয়াকান্দি, সোনাতলা এবং গাবতলী বন্যাপ্রবণ এলাকা। এখন তো অধিকাংশ জমি পানির নিচে। যে কারণে এই সময় মরিচ উৎপাদন হয় না।’
Advertisement
মরিচের সংকট সস্পর্কে এনামুল হক বলেন, ‘এখন বর্ষাকাল। এই সময়ে সারিয়াকান্দি, সোনাতলার সব মরিচের জমি পানির নিচে। যে কারণে উৎপাদন হচ্ছে না। আবার কিছু দিন আগে অতিরিক্ত তাপপ্রবাহের কারণে মরিচ গাছ নষ্ট হয়ে গেছে। যে কারণে উৎপাদন ব্যহত হয়েছে। বাজারে কাঁচা মরিচ কম পাওয়ার এটাও অন্যতম একটি কারণ।’