ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি,মঙ্গলবার, ২৭ জুন ২০২৩ : পুলিশ স্টেশন এবং অস্ত্রাগার থেকে লুট হওয়া মারণাস্ত্র ও গোলাবারুদের সঠিক সংখ্যা এখনও জানাতে পারেনি ভারতের মণিপুর রাজ্য কর্তৃপক্ষ। কারণ হিসেবে তারা জানিয়েছে যে নথিপত্রে অস্ত্রের রেকর্ড রাখা হয়েছিল ভয়াবহ সহিংসতার সময় সেগুলো হয়তো লুট, ধ্বংস বা কেড়ে নেয়া হয়েছে। সংবাদমাধ্যম ইকোনমিক টাইমসের বরাতে এ খবর জানিয়েছে দ্য ওয়ার।
Advertisement
মণিপুর রাজ্যে মেইতেই এবং কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে সহিংসতা শুরু হওয়ার পর থেকে কমপক্ষে চার হাজার প্রাণঘাতী অস্ত্র চুরি ও লুট হয়েছে যার মধ্যে রয়েছে ইনসাস এবং একে-৪৭ এর মতো অ্যাসল্ট রাইফেল ও স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র৷ এর মধ্যে অর্ধেকেরও কম মাত্র এক হাজার ৮০০টি এখন পর্যন্ত উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, তামেংলং, ইম্ফল ইস্ট, বিষ্ণুপুর, কাংপোকপি, চুরাচাঁদপুর এবং কাকচিং জেলায় নিরাপত্তা বাহিনীর পরিচালিত অনুসন্ধান অভিযান চালায় ২৪ জুন। এ সময় সাহুমফল গ্রামের একটি ধানক্ষেতে তিনটি ৫১ মিমি এবং তিনটি ৮৪ মিমি মর্টার শেল পাওয়া গেছে এবং একটি আইইডি পাওয়া গেছে। কাংভাই এবং এস কোটলিয়ান গ্রামের মধ্যে ধানক্ষেত থেকে এসব মরাণাস্ত্র উদ্ধার শেষে বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল মর্টার শেল এবং আইইডি নিষ্ক্রিয় করেছে।
মণিপুরে জাতিগত সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর প্রায় দুই মাস কেটে গেছে, কিন্তু সহিংসতা কমার কোনো লক্ষণ নেই। রাজ্যে শত শত মানুষ নিহত এবং হাজার হাজার বাস্তুচ্যুত হয়েছে, যাতে রাজ্যটিতে গৃহযুদ্ধের মতো পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে।
Advertisement
গত ৩ মে মণিপুরের জনজাতি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)–এর কর্মসূচি ঘিরে হিংসা ছড়িয়েছিল মণিপুরে। আদি বাসিন্দা মেইতেই জনগোষ্ঠীর সঙ্গে কুকি, জো–সহ কয়েকটি জনজাতি সম্প্রদায়ের সংঘর্ষের জেরে মনিপুরে অন্তত ২০ হাজারের বেশি ঘর বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ভাংচুর করা হয়। গৃহহীন হতে হয় প্রায় ৫০ হাজারের বেশি মানুষকে।
সরকারিভাবে সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে রাজ্যজুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ১২১ টি খ্রিস্টান চার্চ, সরকারিভাবে মৃতের সংখ্যা ৭৪। বেসরকারিভাবে অবশ্য ধ্বংসপ্রাপ্ত চার্চের সংখ্যাটা প্রায় আড়াইশো। মৃতের সংখ্যাও একশোর বেশি।
Advertisement
বলা হচ্ছে, মনিপুর যে ধরনের আর্থিক ক্ষতির সমর্থন হয়েছে সেই পরিস্থিতি থেকে স্বাভাবিক হতে কম করে কুড়ি বছর লাগবে মনিপুরের। মণিপুর হাইকোর্ট মেইতেইদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দেওয়ার পরেই জনজাতি সংগঠনগুলো বিরোধিতা করতে শুরু করে। আর তা থেকেই শুরু হয় এমন ধ্বংসাত্মক হিংসার সূত্রপাত।