ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),কুড়িগ্রামের চিলমারী প্রতিনিধি, শুক্রবার, ৩১ মার্চ ২০২৩ : কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেসক্রিপশন (চিকিৎসার ব্যবস্থাপত্র) পরিবর্তন করতে যান এক রোগী। সেখানে ওষুধ কোম্পানির এক বিক্রয় প্রতিনিধি রোগীর প্রেসক্রিপশনের ছবি তোলেন। এ নিয়ে বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে চিকিৎসক ও বিক্রয় প্রতিনিধি রোগীকে পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছেন।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) বিকেলে চিলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী হাসপাতালে গিয়ে ওই চিকিৎসককে অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপে বিক্ষুব্ধ জনতার হাত থেকে চিকিৎসককে মুক্ত করেন।
Advertisement
জানা গেছে, উপজেলার থানাহাট ইউনিয়নের মণ্ডলপাড়া এলাকার মো. জাহাঙ্গীর আলম (৬১) ডায়রিয়ার আক্রান্ত হয়ে গত ২৮ মার্চ তারিখে চিলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। বৃহস্পতিবার বিকেলে তিনি ব্যবস্থাপত্র নিয়ে মেডিকেল অফিসার ডা. মাহমুদুল হাসানের কাছে যান। সেখানে জাহাঙ্গীরের সঙ্গে ডা. হাসান ও গ্লোব ফার্মাসিউটিক্যালসের বিক্রয় প্রতিনিধি আরিফের বাগবিতণ্ডা শুরু হয়।
Advertisement
একপর্যায়ে ডা. হাসান ও আরিফ কক্ষের দরজা বন্ধ করে রোগী জাহাঙ্গীরেকে মারধর করতে থাকলে তার মাথা ফেটে যায়। ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাসপাতালের পরিবেশ উত্তপ্ত হয়। ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী হাসপাতালের ওই চিকিৎসককে ১ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপে বিক্ষুব্ধ জনতার হাত থেকে চিকিৎসককে মুক্ত করা হয়।
Advertisement
আহত রোগী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, তিন দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি, তবু ডায়ারিয়া আরোগ্য না হওয়ায়, ওষুধ পরিবর্তনের জন্য ব্যবস্থাপত্র নিয়ে ডা. মাহমুদুল হাসানের কক্ষে যাই। সেখানে প্রবেশমাত্র গ্লোব ফার্মাসিউটিক্যালসের বিক্রয় প্রতিনিধি আরিফ আমার হাত থেকে কাগজটি কেড়ে নিয়ে ছবি তোলেন।
ব্যবস্থাপত্র কেড়ে নেওয়ার কথা জানতে চাইলে ডা. হাসান বলেন, ‘প্রেসক্রিপশনের ছবি তুলেছে তো কি হয়েছে?’ বিষয়টির প্রতিবাদ করলে ডা. হাসান ও আরিফ কক্ষের দরজা বন্ধ করে আমাকে কিলঘুষি মারে এবং দেয়ালের সঙ্গে ধাক্কা দিয়ে মাথা ফাটিয়ে দেয়।
ধস্তাধস্তিতে মাথা ফেটে যাওয়ার কথা স্বীকার করে মেডিকেল অফিসার ডা. মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘রোগী কক্ষে আসলে আমার সঙ্গে বসে থাকাদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা বাঁধে। এ সময় বাইরে থেকে রোগীর অভিভাবক ক্ষিপ্ত হওয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।’
Advertisement
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আমিনুল ইসলাম বলেন, আমি জরুরি মিটিংয়ে ছিলাম। বিষয়টি জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. রুকুনুজ্জামান শাহীন বলেন, হাসপাতালে বিবাদমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। পরবর্তীতে বসে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।