(কাজী ফাইজা মেহজাবিন)
ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),কুমিল্লা প্রতিনিধি,মঙ্গলবার, ০৭ মার্চ ২০২৩ : কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শেখ হাসিনা হলে সিট বরাদ্দ নিয়ে হল প্রশাসনের সাথে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে হল ছাত্রলীগের সভাপতি কাজী ফাইজা মাহজাবিনের বিরুদ্ধে। এসময় তিনি প্রাধ্যক্ষ মো. সাহেদুর রহমানকে শাসিয়েছেন বলেও অভিযোগ করে হল প্রশাসন। শনিবার (৪ মার্চ) সন্ধ্যায় হল প্রাধ্যক্ষের কক্ষে এ ঘটনা ঘটেছে। তবে ফাইজা মাহজাবিনের দাবি, পূর্ব ক্ষোভ থেকে প্রাধ্যক্ষ তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেছেন।
Advertisement
জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার তৃতীয় দফায় শেখ হাসিনা হলের সিট বরাদ্দ দেয়া হয়। তালিকা অনুসারে যাকে যে কক্ষে সিট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে তাকে সেখানে উঠতে বলা হয়। তবে হল প্রশাসন কর্তৃক বরাদ্দকৃত এক শিক্ষার্থীর সিটে অন্য শিক্ষার্থীকে তুলেন ফাইজা। তালিকায় আইসিটি বিভাগের শিক্ষার্থী প্রেয়সী সানাকে ২১৬ নম্বর কক্ষের ডব্লিউ-২ নম্বর আসন বরাদ্দ দেয়া হয়। প্রেয়সী শনিবার ওই কক্ষে উঠতে গিয়ে দেখেন, সেখানে রায়হানা আনজুম নামের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থী আছেন। তবে রায়হানাকে আসন বরাদ্দ দেয়া হয় ৩০৬ নম্বর কক্ষে। বিষয়টি প্রেয়সী হল প্রাধ্যক্ষকে জানান। সমাধানের জন্য সন্ধ্যায় প্রাধ্যক্ষ দুজনকে তাঁর কক্ষে ডাকেন। সেখানে লোকপ্রশাসন বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী ও হল ছাত্রলীগের সভাপতি কাজী ফাইজা মাহজাবিনের সাথে প্রাধ্যক্ষের বাগবিতণ্ডা হয়।
Advertisement
প্রাধ্যক্ষ মো. সাহেদুর রহমান জানান, “শুরু থেকেই আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে সিট বরাদ্দ দেয়ার চেষ্টা করছি। প্রেয়সী বিষয়টি জানালে আমি রায়হানার কাছে জানতে চাই, সিট বরাদ্দ দেয়ার আগেই আপনি ওই রুমে (২০৬) উঠলেন কীভাবে?” তখন ফাইজা বলেন ‘স্যার আমি ওকে উঠিয়েছি।’ তখন ফাইজাকে বলি, আপনি তাকে এভাবে উঠাতে পারেন না। জবাবে ফাইজা বলেন, ‘আমি এভাবেই উঠাবো। আমি এ হলের দায়িত্বপ্রাপ্ত। আমি যাকে যেখানে দিয়েছি সে সেখানেই থাকবে।’
Advertisement
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করে কাজী ফাইজা মাহজাবিন বলেন, ‘স্যারের সাথে আমার বিতর্ক হয়েছে মাত্র। বেয়াদবি হওয়ার মতো কিছু হয়নি। আমার ওপর ওনার পূর্ব ক্ষোভ থাকায় বিষয়টিকে অতিরঞ্জন করা হচ্ছে।’ বিষয়টিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করা হচ্ছে দাবি করে তিনি বলেন, হল প্রভোস্ট প্রায় সময়ই হুটহাট আমার রুমে ঢুকে যান। মেয়েদের রুমে ঢুকে তাঁদের লকার চেক করেন। এ বিষয়ে ওনাকে বেশ কয়েকবার বলায় তিনি আমার ওপর ক্ষেপে আছেন। সেই পুরনো ক্ষোভের কারণেই বিষয়টিকে এখন ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ মো. সাহেদুর রহমান বলেন, আমি কোনো রুমে ঢুকতে চাইলে আগে থেকেই জানিয়ে রাখি। বিভিন্ন রুমের নষ্ট লকার ঠিক করতে দেওয়া হয়েছিল, সেগুলো ঠিক করা হয়েছে কি না- তা চেক করতে রুমে গিয়েছি।
অন্যদিকে আপনি কাউকে সিট দিতে পারেন কিনা-এমন প্রশ্নে ফাইজা বলেন, ‘ওই সিটটি প্রায় আট মাস খালি ছিল। এর আগেও অনেক মেয়ে সিট চেঞ্জ করেছে। এই ফ্লোরে সব সিনিয়ররা থাকায় আনজুমকেও এখানে আসতে বলি। প্রশাসন সেখানে অন্য কাউকে বরাদ্দ দেওয়ার বিষয়ে আগে থেকে আমি কিছু জানতাম না। আমি স্যারের কাছে আনজুমকে সেখানে থাকতে দেওয়ার অনুরোধ করেছি মাত্র। আমার বিরুদ্ধে হলের ফি না দেওয়ারও অভিযোগ আনা হয়েছে, অথচ আমি ফি দিয়েই হলে থাকছি।’
Advertisement
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ বলেন, ‘তাকে (ফাইজা মেহজাবিন) দায়িত্ব দিয়েছি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে সাধারণ মেয়েদের সমস্যা সমাধান করার জন্য। সে যদি ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে অন্যায় কিছু করে থাকে, আমরা সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব। তবে ছাত্রলীগের হল ইউনিটের সভাপতি হিসেবে সে কোনো শিক্ষার্থীকে সিটে উঠাতেই পারে।’