ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি,রোববার, ১৪ মে ২০২৩ : প্রচণ্ড গতিতে ধেয়ে আসা অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা বাংলাদেশে খুব বেশি দাপট দেখাতে না পারলেও মিয়ানমার উপকূলে আছড়ে পড়ে ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে।
Advertisement
গভীর সাগরে ছয়দিন শক্তি সঞ্চয় করে রোববার দুপুরে বাংলাদেশের সর্বদক্ষিণের উপকূলে পৌঁছে যায় শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়টি।
তবে ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্র টেকনাফ উপকূল থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দুরে থাকায় বাংলাদেশকে এই ঘড়ের রুদ্ররূপ দেখতে হয়নি। ঝড়টির বাম পাশ বাংলাদেশ অংশে থাকায় টেকনাফের কিছু অংশ এর আওতায় পড়ে।
Advertisement
ঘন্টা তিনেকের মধ্যে প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন পেরিয়ে মিয়ানমারের উপকূলীয় সিটওয়ে শহরের কাছে মোখা যখন আছড়ে পড়ে তখন, ঝড়ের কেন্দ্রে বাতাসের ঘূর্ণন গতি ছিল ঘন্টায় ২০৯ কিলোমিটার।
তবে মিয়ানমার সরকারের আবহাওয়া অফিস ২০৯ কিলোমিটার ঘূর্ণন গতির কথা বললেও আন্তর্জাতিক বেশ কয়েকটি আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেয়া সংস্থা বলছে, এই গতি ছিল আরও বেশি।
Advertisement
আকু ওয়েদার এই ঝড়কে সুপার সাইক্লোন হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।
টেকনাফ উপকূল অতিক্রম করার সময় ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাতে সেন্টমার্টিন ও শাহ পরীর দ্বীপে টিনের বাড়িঘর ও দোকানপাটের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বহু বাড়ি ও দোকানের টিনের চালা ও বেড়ার অবকাঠামো উড়ে গেছে, গাছ ভেঙ্গে পড়ে ক্ষতি হয়েছে আরও অনেক বাড়িঘর ও দোকানপাটের।
বাতাসের তোড়ে পাকা দেয়ালের একটি আশ্রয়কেন্দ্রের ছাউনির টিন উড়ে যেতে দেখা গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মহেশখালীর ভাসমান একটি এলএনজি টার্মিনাল।
বাংলাদেশের উপকূলে সেন্টমার্টিনে ঝড়ের কেন্দ্রের অগ্রভাগ আঘাত হানে বেলা ১২টার দিকে। এর পরপরই শাহ পরীর দ্বীপসহ টেকনাফ উপজেলার বিভিন্নস্থানে মাঝারি শক্তি নিয়ে হানা দেয় ঘূর্ণিঝড়টি।
সেন্টমার্টিনে বাতাসের সর্বোচ্চ ঘূর্ণন গতি রেকর্ড করা হয়েছে ঘন্টায় ১৪৭ কিলোমিটার।
Advertisement
ঝড়ের কেন্দ্র অতিক্রম করে গেলেও মোখার প্রভাবে সেন্টমার্টিন ও টেকনাফে কয়েকঘন্টা ধরে চলে সর্বোচ্চ ১৩০ কিলোমিটার গতিতে বাতাসের ঘূর্ণন।
সঙ্গে ঝরতে থাকে বৃষ্টি। মাটি নরম হয়ে যাওয়া ও বাতাসের তোড়ে অসংখ্য গাছপালা উপড়ে পড়তে থাকে।
বেলা তিনটার দিকে সেন্টমার্টিন পেরিয়ে নিজস্ব শক্তিমত্তা নিয়ে মিয়ানমারে হানা দেয় মোখার মূল কেন্দ্র।
ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়ে মানুষের প্রাণহানিসহ বহু স্থাপনা ও গাছপালার ক্ষয়ক্ষতি করেছে পরাক্রমশালী এই ঝড়টি।
ঝড়ের কবল থেকে বাঁচতে মিয়ানমারের উপকূলীয় অঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ আশ্রয় খুঁজতে উঠেছে মঠ, প্যাগোডা ও স্কুলগুলোতে।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম এপি তিন জনের মৃত্যুর তথ্য দিয়ে বলেছে, হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
Advertisement
ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে সিটওয়ে, কিয়াউকপিউ ও গওয়া শহরের বহু ঘরবাড়ি, বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার, মোবাইল ফোন টাওয়ার, নৌকা এবং রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কোকো দ্বীপপুঞ্জে অসংখ্য ভবনের ছাদ উড়ে গেছে।
ঝড়ের প্রভাবে চট্টগ্রাম, সিলেট ও বরিশালে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণের আশঙ্কা রয়েছে। এরফলে পার্বত্য অঞ্চলে ভূমিধ্বসের শঙ্কার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।