ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),মনোহরদী প্রতিনিধি,রোববার, ১১ জুন ২০২৩ : মরদেহ আবারও জীবিত হবে এই আশায় চার দিন খাটের নিচে লাশ রেখে বসবাস করে আসছিল নরসিংদীর একটি পরিবার। ওই মরদেহ পচে দুর্গন্ধ ছাড়ালে এলাকাবাসী পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার এবং ওই পরিবারের অন্য সদস্যদের হাসপাতালে ভর্তি করে।
Advertisement
শনিবার রাতে জেলার মনোহরদী উপজেলার পৌর এলাকায় পরিবারটির বাড়ির খাটের নিচ থেকে অর্ধগলিত অবস্থায় এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
ওই নারীর নাম শামীমা সুলতানা নাজমা (৫৫)। তিনি ওই এলাকার প্রাথমিকের অবসর নেওয়া শিক্ষক মোক্তার উদ্দীন তালুকদারের স্ত্রী।
স্থানীয়রা জানায়, মনোহরদী পৌরসভার বাজারের পাশেই নিজেদের বাড়িতে মোক্তার উদ্দীন তালুকদার পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন। তারা সবাই আটরশি পীরের ভক্ত ছিলেন। তারা কেউই বাসা থেকে বের হতেন না। এসব নিয়ে জিজ্ঞেস করলেও তারা কোনো সুদত্তর দিতেন না। তারা প্রতিদিন রাত তিনটা থেকে ভোর পর্যন্ত জিকির করতেন।
প্রতিবেশীদের ভাষ্য, নাজমা তার পরিবারের সদ্যদের বলে গেছেন- তিনি মারা গেলে লাশ রেখে যেন অপেক্ষা করা হয়। তিনি তিন থেকে চার দিন পর আবারও জীবিত হবেন।
গত সোমবার নাজমা মারা গেলে পরিবার বিষয়টি কাউকে জানায়নি। তারা সবাই নাজমার জীবিত হওয়ার আশায় লাশ খাটের তলে রেখে অপেক্ষা করতে থাকেন।
Advertisement
এদিকে প্রতিবেশীরা পচা গন্ধ পেতে থাকলেও ধীরে ধীরে গন্ধ তীব্র হওয়ায় পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ এসে তাদের ডাকাডাকি করলেও কোনো সাড়া দেয়নি। পরে ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে গেলে দেখা যায় তারা সবাই ঘরেই অবস্থান করছে। এসময় খাটের নিচ থেকে নাজমার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আর পরিবারের সদস্যদের থানায় নিয়ে আসা হয়। পরে সেখান থেকে তাদের মনোহরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
মনোহরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক খন্দকার আনিসুর রহমান বলেন, থানা থেকে তাদের রাতে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। আমরা প্রেশার বেশি থাকায় তাদের চিকিৎসা দিয়েছি। তাদের শারীরিকভাবে অন্য কোনো সমস্যা পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে মনোহরদী থানার অফিসার ইনচার্জ ফরিদ উদ্দীন বলেন, পরিবারটি এক পীরের মুরীদ ছিলেন। তারা জানিয়েছেন, জিকিররত অবস্থায় নাজমার মৃত্যু হয়েছে। আবারও জীবিত হবে এই ধারণায় তারা লাশ খাটের নিচে রেখে দিয়েছিলেন। আমরা নিহতের স্বামী, চার মেয়ে, দুই নাতী ও এক নাতনীকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছি। আর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।