শাকিব খানের বিরুদ্ধে অভিযোগ এবার মুখ খুললেন ‘অপারেশন অগ্নিপথ’র নির্মাতা (ভিডিও)

SHARE

 ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),বিনোদন প্রতিনিধি,বুধবার, ২২ মার্চ ২০২৩ ; সাত বছর আগের প্রজেক্ট ‘অপারেশন অগ্নিপথ’। আশিকুর রহমানের পরিচালনায় এ সিনেমার কিছু অংশের শুটিং হয়েছিল অস্ট্রেলিয়ায়। এরপর অজানা কারণে আটকে যায় সিনেমার কাজ। নতুন করে এ সিনেমাটি আলোচনায়। সিনেমা প্রযোজক দাবি করা রহমত উল্লাহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে শাকিব খানের বিরুদ্ধে চিঠি দিয়েছেন চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট তিন সমিতিতে।

Advertisement

 

এরপর নড়েচড়ে বসেন শাকিব খান। গুলশান থানা ও ডিবি কার্যালয়ে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছেন, উত্তর দিয়েছেন বিভিন্ন প্রশ্নের। শাকিব ইস্যুতে অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ আসছে, এমন পরিস্থিতিতে সোমবার (২০ মার্চ) রাতে ভিডিও বার্তা দিয়েছেন শাকিব খানের অস্ট্রেলিয়ান আইনজীবী উপল আমিন। সুপারস্টারের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো সত্য নয় বলে উল্লেখ করেছেন উপল।

Advertisement


আইনজীবীর পর এবার একই ইস্যুতে মুখ খুলেছেন ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ সিনেমার নির্মাতা আশিকুর রহমান। মঙ্গলবার (২১ মার্চ) দুপুর ২টা ২০ মিনিটে ফেসবুকে লম্বা পোস্ট করেছেন এ নির্মাতা। লিখেছেন, ‘চিত্রনায়ক শাকিব খানের নামে যে অভিযোগগুলো এসেছে সেগুলো ত্রুটিপূর্ণ ও বাস্তবতার সাথে সাংঘর্ষিক। আমি উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনেছি। অভিযোগ করার মাধ্যমে কি লক্ষ্য অর্জন করতে যাচ্ছে এটা অভিযোগকারীর কাছেই পরিষ্কার নয়। যদি অনৈতিক কোন কাজ কেউ সংঘটন করে থাকে, তবে তা যে কোন দেশের আইনেও অপরাধযোগ্য। আমাদের সবারই সেটার বিচার চাওয়া উচিত। কিন্তু ঘটনার বদলে টাকা বা অন্যকোন সুবিধা চাওয়া পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য।’

Advertisement

নির্মাতা আশিক আরও লেখেন, ‘অপরাধ প্রমাণ হয়ার আগ পর্যন্ত যেকোনো অভিযোগকে সত্য বলা যায় না। অপরাধ প্রমাণের দায়িত্ব একমাত্র পুলিশ ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর। একটি চলচ্চিত্রের ঘাড়ে বন্দুক রেখে, ব্যক্তিগত রোষানলের বিষয়ের সমাধান করা অগ্রহণযোগ্য।’

শাকিব খানের বিষয়ে আশিক লেখেন, ‘শাকিব খান ২০১৬ ও ২০১৮ সালে দুইবার অস্ট্রেলিয়াতে শুটিং করতে আসেন। ২০১৬ সালে অস্ট্রেলিয়ায় ৭-৮ দিনের শুটিং করেন। পরবর্তীতে ২০১৮ সালে ‘সুপার হিরো’ চলচ্চিত্রের শুটিং করতে অস্ট্রেলিয়াতে আসেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়, তিনি নাকি পালিয়ে গেছেন অস্ট্রেলিয়া থেকে যেটা বাস্তবে কখনও হওয়া সম্ভব না। এই দেশে কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আসলে, তা খতিয়ে শেষ না দেখা পর্যন্ত তাকে দেশ ত্যাগ বা প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয় না। দুই চলচ্চিত্রের সকল কলাকুশলী সম্মান ও আতিথেয়তা সহকারে অস্ট্রেলিয়া আগমন ও ত্যাগ করেন।’

তিনি আরও লেখেন, ‘২০১৮ সালে, শাকিব খান ও অন্যান্য কলাকুশলীরা যখন হোটেল হলিডে ইনে অবস্থান করছিলেন, তখন অস্ট্রেলিয়া পুলিশের দুইজন তদন্তকারী কর্মকর্তা তার রুমে যান। প্রায় ২০-৩০ মিনিটের অবস্থান শেষে তারা অন্যান্যদের আরও কিছু সাধারণ প্রশ্ন করে চলে যান। এই ঘটনা ছাড়া শাকিব খানের সাথে পুলিশের আর কোনো ইন্টারেকশন আমার জানা নেই। তার একদিন পর আমি, রবিউল রবি ও শাকিব খানের আরেকজন লিগ্যাল প্রতিনিধি কোগরা পুলিশ স্টেশনে যাই উক্ত ঘটনার বিস্তারিত জানার জন্য। প্রায় এক ঘণ্টার রুদ্ধদার আলোচনা শেষে তদন্তকারি কর্মকর্তা আমাদের জানান, শাকিব খানের বিরুদ্ধে করা অভিযোগের সত্যতার প্রমাণ পাননি। তারপর তিনি শাকিব খানের সাথে সরাসরি ফোনে কথা বলেন এবং তাকে কোন সন্দেহ ছাড়া ও নিশ্চিন্তে সিডনিতে শুটিং করতে বলেন।’

যেকোনো কাজ করার সময় ছোটখাট অনেক ত্রুটি থাকে। সেগুলোকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা সমীচিন নয় উল্লেখ করে আশিকুর রহমান আরও লেখেন, ‘খাবার দাবারসহ যে সকল অনর্থক অভিযোগ এসেছে, সেগুলো আসলে অনভিপ্রেত ও ক্ষুদ্র মানসিকতার পরিচয় দেয়। শুটিংয়ের বিশাল কর্ম ব্যস্ততার মাঝে সময় পাওয়া কঠিন। প্রতিদিন ১০-১২ ঘণ্টা বিরতিহীন শুটিং করার পর, সবারই মূল লক্ষ্য থাকত বিশ্রাম নেয়া ও পরের দিনের শুটিংয়ের প্রস্তুতি নেয়া। শাকিব খান এবং আমরা যতক্ষণ একসাথে শুটিং করেছি কখনো আপত্তিকর কিছু চোখে পড়েনি। এছাড়া কাজের বাইরে কারও ব্যক্তিগত বিষয়ে আমি কখনো আগ্রহ দেখাইনি। আমি যে কয়বার অস্ট্রেলিয়া থেকে বাংলাদেশে ব্যক্তিগতভাবে শুধুমাত্র এই মুভির জন্য গিয়েছি তার খরচ, এই মুভিতে আমার পারিশ্রমিকের থেকে বেশি। এই মুভিতে কাহিনীকার ও পরিচালক হিসেবে আমি যে সময় ও শ্রম দিয়েছি তা টাকার অংকে মূল্যায়ন করা সম্ভব নয়।’

Advertisement

‘অপারেশন অগ্নিপথ’ দুই দেশে শুটিংয়ের কারণ জানিয়ে এ নির্মাতা লেখেন, ‘আমরা অনিন্দ্য সুন্দর একটি দেশকে বাংলাদেশের সিনেমার পর্দায় উপস্থিত করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু কিছু স্বার্থান্নেষী ও ঈর্ষা কাতর মানুষের কারণে অসাধারণ একটি গল্প পর্দায় আনতে পারিনি। এই মুভিটি পর্দায় আসলে বাংলা ভাষায় দর্শকরা অসাধারণ একটি স্পাই থ্রিলার উপভোগ করতে পারত। আমরা সবাই এখনও চাই এই মুভির কাজ শেষ করতে। সময় বলে দেবে, এই চাওয়াটা কতটুকু পাওয়া সম্ভব। তবে মাত্র ৮ দিনের শুটিং আর দুই মিনিটের টিজারে যে ঘটনার জন্ম দিয়েছে, আমার মনে হয় না, বিগত কয়েক বছরে কোনো চলচ্চিত্র এতোটা আলোচনা ও সমালোচনার  জন্ম দিয়েছে। ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ মুভিটি সত্যিকারের অগ্নিপথ পাড়ি দিয়ে একদিন সোনালি পর্দায় মুক্তি পাবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।’