ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),সাতক্ষীরায় তালা প্রতিনিধি, মঙ্গলবার, ১৪ মার্চ ২০২৩ : সাতক্ষীরায় তালায় ব্যাংক এশিয়ার এজেন্ট ব্যাংকিং শাখায় উদ্যোক্তা আতাউর রহমান এলিট ও তালা পোস্ট অফিসের পোস্ট মাস্টার সুদীন কুমার বৈদ্যের বিরুদ্ধে পরস্পরের যোগসাজশে গ্রাহকদের প্রায় ৫০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
Advertisement
এ ঘটনার পর এজেন্ট ব্যাংকটির উদ্যোক্তা আতাউর রহমান এলিট পালিয়ে গেছে এবং পোস্ট মাস্টার সুদীন কুমার বৈদ্য কৌশলে বদলী হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
Advertisement
ব্যাংক এশিয়ার বিজনেস অফিসার শারাফাত হোসেন বলেন, প্রায় ৫০ লাখ টাকা নানা ভাবে ব্যাংক থেকে খোয়া গেছে বলে আমরা প্রাথমিক ভাবে বুঝতে পেরেছি। গ্রাহকের টাকা ফেরত দেয়ার জন্য আমরা চেষ্টা করছি।
তিনি আরও জানান, এ বিষয়ে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের পরিবারের সঙ্গে আলাপ আলোচনা চলছে। তারা ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিয়েছে। ক্ষতিপূরণ না হলে আইনগত বিষয়টি কি করা যাবে তা ঊর্ধ্বতনের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। তবে যদি ক্ষতিপূরণ না পাওয়া যায় তাহলে দ্রুতই আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
তালার ঘোনা নারায়ণ পুরের কাশেম খাঁর স্ত্রী আসমা বেগম জানান, তিন বছর আগে তিন লাখ টাকা পোস্ট অফিসে রেখেছিলাম ফিক্সড ডিপোজিট করে। মেয়াদ শেষ হওয়ার পর পুনরায় আরও তিন বছরের জন্য চার লাখ টাকা আমাদের দুই ভাইবোনের নামে রাখার জন্য পোস্ট মাস্টারকে বলি।
এ সময় তিনি বলেন, ব্যাংক এশিয়াতে ইজি ফরম জমা দিয়ে টাকা জমা দিয়ে আসেন। ৮ ফেব্রুয়ারি আমার ভাই সোহাগের নামে দুই লাখ টাকা এবং আমার নামে দুই লাখ টাকা জমা দিয়ে পোস্টমাস্টারকে রিসিভ কপি দেখায়।
Advertisement
তখন তিনি জানান, দুদিন পরে বই নিয়ে যাবেন। দুদিন পরে গেলে বলে যে, বই এখনও আসেনি আরও এক সপ্তাহ সময় লাগবে। এভাবে আমাদের ঘোরাতে থাকে। পরে শুনি সে নাকি বদলী হয়ে গেছে।
একই ধরণের কথা বলেন, চর গ্রামের মৃত আলাউদ্দিন শেখের মেয়ে ফারজানা খাতুন ও তার মা আলেয়া বেগম। তাদের থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি একই ভাবে ভুয়া ভাউসারের মাধ্যমে নয় লাখ টাকা আত্মসাৎ হয়েছে বলে জানান।
একই ভাবে টাকা জমা রাখতে গিয়ে প্রতারিত হয়েছেন শাহাপুর গ্রামের সুফিয়া বেগম, হরিশচন্দ্র কাটি গ্রামের মান্নান গাজীর স্ত্রী কামেলা বেগম, হাজরা কাটি গ্রামের নিমাই কুমার শীল।
জানা গেছে, ২০১৪ সালে আতাউর রহমান এলিট তালা পোস্ট অফিসের উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ শুরু করেন, পরে ২০২০ সালে ব্যাংক এশিয়ার এজেন্ট হিসেবে আর্থিক লেনদেন শুরু করে।
এ বিষয়ে আতাউর রহমান এলিটের ফোন বন্ধ থাকায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
তালা পোস্ট অফিসের সাবেক পোস্ট মাস্টার সুদীন কুমার বৈদ্য বলেন, টাকা আত্মসাৎ এর এসব বিষয় ফাও কথা। আমার কাছে গ্রাহকরা আসলে আমি অনলাইন ফরম পূরণের জন্য এলিটের কাছে পাঠাতাম। ওখানে লেনদেন করলে সেটা তাদের ব্যাপার। পোস্ট অফিসের সঙ্গে সরাসরি ব্যাংক এশিয়ার কোন সম্পৃক্ততা নেই।
তালা পোস্ট অফিসের পোস্ট মাস্টার মধুসূদন বলেন, আমি সদ্য যোগদান করেছি। গ্রাহকদের টাকা আত্মসাৎ এর ব্যাপারে অনেকে অভিযোগ নিয়ে আসছে, কিন্তু কত টাকা আত্মসাৎ হয়েছে এ বিষয়ে আমার কাছে কোন তথ্য নেই।
তালা থানার ওসি (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ বলেন, ব্যাংক এশিয়ায় টাকা মিসিং হয়েছে এমনটা শুনেছি। শোনা কথা মাত্র। লিখিত বা মৌখিক কোন অভিযোগ থানায় কেউ দিয়ে যায়নি।