ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),চট্টগ্রাম প্রতিনিধি,রোববার, ০২ এপ্রিল ২০২৩ : জালিয়াতির মাধ্যমে এক বছরে ১ হাজার ৭৮০ চালানে তৈরি পোশাক গেছে বিভিন্ন দেশে। যার মূল্য ৩শ ৭৯ কোটি টাকার তিল পরিমাণও আসেনি বৈধ পথে। টানা তদন্তে যার সত্যতা পায় কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর।
Advertisement
ভয়াবহ এ জালিয়াতির পেছনে কারা তা নিয়ে ধোঁয়াশা এখনো কাটেনি। তবে চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের অনুসন্ধানে মিলেছে এ দুষ্টচক্রের হোতা ও তার সহযোগীদের নাম।
Advertisement
তথ্য বলছে, দেড় দশক আগে ঝালকাঠি থেকে চট্টগ্রাম এসে ভাটিয়ারীর ১টি কারখানায় প্রহরীর চাকরি নেন স্কুলের গণ্ডি পার না হওয়া শামিম। ২০০৭ সালে পতেঙ্গায় ওসিএল ডিপোতে চাকরি নেন কার্গো রিসিভার হিসেবে। তখন তার নাম ছিল মারুফ বিল্লাহ। এই মারুফ ২০১৩ সালে চুরিতে ধরা পড়ে চাকরি খোয়ান। তবে ওসিএলে থাকতে রপ্ত করেন আমদানি-রপ্তানির ফাঁক-ফোকর। যা কাজে লাগিয়ে শুরু করেন সিঅ্যান্ডএফের ব্রোকারি। কাজ শুরু করেন অন্যের লাইসেন্সে। ২০২২ সালে শুরু হয় জালিয়াতির কর্মযজ্ঞ। এরপর ঘুরতে থাকে ভাগ্যের চাকা। এরইমধ্যে এনআইডিতে নাম পাল্টে যান শামিম আহমেদ।
Advertisement
সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী মাহমুদ ইমাম বিলু বলেন, শতভাগ না হলেও ৮০ শতাংশ জালিয়াতি হয় অন্যের লাইসেন্স ভাড়া করেই। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। চ্যানেল 24-এর মাধ্যমে আমি সবাইকে অনুরোধ জানাবো, নিজের লাইসেন্স কাউকে ব্যবহার করতে দিবেন না।
নগরীর বারিক বিল্ডিংয়ে শামিমের অফিস তালাবদ্ধ। তার সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারীর সিন্না বাড়ি এলাকায় বাসায় গিয়েও মেলেনি তার দেখা। একই ভবনে অন্যান্য স্বজনরা থাকলেও তারা শামিমের খোঁজ দিতে রাজি হননি।
পাওয়া যায়নি শামিমের আত্মীয় সোহেলের বাড়িতে গিয়েও। এমনকি মুখে তালা দিয়েছেন স্থানীয়রাও। তারা জানান, আমরা আমাদের কাজে ব্যস্ত, সে কখন আসে যায়, কি করে তা আমরা জানি না।
Advertisement
ভাটিয়ারীতে শামিমের অন্তত চারটি জায়গা কেনার তথ্য মিলেছে। যার ১টি বর্তমান বাসার সামনেই। যেখানে কাজ শুরু হলেও আপাতত বন্ধ রয়েছে। তবে পাশেই আরেকটি প্লটে চলছে ৫ তলা বাড়ি তৈরির কাজ। সেখানে একজনকে জিজ্ঞেস করা হয়, শামিম শেখ কখনও এখানে আসেন কি না। উত্তরে তিনি বলেন, আমার সঙ্গে উনার দেখা হয়েছিলো কাজ ধরারও মাসখানেক আগে। শামিম শেখের একজন ভায়রা আসেন এখানের কাজ দেখার জন্যে। উনার নাম রফিক।
ভাটিয়ারী রেলস্টেশন বাজারে ১টি দোকানেরও মালিক শামিম। দোকানদার জানান, দোকানের ম্যানেজার হিসেবে আছে ওনার বন্ধু। তিনিই মূলত দেখাশুনা করেন। শামিম ভাই মাঝেমধ্যে আসতেন দেখতাম।
Advertisement
শামিম সম্পত্তির পাহাড় গড়েছেন স্থায়ী ঠিকানা ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলার জয়খালী গ্রাম ও আশপাশে। জানা গেছে, কিছুদিন আগে সেখানে নতুন বাড়ি বানিয়েছেন তিনি। জমি কিনেছেন রিফুয়েলিং স্টেশন স্থাপনের জন্য।
চ্যানেল টোয়েন্টিফোর যায় শামিম আহমেদের খালাতো ভাই সাইফুদ্দিনের অফিসেও। কিন্তু সরাসরি তাকে পাওয়া না গেলেও টেলিফোনে তার দাবি, তিনি জানেন না কিছুই।
নজিরবিহীন এ জালিয়াতির ঘটনায় মামলা করে কাস্টমস গোয়েন্দা। একই ঘটনায় শামিমসহ ৫ জনের মামলা করে সিঅ্যান্ডএফ লিম্যাক্স শিপার্সও।