ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি,বৃহস্পতিবার, ১৮ মে ২০২৩ : সামাজিক মাধ্যমে সমকামিতার ফাঁদে তরুণদের আকৃষ্ট করে অপহরণের রমারমা কারবার ফেঁদেছিলো একটি চক্র। কিন্তু বিধি বাম। শেষ পর্যন্ত তাদেরকে ধরা পড়তে হয়েছে পুলিশের হাতে। এই চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অপহরণের পর খুনের এক মামলার তদন্তে নেমে এই চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
Advertisement
বৃহস্পতিবার দুপুরে, রাজধানীর মিন্টো রোডে চক্রের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উত্তরা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম।
এ সময় জানা যায়- কিভাবে সমকামিতার প্রলোভন দেখিয়ে একটি চক্র তরুণদের অপহরণ করে টাকা আদায় করে তার চমকপ্রদ সব তথ্য।
Advertisement
ডিসি মোর্শেদ আলম বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভুয়া আইডি খুলে বিভিন্ন মেসেঞ্জার গ্রুপে সমকামী তরুণদের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তুলতো চক্রটি। এরপর আগ্রহী তরুণদের সমকামিতার প্রস্তাব দিয়ে গাজীপুর চৌরাস্তা এলাকায় এনে জিম্মি করে টাকা-পয়সা আদায় করে ছেড়ে দিতো এই চক্রের সদস্যরা। আর দাবি পূরণ না করলে হত্যার মতো কাজও করতো তারা।
Advertisement
তিনি বলেন, অপহরণকারী চক্রের সদস্যরা অত্যন্ত দুর্ধর্ষ ও চতুর। তাদের শনাক্ত করতে বেশ কয়েকবার কৌশল পরিবর্তন করা হয়। পরবর্তী সময়ে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় চক্রের সদস্য আশরাফুল ইসলামকে প্রথমে গ্রেপ্তারের পর বাকিদের বিষয়ে খোঁজ পাওয়া যায়।
২০২২ সালের ১৭ ডিসেম্বর নোয়াখালী থেকে এই চক্রের ডাকে ঢাকায় আসেন আমির হোসেন। এরপর চক্রের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে অপহৃত হন। পরবর্তীতে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে চক্রটি, পরে টাকা না পেয়ে আমিরকে হত্যা করে লাশ গুম করে তারা।
বুধবার বিকালে শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়া পশ্চিমখণ্ড (দারোগাচালা) এলাকার রহিম মোল্লার বাড়ির পরিত্যক্ত সেপটিক ট্যাংক থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় আমিরের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) দক্ষিণখান থানা পুলিশ।
ওই ঘটনার দীর্ঘ তদন্ত শেষে নোয়াখালীর হাতিয়া দ্বীপ থেকে চক্রের হোতাসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে ডিএমপির দক্ষিণখান থানা পুলিশ। গ্রেপ্তাররা হলেন- চক্রের হোতা তারেক ওরফে তারেক আহাম্মেদ, মোহাম্মদ হৃদয় আলী, আশরাফুল ইসলাম, রাসেল সরদার, তৌহিদুল ইসলাম বাবু।
Advertisement
ডিএমপির উপকমিশনার বলেন, ২০২২ সালের ১৭ ডিসেম্বর বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করার কথা বলে বাড়ি থেকে ঢাকা আসেন আমির। এরপর ২২ ডিসেম্বর দক্ষিণখানে বড়বোনের বাসায় ওঠেন। এরপর তিনি নিখোঁজ হন। ২৮ ডিসেম্বর আমিরের ছোটবোনকে অপহরণকারী চক্রের সদস্যরা ফোন করে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।
এই ঘটনায় আমিরের বড় ভাই দক্ষিণখান থানায় ওই দিনই সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। গত ১৩ এপ্রিল একই থানায় অপহরণ মামলার দায়ের করেন আমিরের বড় ভাই।