নগর উন্নয়ন কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত দুই মাসের মধ্যে ঢাকার ৪২ ভবন ভাঙতে হবে

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি, রোববার, ১২ মার্চ ২০২৩ : ঢাকার অতি ঝুঁকিপূর্ণ ৪২ ভবন দুই মাসের মধ্যে ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)।

Advertisement

রোববার (১২ মার্চ) এক সপ্তাহের মধ্যে এসব ভবন খালি করতে নির্দেশনা দিয়ে ভবন মালিক বা কর্তৃপক্ষকে চিঠি পাঠাচ্ছে সংস্থাটি।

প্রথমে এসব ভবনের মালিকদের নিজ উদ্যোগে ভেঙে ফেলতে দুই মাস সময় বেঁধে দেওয়া হবে। তা না হলে, রাজউক ভবন গুঁড়িয়ে দিয়ে মালিকপক্ষের কাছ থেকে খরচ আদায় করবে।

Advertisement

শনিবার (১১ মার্চ) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত নগর উন্নয়ন কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন নগর উন্নয়ন কমিটির আহ্বায়ক এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন।

রাজউক সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে আরও ১৮৭ ভবন মালিককেও নোটিশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ওই সব ভবনও ঝুঁকির তালিকায় আছে। তবে সেগুলো রেট্রোফিটিং করে ব্যবহার করতে সংশ্লিষ্ট ভবন মালিক বা কর্তৃপক্ষকে নোটিশ দেওয়া হবে। তারা যদি রেট্রোফিটিং করে ব্যবহার করতে চায় তাহলে করবে, অন্যথায় সেগুলোও একই প্রক্রিয়ায় ভেঙে ফেলা হবে।

Advertisement

রাজধানীতে একের পর দুর্ঘটনা নিয়ে জনসচেতনতা বাড়াতে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে রাজউক। যাতে মানুষ ভবন ব্যবহার ও নকশার বিষয়ে সচেতন থাকেন। পাশাপাশি নকশার ব্যত্যয় থাকলে সেটা যেন নিজ উদ্যোগে ভবন মালিকরা ঠিক করে নেন। পাশাপাশি বর্তমানে চলমান বেজমেন্টের অবস্থা-সংক্রান্ত জরিপের কাজ শেষ হলে ওই সব ভবন মালিককেও নোটিশ দেওয়া হবে। তারা যেন বেজমেন্টের ব্যবহারবিধি যেন মেনে চলেন। অন্যথায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে মালিকদের দণ্ড দেওয়ার কার্যক্রম শুরু করবে রাজউক।

এ বৈঠকে মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে রাজধানীতে উন্মুক্ত স্থান বাড়ানোর প্রস্তাব এসেছে। অনেক সময় দুর্ঘটনা ঘটলে অগ্নিনির্বাপণে পানি পাওয়া যায় না। রাজধানীতে জলাশয় কমেছে। প্রয়োজনে ভরাট হওয়া জলাশয় রাজউক অধিগ্রহণ করে জলাধারগুলো রক্ষা করবে। এজন্য ল্যান্ড সার্ভে করে একটি প্রকল্প নিতে পারে রাজউক।

Advertisement

বৈঠক শেষে গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন বলেন, অতি ঝুঁকিপূর্ণ ৪২ ভবন এক সপ্তাহের মধ্যে খালি করতে মালিকদের বলা হবে। তাদের নিজ উদ্যোগে দুই মাসের মধ্যে সেসব ভবন ভাঙতে হবে। এর বাইরে বাকি যে ভবনগুলো ব্যবহারের সুযোগ আছে, সেগুলোকে রেট্রোফিটিং করতে বলা হবে।

রাজউক চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিঞা বলেন, আমরা এখনই সব ভবন নিয়ে শক্ত অবস্থানে যাব না। কারণ, রাজধানীর ঝুঁকিপূর্ণ সব ভবন আমরা এখনও চিহ্নিত করতে পারিনি। আপাতত নগরী নিরাপদ করার জন্য সচেতনতা বাড়ানোর কাজ শুরু করব। গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। দুর্ঘটনা রোধে যে কমিটিগুলো গঠন করা হবে, তাদের মাধ্যমে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর তালিকা পাওয়া গেলে পর্যায়ক্রমে নোটিশ ইস্যু করা হবে। আরবান রেজিলিয়েন্স প্রকল্পের (ইউআরপি) আওতায় চালানো জরিপে যে ভবনগুলো পাওয়া গেছে, আপাতত সেগুলোকেই নোটিশ দেওয়া হবে।

রাজউক বোর্ডের সদস্য (উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ) তন্ময় দাস গণমাধ্যমকে বলেন, ইউআরপির তালিকায় থাকা অতি ঝুঁকিপূর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর তালিকা আপাতত প্রকাশ না করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কারণ, এতে আবার মানুষের মধ্যে ভীতি সৃষ্টি হতে পারে।

বৈঠকে রাজউকের শীর্ষ কর্মকর্তারা ছাড়াও ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সাবেক মহাপরিচালক আলী আহমদ, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মেহেদী আহমেদ আনসারী, গণপূর্তের প্রধান প্রকৌশলী শামিম আখতার, সিটি করপোরেশনের প্রতিনিধি, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রতিনিধি, স্থাপত্য অধিদপ্তরের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন সংস্থা ও পূর্ত মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।