মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতে ইসলামীর একের পর এক শীর্ষ নেতার দণ্ডের আদেশ হওয়ায় কার্যত দিশেহারা দলটি। জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর মৃত্যুদাণ্ডের রায়ের পর হরতাল দিতে গিয়ে তারিখে বিভ্রাট ঘটিয়েছে দলটি।
৬ জানুয়ারির তারিখে বিবৃতি দিয়ে তারা হরতাল ডেকেছে এক মাস আগের তারিখে। অবশ্য পরে নিজেদের ওয়েবসাইটে সেই তারিখ সংশোধন করে নিয়েছে জামায়াতে ইসলামী।
বুধবার সকালে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন- বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
রায়ের ঘণ্টাখানেক পর হরতালের বার্তা দিয়ে জামায়াতের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠানো হয়। জামায়াতের ওয়েবসাইটেও একই বার্তা পাওয়া যায়। এতে বলা হয়- ‘সরকার পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির, সাবেক মন্ত্রী, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ইসলামী চিন্তাবিদ ও ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শীর্ষ নেতা মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীকে হত্যার উদ্দেশ্যে তথাকথিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মিথ্যা মামলা দায়ের করে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে এবং আগামীকাল ৭ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা শান্তিপূর্ণ হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর জনাব মকবুল আহমাদ ও ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান আজ ৬ জানুয়ারি নিম্নোক্ত যুক্ত বিবৃতি প্রদান করেছেন।’
বেশ কিছু সময় পর ওই বার্তায় হরতালের তারিখ সংশোধন করে ‘আগামীকাল ৭ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার’ এর জায়গায় ‘আগামীকাল ৭ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার’ লিখে আবারও বিবৃতি পাঠায় জামায়াত।
একাত্তরে মানবতাবিরোধীর দায়ে নিজামীর আগে যে পাঁচ মামলার রায় সর্বোচ্চ আদালত থেকে এসেছে, তার মধ্যে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লা ও মুহাম্মদ কামারুজ্জামান এবং সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের মৃতুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।
এছাড়া জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আপিল শুনানি চলার মধ্যেই মারা গেছেন মুক্তিযুদ্ধকালীন জামায়াত আমির গোলাম আযম, যিনি ছিলেন একাত্তরের মানবতাবিরোধীর হোতা।
প্রতিটি রায়ের পরই জামায়াতে ইসলামী হরতাল ডেকেছে। এই কর্মসূচিতে গত দুই বছরে বিভিন্নস্থানে ব্যাপক নাশকতাও ঘটিয়েছে দলটির নেতা-কর্মীরা।