পতিত জমিতে সূর্যমুখীর হাসি, কৃষি অর্থনীতির বিপুল সম্ভাবনা (ভিডিও)

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),খুলনা প্রতিনিধি,বৃহস্পতিবার, ১৬ মার্চ ২০২৩ : খুলনার বিভিন্ন এলাকায় পতিত জমি এখন পরিণত হয়েছে কৃষি অথনীতির বিপুল সম্ভবনায়। মহনগরীর নূরনগর এলাকায় এক সময়ের ফাঁকা প্রায় দুই একর পতিত জমিতে স্থানীয় কৃষকরা গড়ে তুলেছেন তেল ফসল সূর্যমুখীর বিশাল ক্ষেত। ফলে মাঠ জুড়ে এখন দেখা যায় সূর্যমুখীর হাসি।

Advertisement

সরেজমিনে দেখা যায়, মহনগরীর নূরনগর নয়, খুলনার বন্ধ থাকা বিভিন্ন পাটকলের বড় মাঠ, সরকারি অফিসের সামনের ফাঁকা মাঠ, রাস্তার পাশ আর স্কুল-কলেজের চত্বরসহ বিভিন্ন প‌তিত জ‌মি ভ‌রে ওঠেছে ফুল আর ফস‌লে। এর মধ্যে রয়েছে গম, আলু, পেঁয়াজ, বেগুন, ঢ্যাঁড়শ, কাঁচা মরিচ ও টমেটোসহ নানা সবজি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে প্রতি ইঞ্চি জমির ব্যবহার নিশ্চিত করতে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উদ্যোগে এসব পতিত জমিতে উৎপাদন করা হচ্ছে বিভিন্ন ফসল।


শিল্প প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক, সরকারি দফতরের কর্মচারী আর শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের হাত ধরেই গড়ে উঠছে কৃষি অর্থনীতির নতুন সম্ভাবনা। এসব প্রতিষ্ঠান নিজেদের চাহিদা মিটিয়েও লাভবান হচ্ছে বিক্রি করে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, জেলার নয়টি উপজেলাসহ শহরে ১০ হাজার ৯৭৫ হেক্টর অনাবাদি পতিত জমির মধ্যে এক হাজার ৪৩০ হেক্টর পতিত জমি চাষের আওতায় আনা হয়েছে। পতিত জমিতে ফসল উৎপাদনে বাড়তি আয়ে খুশি শ্রমিক, কৃষকরা।
নূরনগর এলাকার কৃষক শাহজাহান মিয়া বলেন, ‘বছরের পর বছর পতিত এ জায়গাটা আমরা ফাঁকা দেখেছি। গতবছর কৃষি অফিসের কর্মকর্তারা আমাদের এ জায়গায় সূর্যমুখী ফসল উৎপাদনের জন্য বীজ ও সার সরবরাহ করেন; আমাদের ট্রেনিং দেন। এখন তো দেখতেই পাচ্ছেন ফুলে-ফসলে ভরে গেছে এ ক্ষেত। আশা করি, আমরা এখানে চাষ করে সফল হবো ‘
Advertisement

খুলনা ক্রিসেন্ট জুট মিলে কর্মরত এক শ্রমিক জানান, ‘আমাদের এ মাঠটা একদম ফাঁকাই থাকতো। কৃষি অফিস থেকে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। আমরা কাজের ফাঁকে ফাঁকে মাঠকে চাষের উপযুক্ত করি। এখন এখানে বেগুন, টমেটো, কাঁচা মরিচ, গম, আলু ও পেঁয়াজ চাষ করছি। যে ফসল হয়, তা আমরা নিজেদের জন্য স্বল্পমূল্যে ক্রয় করি; বাকিটা বাজারে বিক্রি করে লাভবান হচ্ছি।’

এ ধরনের উদ্যোগকে আরও জোরদার করতে হবে জানিয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রো-টেকনলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. ইয়াসিন আলী বলেন, ‘পতিত জমিতে ফসল উৎপাদন আমাদের কৃষি অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখছে। খাদ্য সংকট এড়াতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাকে আরও কার্যকর করতে হবে।’
তিনি বলেন, এজন্য নীতিমালা করতে হবে। সরকারি সহায়তা বাড়াতে হবে। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাকে যুক্ত করতে হবে। সামাজিক সচেতনতা বাড়াতে হবে। এসব করা গেলে আরও অনেক বেশি পতিত জমি চাষের আওতায় আনা যাবে।
Advertisement

লবণাক্ত এলাকার পতিত জমিতে ফসল উৎপাদনে চ্যালেঞ্জের কথা জানিয়ে বাকি জমিতেও আবাদের উদ্যোগের কথা জানান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের খুলনার অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য) মো. মোছাদ্দেক হোসেন।

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে আমরা দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছি। তবে কিছু এলাকা লবণাক্ত হওয়ায় সেখানে চাষাবাদ চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি, যাতে খুলনার সব পতিত জমি চাষের আওতায় আসে।’
Advertisement

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের হিসাব অনুযায়ী, খুলনা মহানগরীসহ জেলার ১০৯টি প্রতিষ্ঠানের পতিত জমিতে চাষাবাদ হচ্ছে।