ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),বরগুনার বেতাগী প্রতিনিধি, শনিবার, ০১ জুলাই ২০২৩ : বরগুনার বেতাগীতে বাড়িওয়ালি বিধবা নারীকে হত্যার চাঞ্চল্যকর রহস্য উদঘাটন করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ ঘটনায় প্রধান অভিযুক্তসহ তিনজনকে গ্রেপ্তারের পর তাদের নৃশংসতায় রীতিমতো চমকে উঠেছেন ডিটেকটিভ ব্রাঞ্চের সদস্যরা।
Advertisement
শুক্রবার (২৩ জুন) বেতাগী উপজেলার মোকামিয়া ইউনিয়নের মাছুয়াখালী গ্রামে চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার প্রধান আসামি মাওলানা আবদুর রহমান জুয়েল এবং আরো দুই সহযোগী হিরু মিয়া ও মাসুদ আলম একই এলাকার বাসিন্দা।
গ্রেপ্তারকৃতরা হত্যা ও ধর্ষণের দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন।
বরগুনা জেলা গোয়েন্দা শাখার ইনচার্জ মো. শহিদুল ইসলাম মিলন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি)কে বলেন, ২৩ জুন নৃশংসতার শিকার ওই নারীর বাড়িতে ডাকাতির পর তাকে হত্যা করা হয় জানিয়ে বেতাগী থানায় তথ্য দেন মাদ্রাসা শিক্ষক মাওলানা আবদুর রহমান জুয়েল। পুলিশের সন্দেহ হলে জেলা পুলিশ সুপার আব্দুস ছালাম জেলা গোয়েন্দা শাখার সদস্যদের ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দেন।
তদন্তের এক পর্যায়ে জুয়েলকে নজরবন্দি করেন তারা। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এ সময় ভিন্ন ভিন্ন তথ্য দেন তিনি। সন্দেহ ঘনীভূত হলে জুয়েলকে আটক করলে তিনি হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেন। এ সময় তিনি দুজন সহযোগীরও নাম বলেন।
Advertisement
ডিবির এই কর্মকর্তা আরও বলেন, নিহত ওই নারী ঈদ উদযাপন করার জন্য ঘটনার দুই দিন আগে ঢাকা থেকে নিজ গ্রামে আসেন। তার স্বামী মান্নান ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে চাকরিরত অবস্থায় ২০২০ সালে করোনায় আক্রন্ত হয়ে মারা যান। তার দুই ছেলে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনে চাকরি করেন।
বাড়িতে আসার পর বাড়ি-ঘর নোংরা করে রাখায় ভাড়াটিয়া ও বাড়ি দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা মোকামিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক আব্দুর রহমান জুয়েলের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি ও ঝগড়া হয়। জুয়েল বিষয়টি প্রতিবেশী নির্মাণ শ্রমিক হিরুকে (৩৮) জানালে তারা ওই নারীকে হত্যার পরিকল্পনা করে। হত্যা শেষে বাড়িতে ডাকাতি হয়েছে বলে প্রচার করবে বলেও তারা সিদ্ধান্ত নেয়।
কিলিং মিশন সফল করতে উল্লিখিত দুজন স্থানীয় মুদি দোকানদার মাসুদকে সঙ্গে নেয়। এরপর ঘটনার দিন রাতে জুয়েল তার অসুস্থ স্ত্রীকে জরের ওষুধের পাশাপাশি ঘুমের ওষুধ খাইয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে হিরুকে নিয়ে ওই নারীর ঘরে প্রবেশ করে। এ সময় মাসুদ বাইরে দাঁড়িয়ে পাহাড়া দেয়।
ঘরে ঢুকে জুয়েল ভুক্তভোগীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এবং ঘরের সব মালামাল ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখে। এ সময় তারা ডাকাতির নাটক সাজানোর জন্য জানালার গ্রীল কেটে রাখে। তারপর জুয়েল ওই নারীর স্বর্ণালঙ্কার দিয়ে হিরু ও মাসুদকে পাঠিয়ে দেয়।
Advertisement