ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),বরিশাল প্রতিনিধি,বৃহস্পতিবার, ০৬ এপ্রিল ২০২৩ ; বরিশাল অঞ্চলে এ বছর ৬৫ হাজার হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছিল। যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ১৯ হাজর হেক্টর বেশি। আর ফলনও হয়েছে বাম্পার।
Advertisement
কিন্তু বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এবং পাইকারি ব্যবসায়ী না পাওয়ায় পচে যাচ্ছে হাজার হাজার তরমুজ। উপায় না পেয়ে খালে ফেলে দেয়া হচ্ছে সেসব তরমুজ। লোকসান গুণতে হচ্ছে কৃষকদের। আবাদের টাকা না পেয়ে পথে বসতে হবে বলে আশঙ্কা তাদের।
Advertisement
গতবছর ভালো দাম পাওয়ায় বেশি জমিতে তরমুজের আবাদ করেছিলেন ভোলার আল আমীন। প্রতি একর জমিতে ১ লাখ টাকার মতো ব্যয় হয়েছে। আশা ছিল এসব জমি থেকে একর প্রতি ২ থেকে ৩ লাখ টাকার তরমুজ বিক্রি করবেন। কিন্তু সম্প্রতি বৃষ্টির কারণে জমির অধিকাংশ তরমুজ মাঠেই নষ্ট হয়ে গেছে। যা বরিশালের বাজারে এনেছেন তাও পাইকারি ক্রেতা না পাওয়ায় নষ্ট হতে বসেছে। তিনি জানান, মাঠ থেকে তরমুজ কেটে এনে বরিশালে এসে ৩ দিন ধরে অপেক্ষা করছেন। যার ফলে নিয়ে আসা তরমুজেরও তিন ভাগের দুই ভাগ ফেলে দিতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।
বরিশালের এই মোকামে প্রতিদিন ৫ কোটি টাকার তরমুজ কেনাবেচা হয়। দক্ষিণের বিভিন্ন জেলা থেকে দৈনিক ৫ লাখের বেশি তরমুজের আমদানি হয় এই মোকামে। কিন্তু মৌসুমের মোক্ষম সময়েই একটানা বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় তরমুজ। এছাড়াও কৃষেকর বেশিরভাগ ক্ষেত পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় মাঠেই পচে যায় অনেক তরমুজ। পোর্ট রোড সংলগ্ন বালুর মাঠ, চরমোনাই খেয়াঘাট, কলাপট্টিতে পচা তরমুজের গন্ধে টেকা দায়।
Advertisement
এখানেই কাজ করেন নগরীর পলাশপুরের বাসিন্দা হাসান। জানান সারা বছর এমন মৌসুমের জন্য অপেক্ষায় থাকি। কারণ তরমুজ বেশি হলে আমাদের কাজও বেশি, আয়ও বেশি। কিন্তু এবছর তরমুজ বেশি হলেও বিক্রি না থাকায় কোনো কাজ নেই। তাই অনেক শ্রমিকই বেকার বসে অলস সময় কাটাচ্ছে।
পলাশপুরের খুচরা ব্যবসায়ী মো রুবেল হোসেন জানান, তিনি দৈনিক ৫শ থেকে দেড় হাজর তরমুজ কেনেন। বরিশাল ভুমি অফিসের সামনে ফুটপাতে এসব তরমুজ বিক্রি করনে। ৬০ থেকে ৭০ টাকা দরে কিনে বিক্রি করতে গেলে ক্রেতারা ৫০ টাকাও দিতে চায় না। কিন্তু সাধারাণ ক্রেতাদের তো অনেক দামে দরমুজ কিনতে হয় এমন প্রশ্নে রুবেল জানান, যে তরমুজ কেনা হয় তার বেশিরভাই ফেলে দিতে হচ্ছে তাদের যার জন্য ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের।
রাজশাহী থেকে তরমুজ কিনতে আসা পাইকরী ব্যবসায়ী সাজেমুল ইসলাম জানান, তারা এখন থেকে তরমুজ নিয়ে রাজশাহীতে বিক্রি করবেন। কিন্তু এখানে এসে তরমুজের অবস্থা দেখে কিন্তু ভয় পাচ্ছেন। কারণ এসব তরমুজ রাজশাহী পর্যন্ত নিয়ে গিয়ে বিক্রি করতে যে সময় লাগবে তাতে তিনভাগের একভাগের বেশিই ফেলে দিতে হবে।
Advertisement
এদিকে বিক্রি না থাকায় অলস সময় কাটাচ্ছে কৃষক ও শ্রমিকরা। লোকসানের আশঙ্কায় রয়েছেন দুরদুরান্ত থেকে আসা ব্যাপারীরাও। এই অবস্থায় সরকারের সহায়তা চান তারা।
Advertisement
পরস্থিতি মোকাবেলায় ক্ষিতগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করে তাদের প্রণোদোনার আওতায় আনার আশ্বাস দেন বরিশাল কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর।