ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি,শনিবার, ০৬ মে ২০২৩ : নিউজবাংলার হাতে আসা একটি সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, যাত্রাবাড়ী মোড় থেকে ছেড়ে আসা লেগুনায় চারজনের সঙ্গে যাত্রাবাড়ী-ডেমরা মহাসড়কের স্টাফ কোয়ার্টার মোড়ে নামেন ফারদিন। সেখান থেকে একটি অটোরিকশায় চড়ে চনপাড়ার দিকে যান। এই ফুটেজ ফারদিনকে শনাক্ত করেছেন তার বাবা।
Advertisement
বুয়েট ছাত্র ফারদিন নূর পরশ হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়ার কিছুক্ষণ আগেই গিয়েছিলেন রূপগঞ্জে মাদকের জন্য আলোচিত চনপাড়া বস্তি এলাকায়। তিনি সেখানে যাওয়ার ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যে মাদক কারবারিদের বেদম পিটুনির শিকার হয়ে প্রাণ হারান। এরপর একটি প্রাইভেট কারে তুলে নিয়ে তার মৃতদেহ নদীতে ফেলে দেয়া হয়।
Advertisement
চনপাড়া বস্তিমুখী অটোরিকশায় ফারদিনের ওঠার দৃশ্য ধরা পড়েছে সিসিটিভি ক্যামেরায়। সেই ফুটেজ পেয়েছে নিউজবাংলা। সিসিটিভি ফুটেজটি দেখানোর পর ফারদিনের বাবা কাজী নূর উদ্দিন ছেলেকে শনাক্ত করেছেন।
ফারদিনের মৃতদেহ বহনকারী প্রাইভেট কারের নদীর দিকে যাওয়ার আরেকটি সিসিটিভি ফুটেজও রয়েছে নিউজবাংলার কাছে। এর আগে চনপাড়া বস্তিতে ওই প্রাইভেট কারটির ঢোকা ও বেরিয়ে যাওয়ার সিসিটিভি ফুটেজ নিউজবাংলা প্রকাশ করে।
বুয়েট ছাত্র ফারদিন নিখোঁজ হওয়ার তিন দিন পর ৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে নৌ পুলিশ। বর্তমানে হত্যা মামলাটির তদন্ত করছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। পাশাপাশি র্যাবসহ আরও কয়েকটি সংস্থা ছায়াতদন্ত করছে।
Advertisement
তদন্তসংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেন, ৪ নভেম্বর গভীর রাতে ফারদিনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক অনুযায়ী তার সবশেষ অবস্থান শনাক্ত হয় রূপগঞ্জের চনপাড়া বস্তি এলাকায়।
তবে ফারদিন হত্যা মামলার তদন্ত কর্তৃপক্ষ ডিবিপ্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের জানান, ফারদিনের চনপাড়া বস্তিতে যাওয়ার প্রমাণ এখনও মেলেনি, তাকে অন্য কোথাও হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে।
মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ‘ঘটনার রাত সোয়া ২টার কাছাকাছি সময়ে সবশেষ যাত্রাবাড়ী মোড়ে ফারদিনকে দেখা গেছে। সাদা গেঞ্জি পরা অবস্থায় এক যুবক তাকে একটি লেগুনায় তুলে দেয়। ওই লেগুনায় আরও চারজন ছিল। লেগুনাটি তারাবোর দিকে নিয়ে যায়। ওই লেগুনার চালক ও সহযোগীদের নজরদারিতে রাখা হয়েছে।
‘ফারদিনের মৃত্যুর কারণ এখনও জানা যায়নি। কোথায় তাকে হত্যা করা হয়েছে, সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি।’
তবে নিউজবাংলার অনুসন্ধানে নিহত হওয়ার কিছুক্ষণ আগে ফারদিনের চনপাড়ায় যাওয়ার বিষয়ে তথ্য মিলেছে। নিউজবাংলার হাতে আসা একটি সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, যাত্রাবাড়ী মোড় থেকে ছেড়ে আসা লেগুনায় চারজনের সঙ্গে যাত্রাবাড়ী-ডেমরা মহাসড়কের স্টাফ কোয়ার্টার মোড়ে নামেন ফারদিন। সেখান থেকে মাত্র দেড় কিলোমিটার দূরেই চনপাড়া বস্তি।
লেগুনা থেকে নামার মিনিটখানেকের মধ্যে ফারদিন ওই চার ব্যক্তির সঙ্গে একটি অটোরিকশায় চড়ে চনপাড়ার দিকে যান।
যে সিসিটিভি ক্যামেরায় ফারদিনের সিসিটিভি ফুটেজে স্টাফ কোয়ার্টার মোড়ে নামা এবং চনপাড়ামুখী অটোরিকশায় চড়ার দৃশ্য ধরা পড়েছে, সেটির সময় রিয়েল টাইমের চেয়ে ১০ মিনিট পিছিয়ে রাখা ছিল। ফলে সিসিটিভিতে ফারদিনকে রাত ২টা ৩ মিনিটে লেগুনা থেকে নামতে দেখা গেলেও প্রকৃত সময় তখন ছিল রাত ২টা ১৩ মিনিট।
ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বৃহস্পতিবার সকালে জানিয়েছিলেন, তাদের কাছে থাকা সিসিটিভি ফুটেজে রাত সোয়া ২টার কাছাকাছি সময় ফারদিনকে যাত্রাবাড়ী থেকে লেগুনায় চড়তে দেখা গেছে। নিউজবাংলার পাওয়া সিসিটিভি ফুটেজ বলছে, রাত ২টা ৩ মিনিটে যাত্রাবাড়ী থেকে লেগুনায় চড়ার কিছু সময় পরই তিনি স্টাফ কোয়ার্টার মোড়ে নামেন।
এর আগে নিউজবাংলার আরেকটি অনুসন্ধানে চনপাড়া এলাকার সিসিটিভি ফুটেজে যেসব মাদক কারবারি শনাক্ত হন, তাদের সঙ্গেই ফারদিন লেগুনা থেকে নেমে অটোরিকশায় চড়েছিলেন।
চনপাড়ার পরবর্তী সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, রাত ২টা ২৩ মিনিটে ওই চার ব্যক্তি অটোরিকশা থেকে নেমে হেঁটে ৬ নম্বর ওয়ার্ডে প্রবেশ করছেন। বস্তির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, ফারদিন বস্তি এলাকায় ঢোকেন অটোরিকশায় চড়ে। পরে তাকে র্যাবের সোর্স সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা করে রায়হান বাহিনী।
সিসিটিভি ফুটেজে চার যুবকের ঢোকার আগে-পরে বেশ কয়েকটি অটোরিকশাকে ওই পথে দেখা গেছে।
ফারদিন চনপাড়ায় যান মাদকের খোঁজে
ফারদিনের নিখোঁজের পর তার ফোনের সিডিআর বিশ্লেষণ করে সবশেষ অবস্থান পাওয়া যায় চনপাড়া বস্তির ৬ নম্বর ওয়ার্ডের আলোর জ্যোতি ফার্নিচার ও পাশের একটি অটোরিকশার গ্যারেজের মধ্যবর্তী স্থানে। তখনই ফারদিনের মাদকসংশ্লিষ্টতার বিষয়টি আলোচনায় আসে।
তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা নিশ্চিত হন, সেদিন রাত ১০টার দিকে সবশেষ বন্ধু বুশরার সঙ্গে রামপুরা টিভি সেন্টারের পাশের গলির মুখে ছিলেন ফারদিন। সেখান থেকে বুশরা রিকশায় তার মেসে চলে যান। এরপর ফারদিনকে আর কোনো সিসিটিভি ক্যামেরায় দেখা যায়নি।
আরও পড়ুন: ফারদিন হত্যায় বুশরার যোগসাজশ মিলছে না
তবে তার মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্কের তথ্য যাচাই করে তদন্তসংশ্লিষ্টরা নিশ্চিত হন, ফারদিন বুশরাকে বিদায় জানিয়ে বাসে চড়ে গুলিস্তান হয়ে বাবুবাজার ব্রিজসংলগ্ন এলাকায় যান। সেখান থেকে জনসন রোড, ধোলাইখাল, জুরাইন এলাকা হয়ে যাত্রাবাড়ীর বিবির বাগিচা এলাকা হয়ে চনপাড়ায় যান।
তবে এসব পথের কোথাও ফারদিনের দৃশ্যমানতার কোনো সিসিটিভি ফুটেজ না পাওয়ায় তদন্তকারীরা ধারণা করেন, ফারদিন অপহরণের শিকার হতে পারেন অথবা অপরাধীদের খপ্পরে পড়তে পারেন। তাকে কেউ প্রলুব্ধ করে বা জোর করে চনপাড়া এলাকার আশপাশে নিয়ে হত্যা করতে পারে।
তবে যাত্রাবাড়ী এলাকার সিসিটিভি ফুটেজে ফারদিনকে একা হেঁটে লেগুনায় চড়তে দেখা গেছে। একইভাবে ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার এলাকায় লেগুনা থেকে নেমে ফারদিন স্বাভাবিক ভঙ্গিতে ওই চার ব্যক্তির সঙ্গে অটোরিকশায় চড়েন।
তদন্তসংশ্লিষ্ট বাহিনীর এক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে জানান, সে রাতে বুশরাকে নামিয়ে দিয়ে ফারদিন মাদকের জন্য রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় যান। পরে একজন মাদক সরবরাহকারীর সঙ্গে তার হোয়াটস অ্যাপে যোগাযোগ হয়।
এই দলটির সঙ্গেই ফারদিন যাত্রাবাড়ী থেকে লেগুনায় চড়ে ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টারের উদ্দেশে রওনা দেন। এরপর যান চনপাড়ায়। তবে মাদকের দাম নিয়ে বিতণ্ডা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সোর্স হিসেবে সন্দেহ করে তাকে মাদক কারবারিরাই হত্যা করে।
কাঁচপুর ব্রিজের আশপাশের নদীতে ফেলা হয় মৃতদেহ
চনপাড়া বস্তির নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র নিউজবাংলাকে জানায়, সে রাতে ফারদিনের সঙ্গে থাকা চার যুবকের আরেকটি উদ্দেশ্যও ছিল। সেটি হলো মাদক গ্রহণের পর চলে যাওয়ার সময় ফারদিনের কাছ থেকে বাকি টাকা ও মোবাইল ছিনিয়ে নেয়া। এ কারণেই তারা বস্তিতে ঢোকার আগে অটোরিকশা থেকে নেমে যান।
তবে এর আগেই স্থানীয় মাদক কারবারি রায়হান আহমেদের অনুসারীরা র্যাবের সোর্স মনে করে পিটিয়ে ফারদিনকে হত্যা করে। হত্যার পর রায়হানের বন্ধু ও বোনজামাই ফাহাদ আহমেদ শাওনের প্রাইভেট কারে করে ফারদিনের মরদেহ ঘটনাস্থল থেকে সরানো হয়।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর একাধিক কর্মকর্তার তথ্য অনুযায়ী, ফারদিন হত্যার খবর পেয়ে শাওন তার বাসার সামনে থেকে প্রাইভেট কারটি নিয়ে রাত ২টা ৫২ মিনিটে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। সিসিটিভি ফুটেজেও এ দৃশ্য ধরা পড়েছে।
এরপর রাত ৩টা ৩ মিনিটে গলি থেকে বেরিয়ে বালুব্রিজ হয়ে মূল সড়ক ধরে ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টারের দিকে চলে যায় শাওনের সাদা রঙের এক্সিও প্রাইভেট কারটি। এরপর সেখান থেকে বামে মোড় নিয়ে সুলতানা কামাল সেতুর দিকে চলে যায় গাড়িটি। এটির গতিবিধি ধরা পড়েছে- সিসিটিভির এমন ফুটেজও পেয়েছে নিউজবাংলা।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর ধারণা, এরপর সেতুতে ওঠার আগে ডানে মোড় নিয়ে সাইনবোর্ডে যাওয়ার রাস্তা বেছে নেয় গাড়িটি। পরে সাইনবোর্ড এলাকার আগে বামে মোড় নিয়ে নদীতীরের নির্জন রাস্তা ধরে কাঁচপুর ব্রিজ এলাকায় গিয়ে শীতলক্ষ্যায় ফেলে দেয়া হয় ফারদিনের মরদেহ।
আরও পড়ুন: মাথায় ভোঁতা অস্ত্রের আঘাতে ফারদিনের মৃত্যু
চনপাড়া এলাকায় শাওনের স্ত্রীকে খুঁজে পেয়েছে নিউজবাংলা। তবে তিনি নিজের নাম জানাননি। তিনি বৃহস্পতিবার দাবি করেন, শাওন মাদক কারবার করলেও পেশায় মূলত একজন গাড়িচালক। আগে সাইনবোর্ড এলাকায় বাসের চালক ছিলেন।
শাওন এখন কোথায় আছেন তা জানেন না দাবি করে তিনি বলেন, র্যাবের সঙ্গে গোলাগুলিতে স্থানীয় সন্ত্রাসী সিটি শাহিন নিহত হওয়ার পর শাওন আতঙ্কে বাড়ি ছেড়েছেন, আর ফেরেননি। ৪ নভেম্বর রাতে শাওন গাড়ি নিয়ে কোথায় গিয়েছিলেন জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর না দিয়ে চলে যান।
সাবেক একজন ইউপি মেম্বার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘চনপাড়া বস্তির পুরোটাই মাদকের সাম্রাজ্য। এখানে ৬৪টি মাদকের স্পট রয়েছে। এগুলোর অধিকাংশ নিয়ন্ত্রণ করতেন সম্প্রতি র্যাবের অভিযানের সময় গোলাগুলিতে নিহত রাশেদুল ইসলাম শাহিন ওরফে সিটি শাহিন।
‘রায়হান, শাওন ছিলেন শাহিনের আস্থাভাজন বন্ধু। শাহিনকে গ্রেপ্তারে গত কয়েক মাসে একাধিক অভিযান চালায় র্যাব। তবে অনুসারীদের হামলার কারণে এসব অভিযান ব্যর্থ হয়।’
সাবেক ওই জনপ্রতিনিধি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সবশেষ গত ২৭ সেপ্টেম্বর র্যাব শাহিনকে ধরতে গেলে অল্পের জন্য তিনি হাত ফসকে যান। এরপর শাহিন ও তার সহযোগীরা এলাকায় নিজেদের মতো করে পাহারা জোরদার করে।
‘মাদক কারবারিরা বিশেষ করে রাতে দলে দলে ভাগ হয়ে টহল দিতে শুরু করে। ঘটনার রাতে ময়নার বাড়িতে আসা যুবক মাদকের দাম নিয়ে তর্কে জড়ানোয় তাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সোর্স হিসেবে সন্দেহ করে মাদক কারবারিরা।’
স্থানীয় কয়েকজন পরিচয় গোপন রাখার শর্তে নিউজবাংলাকে জানান, সোর্স সন্দেহে পিটিয়ে মারার কারণেই ফারদিনের মোবাইল, মানিব্যাগ কিছুই ছিনিয়ে নেয়া হয়নি। মাদক কারবারিরা ভেবেছিলেন এগুলো রেখে দিলে পরে বিপদ হতে পারে। আর সোর্স হিসেবে বিবেচনা করার কারণেই মরদেহ সরাসরি এলাকার পাশের নদীতে না ফেলে প্রাইভেট কারে করে বেশ কিছুটা দূরে নিয়ে ফেলে দেয়া হয়।
সিসিটিভি ফুটেজ দেখে বাবা নির্বাক
যাত্রাবাড়ী-ডেমরা মহাসড়কের স্টাফ কোয়ার্টার মোড়ের সিসিটিভি ফুটেজে ফারদিনের উপস্থিতি শনাক্ত করেছেন তার বাবা কাজী নূর উদ্দিন।
ফুটেজ দেখার পর বৃহস্পতিবার নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আমি ৯০ পারসেন্ট নিশ্চিত যে, দুটি ফুটেজেই আমার ছেলে ফারদিন রয়েছে। ওর কালো প্যান্ট আর জুতাটা বোঝা যাচ্ছে। তাছাড়া আমার ছেলের দেহের গড়নেই তো তাকে চোখের পলকে ধরা যায়।’
আবেগতাড়িত বাবা বলেন, ‘আমি শুধু চাই আমার ছেলে হত্যাকরীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, এখন আর কোনো চাওয়া নেই।’
তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে কখনও সিগারেটের ধোঁয়া পর্যন্ত সহ্য করতে পারে না। এই ছেলে হঠাৎ কেন মাদকের স্পটের দিকে যাবে- এটা আমার কোনোভাবেই মাথায় আসছে না। আমার ছেলে নিশ্চয়ই কোনো কিছু নিয়ে ডিপ্রেশনে ছিল, নইলে এমন কিছু করার সিদ্ধান্ত কেন নেবে!’
তদন্তের বিষয়ে জানতে চাইলে ডিবিপ্রধান পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বৃহস্পতিবার রাতে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা যতটুকু পেয়েছি, তা জানিয়েছি। নতুন কোনো তথ্য পেলে আমরা সেগুলো যাচাই করব। আমাদের তদন্ত শেষ হয়নি, তদন্ত চলমান রয়েছে।’
এ ঘটনার ছায়া তদন্তকারী সংস্থা র্যাবের গোয়েন্দাপ্রধান লেফটেন্যান্ট কর্নেল মশিউর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা ফারদিনের ঘটনাস্থলে যাওয়ার ডিজিটাল ফুটপ্রিন্ট পেয়েই নিশ্চিত হয়েছিলাম, তিনি চনপাড়ায় গিয়েছিলেন। একই সঙ্গে তিনি যে সুলতানা কামাল সেতু পাড়ি দিয়ে তারাবোর দিকে যাননি সেটাও নিশ্চিত ছিলাম। কারণ সেতু পাড়ি দিলেই অন্য নেটওয়ার্ক টাওয়ারের অধীনে তার মোবাইল ফোনের অবস্থান পাওয়া যেত।
‘এখন আমরা যেহেতু ফারদিনের চনপাড়ায় প্রবেশের চিত্র পেয়েছি, নতুন করে আর কিছু বলার নেই। এখন শুধু অপরাধীদের ধরে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।’