ইবিতে ছাত্রী নির্যাতন অভিযুক্তরা হাত-পা ধরে ক্ষমা চেয়েছেন, দাবি ভুক্তভোগীর (ভিডিও)

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ইসলামী বিশ্ববিদ্যাল প্রতিনিধি, বুধবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নির্দেশিত তদন্ত কমিটির ডাকে মুখোমুখি হন ভুক্তভোগী ছাত্রী ও অভিযুক্তরা।

Advertisement

বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩টায় তদন্ত কমিটির আহ্বায়কের কক্ষে ভুক্তভোগীসহ ৫ অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। প্রায় এক ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর বিকেল ৪টায় তারা কক্ষ ত্যাগ করেন। পরে প্রক্টরিয়াল বডির গাড়িতে পৃথকভাবে তাদের নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়।

জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ভুক্তভোগী গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বললেও কোনো প্রশ্নের জবাব দেননি অভিযুক্তরা।

ভুক্তভোগী ছাত্রী বলেন, আমি অভিযুক্তদের চিনিয়ে দিয়েছি। তারা আমার হাতে পায়ে ধরে ক্ষমা চেয়েছে। আমি বলেছি আমি এ বিষয়ে কিছু বলতে চাই না। প্রশাসন যা ব্যবস্থা নিবে তাই হবে। তাদের কান্না কান্না ভাব ছিল। আপনি তাদের দেখে ভয় পেয়েছিলেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কোনো ভয় পায়নি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত শাখা ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরী অন্তরাকে একাধিক প্রশ্ন করা হলেও তিনি মুখ খুলেননি। অভিযুক্ত তাবাসসুম বলেন, আমি যা বলার তদন্ত কমিটিকে বলে দিয়েছি। আর কিছু বলতে চাচ্ছি না।

এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. রেবা মণ্ডল গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি।

Advertisement

এর আগে, দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শামসুল আলমের ডাকে বাবার সঙ্গে ক্যাম্পাসে আসেন ভুক্তভোগী ছাত্রী। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক. ড শফিকুল ইসলাম ও জয়শ্রী সেন তাকে ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক থেকে ভুক্তভোগীকে হলে নিয়ে যান।

এ সময় ভুক্তভোগী ছাত্রী গণমাধ্যমকে বলেন, তদন্ত কমিটি তদন্ত করছে। আশা করি সুষ্ঠু বিচার হবে।

এদিকে, দুপুর পৌনে ১২টার দিকে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন হাইকোর্টের নির্দেশনায় গঠিত তদন্ত কমিটি। এ সময় তারা প্রক্টর অফিসে প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদাত হোসেন আজাদের সঙ্গে সাক্ষাত করেন।

সাক্ষাত শেষে দুপুর ১টার দিকে তারা সেই হলে যান। সেখানে হল কমিটি ও হাইকোর্টের নির্দশনায় গটিত তদন্ত কমিটি ভুক্তভোগীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিকাল পৌনে ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নির্দেশিত তদন্ত কমিটির ডাকে তদন্ত কমিটির আহ্বায়কের কক্ষে যান।

Advertisement

ভুক্তভোগীর বাবা বলেন, সেদিনের ঘটনার পর আজকেসহ চারবার আসলাম। প্রতিবার আসতে ও যেতে প্রায় চার ঘন্টা করে আট ঘন্টা সময় লাগে। এছাড়াও প্রতিবার ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা খরচ হয় যা আমার জন্য কষ্টকর। আমি তো আর প্রশাসনকে বলতে পারি না যে এখানে থাকবো। যদি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা দিয়ে থাকার ব্যবস্থা করে তাহলে ভালো হয়।

সহকারী প্রক্টর সাজ্জাদুর রহমান টিটু বলেন, আমরা ভুক্তভোগীকে নিরাপত্তা দিয়ে আলাউদ্দিন নগর পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছি। পরে তারা নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বাসায় ফিরেছেন।

(ভুক্তভোগী ছাত্রী)

উল্লেখ্য, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে সাড়ে চার ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতন করার অভিযোগ করেন ওই ছাত্রী। ভুক্তভোগী ছাত্রীর ভাষ্য অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরীর নেতৃত্বে তার অনুসারীরা নির্যাতন চালিয়েছেন। নির্যাতনের সময় তাকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ, গালাগাল এবং এ ঘটনা কাউকে জানালে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়েছে। ওই ছাত্রী গত বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর, হলের প্রভোস্ট ও ছাত্র উপদেষ্টার কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেন। যার জন্য আজকে তাকে ডাকা হয়েছে।

(সানজিদা চৌধুরী অন্তরা,তাবাসসুম)