ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি).ঢাকা প্রতিনিধি, সোমবার, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ : আর কিছুক্ষণ পরেই- আমর একুশ। মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার গৌরবময় একটি দিন। বায়ান্নোর এই দিনে মায়ের ভাষা-বাংলা ভাষা রক্ষার জন্য প্রাণ দিয়েছিলেন সালাম-বরকতরা। তাই স্মৃতির সঙ্গে শোকের রক্তঝরা একটি দিন একুশে ফেব্রুয়ারি। একুশের প্রথম প্রহরে জাতি স্মরণ করবে সেই সব ভাষা শহীদদের। ফুলে ফুলে ভরে উঠবে স্মৃতির মিনার।
Advertisement
মহামারী পেরিয়ে মঙ্গলবার শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক ভাষা দিবসে প্রভাতফেরির দিনটি ফিরছে সবার জন্য। দিবসের প্রথম প্রহর থেকে শুরু করে দিনমান শহীদ মিনার মুখরিত থাকবে মানুষের ভিড়ে। কণ্ঠে বাজবে, আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি।
ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে প্রস্তুত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার। ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ঘিরে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। আলপনায় সেজে উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের সব কটি সড়ক। শুধু সড়কই নয় দেয়ালেও ফুটেছে ভাষার তুলি।
Advertisement
দেয়ালে দেয়ালে রঙ-তুলিতে বাঙময় বর্ণমালা। ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ভাষা আন্দোলন থেকে একাত্তরের গৌরবগাথা, সংগ্রামের উত্তালের দিনগুলো। বাঙালি ও বাংলাকে উপজীব্য করে লেখা কবি-মনীষীর নানা পঙক্তি ও উক্তিও শোভা পাচ্ছে সেখানে।
প্রতিবারের মত এবারও সাজ-সজ্জার দায়িত্বটি পড়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীদের ওপর। তাতে যোগ দিয়েছেন সাবেকরাও। লাল ইটের বেদী, ইটের দেয়াল কিংবা পিচঢালা রাস্তা- সবই হয়ে উঠেছে তাদের ক্যানভাস।
শেষ দুই বছর করোনার কারনে ছিলো নানা বিধি-নিষেধ। সশরীরে আসেননি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতিও। এবার একুশের প্রথম প্রহরেই শহীদ বেদীতে রাষ্ট্রীয় শ্রদ্ধা জানাবেন তাঁরা। তাই বিশ্ববিদ্যালয় ঘিরে নেয়া হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। নিয়ন্ত্রিত হয়েছে যান চলাচল।
সোমবার দুপুরে শহীদ মিনার এলাকার নিরাপত্তা আয়োজন দেখতে যান র্যাব প্রধান। জানান এবার কোন নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই। তিনি বলেন, কেবল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারই নয়; দিনটিকে ঘিরে সারা দেশেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
পুরো এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। নিরাপত্তার বিষয়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী গভীরভাবে তদারকি করছেন। শহীদ মিনারের পাশেই ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ছাদে ঘোষণা মঞ্চ তৈরি হয়েছে। আইন অনুষদ প্রাঙ্গণে পুলিশ, র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কন্ট্রোল রুম, ফায়ার সার্ভিস ও প্রাথমিক চিকিৎসা ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে।
Advertisement
রাষ্ট্রীয় আচার অনুযায়ী, ২১ ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহর ১২টা ১ মিনিটে প্রথমে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এবং পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শ্রদ্ধা জানাবেন। এরপর মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, শিক্ষকবৃন্দ, ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দূতাবাসের কর্মকর্তা, রাজনৈতিক দলের নেতা, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন এবং সর্বস্তরের জনগণ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এসে শ্রদ্ধা জানাবেন।
সোমবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি দুপুর ২টা পর্যন্ত জনসাধারণের চলাচল ও যানবাহন নিয়ন্ত্রণের জন্য ট্রাফিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। এছাড়া এদিন সন্ধ্যা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় পাস বা আইডি কার্ড ছাড়া প্রবেশও নিষিদ্ধ থাকছে।
মঙ্গলবার শ্রদ্ধা জানাতে পলাশী মোড় হয়ে সলিমুল্লাহ মুসলিম হল ও জগন্নাথ হলের সামনে দিয়ে শহীদ মিনারে যাবে শহরের সাধারণ মানুষ। শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানোর পর সেখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয় খেলার মাঠের সামনের রাস্তা দিয়ে ফিরতি পথ ধরতে হবে। তারপর দোয়েল চত্বর ও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের রাস্তা দিয়ে চাঁনখার পুল হয়ে কেবল বের হওয়া যাবে।