জামালপুরের পুলিশ সুপার নাছির উদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, সন্ত্রাসী হামলায় নিহত সাংবাদিক নাদিম হত্যার মূলহোতা বকশীগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু। তাকে ধরতে পুলিশ, র্যাব, পিবিআই ও সিআইডি পুলিশেরদল কাজ করছে।
Advertisement
শুক্রবার তিনি একাত্তর টেলিভিশনকে এ তথ্য জানিয়ে বলেন, হত্যার ভিডিও ফুটেজ দেখে জড়িত আরও চার জনকে আটক করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম এখন জানানো যাচ্ছে না। এ নিয়ে নাদিম হত্যায় এখন পর্যন্ত ১০ জনকে আটক করা হলো। তবে সাংবাদিক হত্যায় এখনও থানায় মামলা হয়নি।
এর আগে, বুধবার রাতে বাড়ি ফেরার পথে একাত্তর টিভির উপজেলা সংবাদ সংগ্রাহক গোলাম রাব্বানী নাদিমের ওপর হামলা চালায় একদল সন্ত্রাসী। পরদিন দুপুরে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যায়, ১৪জুন রাতে বাড়ি ফেরারপথে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে নাদিমকে ধাক্কাদিয়ে ফেলে দেয় একদলসন্ত্রাসী। এরপর সবাই মিলে তাকে মারধর করেন।
সিসিটিভির ছবিতে হামলায় সরাসরি অংশ নেয়া সাধুরপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহামুদুল আলম বাবুর বোনের ছেলে রেজাউল ও বকশীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক রাকিবুল্লাহ রাকিবকে চিহ্নিত করা হয়। এছাড়াও চেনা যায় মনির, রিফাতও সাইদকে। তারা সবাই চেয়ারম্যান বাবুর অনুসারী বলে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলার সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন চেয়ারম্যান বাবু ও তার ছেলে ফয়সাল।
তারা জানান, ১০ বছরে বিপুল সম্পদের মালিক হন এই ইউপি চেয়ারম্যান, যার পেছনে ছিলো কথিত এক বড় ভাইয়ের হাত। সেই পুলিশ কর্মকর্তা বড় ভাইয়ের জোরে নিরীহ মানুষকে মামলার ভয় দেখিয়েই বাবু রাতারাতি হয়ে যান কোটিপতি।
২০১০সালে চেয়ারম্যান নির্বাচন করলেও হেরে যান বাবু। পরে ২০১৬ সালের নির্বাচনে জয় পেয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন তিনি।
Advertisement
স্থানীয়দের অভিযোগ, দ্বিতীয় মেয়াদে জয় পাবার পর মানুষের ওপর বেড়ে যায় তার নির্যাতনের মাত্রা। কেউ ত্রাণ বাকোনো সাহায্য চাইতে গেলেও চলতো নির্যাতন। নির্যাতন থেকে রেহাই পাননি তার দ্বিতীয় স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনও। সন্তান নিয়ে এখন ঘরছাড়া তিনি।
সাবিনার ওপর হওয়া অন্যায় ও চেয়ারম্যানের এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের খবর প্রচার করেছিলেন সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম।
ধারণা করা হচ্ছে, এ কারণেই ১৪জুন রাতে নিজে উপস্থিতথেকে সন্ত্রাসী হামলা চালান বাবু চেয়ারম্যান। ইট দিয়ে থেঁতলে দেয়া হয় নাদিমের মাথা।
Advertisement
এদিকে, সাংবাদিক হত্যার ঘটনায় উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সারাদেশের সাংবাদিকরা। নিন্দা জানানোর পাশাপাশি অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তি দাবি করে দেশের বিভিন্ন স্থানে নানা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে জাতীয় ও স্থানীয় সাংবাদিক সংগঠনগুলো।