ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),খুলনা প্রতিনিধি,সোমবার, ০৩ এপ্রিল ২০২৩ : খুলনায় কাটাছেঁড়া ছাড়াই আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো সফলভাবে ব্রেন টিউমারের অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়েছে। নাকের ছিদ্র দিয়ে এন্ডোসকপির মাধ্যমে এ অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসকরা।
শনিবার (১ এপ্রিল) বিকেলে খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিন ঘণ্টার চেষ্টায় সফল হন চিকিৎসকরা। মোট ৮ জন চিকিৎসক এ অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করেন।
Advertisement
খুলনার ফুলতলার বাসিন্দা টিটু, মায়ের চিকিৎসার জন্য ঘুরে বেড়িয়েছেন বিভিন্ন হাসপাতালে। কিছুদিন আগে তার মা মীরা বেগমের ব্রেন টিউমার ধরা পড়ে। এরপর খুলনার বিভিন্ন হাসপাতালে মায়ের চিকিৎসা করানোর জন্য গেলে চিকিৎসকরা তার মায়ের দ্রুত অস্ত্রোপচার করানোর জন্য পরামর্শ দেন। এ জন্য রাজধানী ঢাকায় যেতেও পরামর্শ দেন তারা।
সর্বশেষ গত মাসের শেষ সপ্তাহে খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা খুলনায় অস্ত্রোপচার করা হবে বলে আশ্বস্থ করেন। এরপর খুলনাতেই তার চিকিৎসা হয়। বর্তমানে অস্ত্রোপচার শেষে এখন সুস্থ আছেন মীরা বেগম। এতেই স্বস্তির হাসি স্বজনদের মুখে।
Advertisement
টিটু বলেন, ‘আমার মা বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। বিভিন্ন হাসপাতালে যাওয়ার পর আমার মায়ের ব্রেন টিউমার ধরা পড়ে। তখন চিকিৎসকরা আমাকে বলেন, দ্রুত অস্ত্রোপচার করতে হবে। এজন্য ঢাকায় যাওয়ারও পরামর্শ দেয়া হয়। তবে আমি পরিবারের একমাত্র সন্তান। আমি চেয়েছিলাম, খুলনাতেই অস্ত্রোপচার করতে। খুলনাতে এমন সুযোগ ছিল না। পরে খুলনার চিকিৎসকরা আমার কাছ থেকে সময় নেন। তারা জানান, খুলনাতেই অস্ত্রোপচার সম্ভব। শনিবার (১ এপ্রিল) আমার মায়ের অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়েছে।
Advertisement
কয়েকদিনের মধ্যেই আমি মাকে বাসায় নিয়ে যেতে পারব। সফলভাবে অস্ত্রোপচার হওয়ায় আমি খুবই সন্তুষ্ট।’
চিকিৎসকরা জানান, প্রথমবারের মতো এ ধরনের অস্ত্রোপচার করে তারা সফল হয়েছেন। কোনো রকম কাটাছেঁড়া ছাড়াই এন্ডোসকপির মাধ্যমে ব্রেন টিউমার অস্ত্রোপচার করানো হয়েছে। এ জন্য আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। বর্তমানে ব্রেন টিউমারের রোগী বাড়লেও চিকিৎসকরা রোগীদের ভীত না হয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন।
Advertisement
অপারেশন টিমের অন্যতম সদস্য ও খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. মো. রিয়াজ আহমেদ হাওলাদার বলেন, ‘প্রথমবারের মতো খুলনায় এ ধরনের অস্ত্রোপচার করা হলো। আমরা তিন ঘণ্টার চেষ্টায় সফল হয়েছি। বর্তমানে এ ধরনের রোগী বাড়লেও আধুনিক প্রযুক্তির সুবিধায় আমরা এ চিকিৎসা করতে পারব বলে আশা করছি।’
Advertisement
এ ধরনের চিকিৎসার জন্য সক্ষমতা বাড়াতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আরও পরিকল্পনা গ্রহণ করছে বলে জানান হাসপাতালের পরিচালক ডা. এমএ আলী।
তিনি বলেন, ‘আমরা নিউরো সার্জারি বিভাগের সঙ্গে কথা বলেছি, তারা আমাদেরে বেশ কিছু আধুনিক যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামের ডিমান্ড দিয়েছে। আমরা সেটা পূরণ করতে পারলে আরও বেশি ভালোভাবে চিকিৎসা সেবা দিতে পারব।’