ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি,সোমবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৩ : দেশের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন সদ্যবিদায়ী রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। বিশেষ করে গণমাধ্যমের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে প্রশংসা করেছেন তিনি।
সোমবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে বর্ণাঢ্য আয়োজনে আবদুল হামিদকে বঙ্গভবন থেকে বিদায় জানাতে রাজসিক আয়োজন করা হয়। এরপর নিকুঞ্জে নিজ বাসভবনে যান তিনি।
Advertisement
সেখানে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আবদুল হামিদ। গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘এই রোদের মধ্যে আপনারা আমার সঙ্গে এসেছেন। এজন্য আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। সারা দেশে আমার যতটুকু জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা আছে, তার জন্য গণমাধ্যমের অবদান আমি অস্বীকার করবো না। আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই এই জন্য যে, বিভিন্ন সময় আমি যা বলেছি, সেটাকে টুইস্ট না করে সত্যিকারভাবেই প্রকাশ করে মানুষের কাছে তুলে ধরেছেন। কারণ আপনারা আমাকে ভালোবাসেন। আর আমার মতো একজন সাধারণ মানুষের জন্য আপনারা এখন এখানে এসেছেন। যদিও আমি রাষ্ট্রপতি হয়েছিলাম, তবুও নিজেকে এ দেশের একজন সাধারণ মানুষ বলেই মনে করি।’
Advertisement
সদ্যবিদায়ী এই রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আজকের দিনে আমার যতটুকু সফলতা, তার জন্য পুরো দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। আমার জন্য তাদের দোয়া ছিল। আমার জেলা ও এলাকার মানুষও আমার জন্য দোয়া করেছেন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মুক্তভাবে কাজ করার সুযোগ দিয়েছেন; আমার কাজের বিষয়ে কোনো বাধার সৃষ্টি হয়নি। তাই আমি তার প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’
তিনি বলেন, সারা জীবন আমি এ দেশের মানুষের কল্যাণের কথা চিন্তা করেই রাজনীতি করেছি। আমার ক্ষুদ্র ক্ষমতা দিয়ে চেষ্টা করেছি, যাতে এদেশে সুষ্ঠু রাজনীতি প্রবর্তন করা যায়। সফল হয়েছি, সে কথা বলতে পারবো না। তবে চেষ্টার ত্রুটি ছিল না। আমি আশা করি, অদূর ভবিষ্যতে এ দেশে সুষ্ঠু ও স্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করবে এবং একটা সুষ্ঠু রাজনীতি অবশ্যই এদেশে প্রতিষ্ঠিত হবে। এর মাধ্যমে এ দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, আরও এগিয়ে যাবে।
Advertisement
তিনি আরও বলেন, আমি এ দেশের মানুষের কল্যাণ চাই, ভালো চাই। তারা ভালোভাবে থাকুক, সুখী থাকুক, সব দিক থেকেই ভালো থাকুক, সেই কামনা করি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আবদুল হামিদ বলেন, আমার ইচ্ছা বেশিরভাগ সময় হাওড় এলাকায় থাকার। এর মধ্যে ঢাকাতে তো থাকতেই হবে। এছাড়া কিশোরগঞ্জ যেহেতু আমার রাজনীতির চারণভূমি, তাই সেখানেও সময় দেবো। তবে আমি সময়টাকে মোটামুটি ৩ ভাগে ভাগ করতে চাই। সেগুলো হলো: ঢাকা, কিশোরগঞ্জ ও আমার হাওড় এলাকা। এর মধ্যে বেশিরভাগ সময় আমার হাওড় এলাকায় থাকার চেষ্টা করবো।
Advertisement
১৯৫৯ সালে ছাত্রলীগে যোগদানের মাধ্যমে আবদুল হামিদের রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়। ১৯৬৯ সালের শেষ দিকে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন। আবদুল হামিদ নবম সংসদে স্পিকার নির্বাচিত হন এবং ২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে তিনি ডেপুটি স্পিকার ছিলেন। আবদুল হামিদ ১৯৭১ সালে দেশের স্বাধীনতার পর থেকে সাতবার সংসদ সদস্য (এমপি) নির্বাচিত হন।
Advertisement
পরে তিনি ২০১৩ সালের ২২ এপ্রিল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। দুই মেয়াদে টানা ১০ বছর দায়িত্ব পালন করেছেন আবদুল হামিদ।
আবদুল হামিদ ১৯৪৪ সালের ১ জানুয়ারি কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন উপজেলার কামালপুরে জন্মগ্রহণ করেন।