দেশসেরা কলেজে টর্চার সেল ছাত্রলীগ নৈরাজ্যে আতঙ্কিত শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষ লাঞ্ছিত

SHARE

(ছাত্রলীগ নৈরাজ্যে আতঙ্কিত শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষ লাঞ্ছিত)

দেশসেরা কলেজ হিসেবে হ্যাটট্রিক করা রাজশাহী কলেজ ছাত্রাবাসে টর্চার সেল গড়ে তুলেছে ছাত্রলীগ। গত বুধবার রাতে সেখানে প্রায় ৪০ জন শিক্ষার্থীকে আটকে রেখে মারধর করেন সংগঠনটির নেতারা। ঘটনা শুনে খোঁজখবর নিতে গিয়ে লাঞ্ছিত হন কলেজের অধ্যক্ষ। এসব ঘটনায় চরম আতঙ্কিত সাধারণ শিক্ষার্থীরা। যদিও গতকাল দুপুরে এসব ঘটনায় ক্ষমা চেয়েছেন কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি। তবে তাদের নৈরাজ্যের ব্যাপারে বেরিয়ে আসছে নানা তথ্য। কলেজের ‘ই’ এবং ‘বি’ ব্লকে রয়েছে পৃথক টর্চার সেল। কলেজ শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি রাশিক দত্ত এ সেলের নিয়ন্ত্রক। যেকোনো মিছিল-মিটিংয়ে জোরপূর্বক নিয়ে যাওয়া হয় শিক্ষার্থীদের। কেউ যেতে আপত্তি করলে রাতে তাকে এ সেলে নিয়ে শুরু হয় নির্যাতন।

Advertisement

বুধবার রাতে কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি রাশিক দত্তের অনুসারীদের হাতে নির্যাতনের শিকার হন কলেজের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নাজমুস সাকিব।

তিনি বলেন, ‘আমি হাসাপাতালে যাওয়ার কারণে ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে উপস্থিত হতে পারিনি। সন্ধ্যায় ছাত্রলীগের শাহরুখ, রাজু, রাফি, হাসানসহ ৮-১০ জন আমার রুমে ঢুকে আমাকে মারধর করতে থাকে। এ সময় কেড়ে নেয় মোবাইল ফোনসহ বেশকিছু দামি জিনিসপত্র। একপর্যায়ে ধাক্কা দিয়ে গণরুমে নিয়ে যায় তারা।’ শরিফুল ইসলাম নামে মারধরের শিকার আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘হঠাৎ রুমে ঢুকে আমাকে পেটাতে শুরু করে ছাত্রলীগের ছেলেরা। ৪০ জন শিক্ষার্থীকে আটকে রাখে তারা।’ অভিযোগ রয়েছে, টর্চার সেলে নিয়মিত মাদকের আসর বসে ছাত্রলীগের।

Advertisement

ছাত্রাবাসে সিট বাণিজ্য করে ইতিমধ্যে বিপুল সম্পদ গড়েছেন কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি। কলেজ সংলগ্ন এলাকায় তিনি কিশোর গ্যাংয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় রয়েছেন বলেও অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। গতকাল দুপুরে কলেজ প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনায় বসে অভিযুক্তদের কলেজ ও ছাত্রসংগঠন থেকে স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি জানায় কলেজ ক্যাম্পাসের সাংবাদিক সংগঠন রাজশাহী কলেজ রিপোর্টার্স ইউনিটি (আরসিআরইউ)। এ বিষয়ে রাজশাহী কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আব্দুল খালেক বলেন, রাজশাহী কলেজের অব্যাহত সুনামকে ভূলুণ্ঠিত করতে কিছু ছাত্রলীগ নামধারী ছাত্রাবাসে যে নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে, তা সমাধানে কলেজ প্রশাসন আন্তরিক। উদ্ভূত ঘটনায় ছাত্রলীগ ক্ষমা চেয়েছে। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত রাজশাহী কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি রাশিক দত্ত বলেন, ভবিষ্যতে আর এ ধরনের ঘটনা ঘটবে না।

Advertisement

আর রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি নূর মোহাম্মদ সিয়াম বলেন, এ ঘটনা শুনে আমিও বিব্রত। তাদের সঙ্গে কথা বলে দেখি, কী করা যায়।’ এর আগে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে আরসিআরইউ কার্যালয়ে হামলা চালায় রাশিক দত্তের অনুসারীরা। প্রায় দেড় বছর নেতৃত্বহীন থাকার পর গত বছরের ৬ই সেপ্টেম্বর কলেজ ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আসেন রাশিক দত্ত ও আশরাফুল ইসলাম জাফর। পদ পেয়েই বেপরোয়া আচরণে সমালোচিত হন রাশিক। সম্প্রতি কলেজ হোস্টেলে তার মাদক সেবনের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়।