আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বান্দার ভাগ্যে নির্ধারিত করে রেখেছেন তা বাস্তবায়ন হবেই হবে। এটাই আল্লাহর বিধান। যার মৃত্যু যখন যেখানে, আল্লাহ তাআলা তাকে সেখানে পৌছাবেন। যা ঘটেছিল হজরত সুলাইমান আলাইহিস সালামের এক মন্ত্রীর ক্ষেত্রে। এখানে যা তুলে ধরা হলো-
হজরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম নিজের এক মন্ত্রীর সঙ্গে কথাবার্তা বলছিলেন। এমন সময় খুব সুন্দর চেহারা ও দামি পোশাক পরিহিত এক ব্যক্তি সুলাইমান আলাইহিস সালামের মজলিশে প্রবেশ করল এবং কিছুক্ষণ বসার পর চলে গেল। তার যাওয়ার পর মন্ত্রী সুলাইমান আলাইসি সালামকে জিজ্ঞাস করলেন, হে আল্লাহর নবি! এ মাত্র আপনার নিকট যে লোকটি এসেছিলে, সে কে?
হজরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম বললেন, আমার নিকট যে ব্যক্তি বসেছিল, সে ‘মালাকুল মাউত’ মৃত্যুর ফেরেশতা।
মন্ত্রী এ কথা শুনে তাঁর চেহারা ফ্যাকাশে হয়ে যায় এবং শরীর কাঁপতে থাকে। আর বলতে থাকে, হজরত! অনুগ্রহ করে বাতাসকে হুকুম দেন, সে যেন আমাকে হিন্দুস্তানে (সেখান থেকে অনেক দূর) পৌঁছে দেয়। কারণ আমার জন্য অসম্ভব যে আমি ঐ জায়গায় বসি যেখানে মৃত্যুর ফেরেশতা বসেছে।
হজরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম মন্ত্রীর দরখাস্ত মঞ্জুর করে বাতাসকে নির্দেশ দেন, তাঁকে হিন্দুস্তান পৌঁছে দেয়ার জন্য। বাতাস তাই করল।
কিছুক্ষণ অতিবাহিত হওয়ার পুনরায় মৃত্যুর ফেরেশতা সুলায়মান আলাইহিস সালামের নিকট উপস্থি হলো এবং বলল আপনার মন্ত্রী কোথায়?
উত্তরে জানানো হলো- আপনার ভয়ের কারণে বাতাস তাঁকে হিন্দুস্তান পৌছে দিয়েছে।
মৃত্যুর ফেরেশতা বলল, কিছুক্ষণ পূর্বে যখন আপনার মজলিসে এসেছিলাম, তখন ঐ মন্ত্রীকে দেখে আশ্চর্য হয়েছিলাম। কেননা আমাকে আল্লাহ তাআলা আদেশ দিয়েছিলেন যে, হিন্দুস্তান থেকে তার জান (রুহ) কবজ করার জন্য। কিন্তু সেই ব্যক্তি হাজার মাইল দূরে আপনার নিকট বসে আছে?
সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ আল্লাহর কি অপার খেলা, (ভাগ্যের লিখন) সময় এবং জায়গা পরিবর্তন হয় না। মৃত্যুর ফেরেশতা আরো বলে, আমি নির্দিষ্ট সময়ে হিন্দুস্তান পৌঁছি তখন আপনার মন্ত্রী হিন্দুস্তানে উপস্থিত ছিল এবং তার জান কবজ করে আবার আপনার নিকট আসলাম।
সুতরাং আমাদের এ বিশ্বাস রাখতে হবে যে, যার যখন মৃত্যু আসবে, সে যে অবস্থাই থাকুক না কেন, তাকে এক কদম সামনে যেতে দেয়া হবে না পিছনেও যেতে দেয়া হবে না। আসুন মৃত্যুর পূর্বেই খাঁটি তাওবা করে সঠিক পথে চলি। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সঠিক পথে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন।