ইবি ছাত্রীকে নির্যাতন: কর্তৃপক্ষের গাফলতিতে আটকে আছে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত (ভিডিও)

SHARE

 

গত ১১ ও ১২ই ফেব্রুয়ারি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে নবীন ছাত্রী ফুলপরী খাতুনকে শারীরিকভাবে নির্যাতন ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করা হয়। তদন্তের পর এই নির্যাতনের ঘটনার সত্যতা পায় হাইকোর্ট। পরে হাইকোর্টের নির্দেশনায় গত ৪ মার্চ নির্যাতনে জড়িত পাঁচ ছাত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করে কর্তৃপক্ষ। একইসঙ্গে তাদের কেনো স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে না তার কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয় অভিযুক্তদের। তবে কারণ দর্শানোর সময় শেষ হওয়ার ১২ দিন পেরুলেও এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, তদন্তে নির্যাতনের সত্যতা পাওয়ার পর হাইকোর্টের নির্দেশে গত ৪ঠা মার্চ অভিযুক্তদের সাময়িক বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। একইসঙ্গে তাদের কেনো স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে না জানতে চেয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করা হয়। বহিষ্কৃতরা হলেন, শাখা ছাত্রলীগ সহসভাপতি ও পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, ফিন্যান্স এ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের তাবাসসুম ইসলাম, আইন বিভাগের ইসরাত জাহান মিম, চারুকলা বিভাগের হালিমা আক্তার ঊর্মি ও ফিন্যান্স বিভাগের মুয়াবিয়া জাহান। অন্তরা বাদে সকলেই ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী।

Advertisement

অভিযুক্তদের ১৫ মার্চের মধ্যে শোকজ নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়। এতে অভিযুক্ত তাবাসসুম ও মোয়াবিয়া জবাব দিলেও বাকি তিনজন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জবাব দিতে পারেনি। পরে তারা কর্তৃপক্ষের কাছে সময় বাড়ানোর আবেদন করে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও আইন প্রশাসকের গাফিলতির কারনে তিন অভিযুক্ত এখনো জবাব দেয়নি বলে জানা গেছে। যে কারণে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের প্রক্রিয়া এখনও আটকে আছে বলে জানিয়েছে সূত্র।
Advertisement

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত সানজিদা চৌধুরী অন্তরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হলেও আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ তারা উল্লেখ করেনি। শুধু একটি রিট পিটিশন নম্বর দিয়েছে। এজন্য আমি ৬ তারিখে কাগজপত্র চেয়ে আবেদন করি। পরে কাগজ না পেয়ে আমি ১৩ তারিখ সময় চেয়ে আবেদন করি। এখনো কাগজপত্র বা সময় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত কিছুই পাইনি। তারা আমাকে কাগজপত্র দিলে আমি সময়ের মধ্যেই জবাব দিতে পারতাম।

Advertisement

রেজিস্ট্রার দপ্তরের উপ-রেজিস্ট্রার সূত্রে জানা যায়, গত ১৩ মার্চ অভিযুক্তদের স্থানীয় বহিষ্কারের বিষয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ ও সময় বাড়ানোর আবেদন সংক্রান্ত ফাইল রেজিস্ট্রার দপ্তরে জমা দেওয়া হয়। পরের দিন রেজিস্ট্রারের এন্ট্রি করা ফাইলটি আইন প্রশাসক দপ্তর পাঠানো হয়।

এদিকে সম্প্রতি দপ্তরপ্রধানরা ফাইল সম্পর্কে সঠিক তথ্য না জানার বিষয় নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এতে ফাইলের বিষয়ে দপ্তরপ্রধানরা একে অন্যের উপর দায় চাপানোর বিষয়ে উঠে আসে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এইচ এম আলী হাসান বলেন, ফাইলটি আইন প্রশাসক দপ্তরে সময়মত পাঠানো হয়েছে। ফাইলটি ওখানে আটকে আছে। আইন প্রশাসক বাহিরে আছে। আগামীকাল তিনি আসবেন। আসলে ভিসি স্যারের সাথে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

Advertisement

ফাইলের বিষয়ে আইন প্রশাসক অধ্যাপক ড. আনিচুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ঢাকায় আছি। তবে ফাইলটি দেখেছি। আরও ভালোভাবে দেখে মতামত দিবো।

প্রসঙ্গত, ছাত্রী নির্যাতনে জড়িত পাঁচ ছাত্রীকে গত ৪ঠা মার্চ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করে কর্তৃপক্ষ। তারা সকলেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। নির্যাতনে জড়িত থাকার অভিযোগে গত ১লা মার্চ পাঁচজনকেই সংগঠন থেকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এছাড়া তাদের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করে কর্তৃপক্ষ।