ইফতার পার্টি না করায় যেসব ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে (ভিডিও)

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি,শুক্রবার, ৩১ মার্চ ২০২৩ : বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় কৃচ্ছ্রসাধনের অংশ হিসেবে ইফতার পার্টির আয়োজন থেকে সরে এসেছে প্রধান রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ছাড়াও বেশকিছু সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। দেশের বাজারব্যবস্থা স্থিতিশীল রাখতে এমন সিদ্ধান্ত কার্যকর ভূমিকা রাখবে জানিয়ে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এর ফলে ইফতারের আগে শহরকেন্দ্রিক যানজট লাঘবের পাশাপাশি হবে জ্বালানি সাশ্রয়ও।

Advertisement

ঘটা করে ইফতার পার্টির আয়োজন দেশের ইতিহাসে খুব বেশি পুরোনো না হলেও কয়েক বছর ধরে এটি চলে আসছে। এমন ইফতার পার্টির আয়োজক মূলত বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী সংগঠন ও বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান।

Advertisement

গত বছর সরকারি একটি সংস্থা ইফতার পার্টির জন্য দাওয়াত কার্ড বিতরণ করে ২ হাজার ৯০০ জনকে। আর ইফতারের আয়োজন করা হয় আরও অন্তত ৩০০ জন বেশি ধরে।
ওই আয়োজনে খাবারের জন্য জনপ্রতি খরচ হয় ৪৫০ টাকা। সে হিসাবে শুধু খাবার বাবদ খরচ দাঁড়ায় প্রায় ১৫ লাখ টাকা। এর বাইরেও ছিল খরচের নানা খাত।

Advertisement

বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের এমন সময়ে ইফতার অনুষ্ঠান না করে সেই টাকা গরিবদের দান করে দিতে সামর্থ্যবানদের প্রতি সম্প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর কারণ হিসেবে জানা যায়, বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী যে সাশ্রয়ী নীতি অবলম্বন করেছেন, ব্যক্তিগত জীবনে সেটারই অংশ হিসেবে তিনি এবার কোনো ধরনের ইফতার পার্টি করবেন না। ইফতারে সংযম এবং ব্যয় সংকোচন করবেন। আনুষ্ঠানিক আয়োজন না রাখার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত ইফতারও সাদামাটা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষার।

Advertisement

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন মানবিক আবেদনে সাড়া দিয়ে ইফতার পার্টির প্রস্তুতি নিয়েও এরই মধ্যে সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে বাংলাদেশ পুলিশ, বিজিবি ও র‍্যাব। একই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও দলটির অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের।

সরকারপ্রধানের এমন আহ্বানকে সময়োপযোগী উল্লেখ করে এর মাধ্যমে শ্রেণিবৈষম্য কমিয়ে সমাজে ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠার বার্তা খুঁজছেন বিশিষ্টজনরা। অন্যদিকে ইতিবাচক এ সিদ্ধান্তের প্রভাব সরাসরি দেশের বাজারব্যবস্থায় পড়বে বলে মত অর্থনীতিবিদদের।

অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মো. আবু ইউসুফের মতে, ইফতার পার্টি বন্ধ থাকায় বাজারে স্থিতিশীলতা এসেছে। এক সঙ্গে বেশি ইফতারির পণ্য কেনার ফলে অতিরিক্ত চাপ পড়ে, যার সুযোগ নিত ব্যবসায়ীরা। এবার ইফতার পার্টি না থাকায় সাধারণ মানুষ কিছুটা স্বস্তিতে কেনাকাটা করতে পারছে।
শুধু ইফতার পার্টি নয়, সাম্প্রতিক বিদ্যুৎ অপচয় রোধের মতো চাইলেই অনেক ক্ষেত্রেই সাশ্রয় করে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংটককালে দেশের এবং দেশের মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারেন যে কেউ।
Advertisement

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ইফতার পার্টি না করার যে বার্তা, এটা শুধু খাবারের ক্ষেত্রে সাশ্রয়ী নয়; বিদ্যুৎ, পানি ও জ্বালানিসহ মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বজায় রাখতেও সহায়তা করছে। প্রধানমন্ত্রীর আহবানে সবক্ষেত্রে সাশ্রয়ী হওয়ার একটি বড় বার্তা দেয়া হয়েছে বলেও মনে করেন তিনি।

ইফতার পার্টি বন্ধের পাশাপাশি সংযমের মাস রমজানে খাবার অপচয় থেকেও সরে আসার আহ্বান বিশিষ্টজনদের।