নিহত নূর নাহার ও মেয়ে প্রিয়ন্তী (বামে) ও অভিযুক্ত আলতাফ হোসেন (ডানে)। ছবি: সংগৃহীত
ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),নোয়াখালীর মাইজদী প্রতিনিধি, শুক্রবার, ১৬ জুন ২০২৩ :নোয়াখালীর মাইজদীতে বাসায় ঢুকে মা-মেয়েকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন গ্রেফতার আলতাফ হোসেন। বুধবার (১৪ জুন) রাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মো.শহীদুল ইসলাম।
Advertisement
বেলা সাড়ে ১০টার দিকে নোয়াখালী পৌরসভার ৫নম্বর ওয়ার্ডের গুপ্তাংকের বার্লিংটন মোড় সংলগ্ন কচি মিয়ার বাসার দ্বিতীয় তলায় ঢুকে ফজলে আজিম কচি মিয়ার স্ত্রী নূর নাহার বেগম (৩৫) ও তার মেয়ে ফাতেমা আজিম প্রিয়ন্তীকে (১৬) কুপিয়ে হত্যা করেন ওমান প্রবাসী আলতাফ হোসেন। এরপর তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মূলত মায়ের পরকীয়ার বলি হয়েছেন মেয়ে।
আলতাফ হোসেন (২৮) লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি উপজেলার চরবাদাম ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের মৃত. আবুল কালামের ছেলে।
Advertisement
দোষ স্বীকার করে আলতাফ হোসেন আদালতে জানান, নূর নাহার বেগমের সঙ্গে তার ওমান থাকা অবস্থায় মোবাইল ফোনে রং নম্বরে পরিচয় হয় এবং তাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়। একপর্যায়ে নুর নাহার বেগম তাকে ভিসা বাতিল করে বাংলাদেশে এসে হোটেল ব্যবসা করার জন্য বলে। তার কথায় আলতাফ গত ৮ জুন বাংলাদেশে এসে দত্তের হাট এলাকায় একটি মেসে ওঠেন। এরপর ১০ জুন সাড়ে ১০টার দিকে নূর নাহারের বাসায় গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করেন। পরদিন ১১ জুন পুনরায় নূর নাহার বেগমের বাসায় গিয়ে তার কাছে প্রতিশ্রুতি দেয়া ৩ লাখ টাকা দাবি করেন। তখন নুর নাহার ২/১ দিনের মধ্যে টাকা দিবেন বলে জানায় তাকে। পরদিন আবার নুর নাহারের বাসায় গেলে বাসা তালাবন্ধ পান তিনি।
বুধবার (১৪ জুন) বেলা সাড়ে ১০টার দিকে আসামি নূর নাহারের বাসায় গিয়ে আবারও ৩ লাখ টাকা দাবি করেন। ওই সময় নূর নাহার বেগম টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে আলতাফের সঙ্গে তার বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে আলতাফকে ধাক্কা দিয়ে ঘর থেকে বের করে দেয়ার চেষ্টা করেন নূর নাহার। এরপর পুলিশ দিয়ে গ্রেফতার করানোর ভয় দেখালে তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়।
ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে আলতাফ তার পকেটে থাকা ছুরি দিয়ে নূর নাহারের গলায় আঘাত করেন। এ সময় নূর নাহার চিৎকার করে তার মেয়ে প্রিয়ন্তীর রুমে চলে যান। আলতাফ ওই রুমে গিয়ে নুর নাহারের গলায় এবং ঘাড়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকেন। ওই সময় মেয়ে প্রিয়ন্তী ঘুম থেকে উঠে মাকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন। মায়ের পিঠের ওপর হয়ে পড়লে তাকেও একাধিক ছুরিকাঘাত করেন তিনি।
নুর নাহার বেগম প্রতারণা করায় তাকে হত্যা করেছে, তবে তার মেয়ে ফাতিহা আজিম প্রিয়ন্তীকে হত্যা করার ইচ্ছা আসামির ছিল না বলে জবানবন্দিতে জানিয়েছেন আলতাফ হোসেন।