ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি).আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি, সোমবার, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ : মালয়েশিয়ার ইসলামপন্থি দল পার্টি ইসলাম সে-মালয়েশিয়ার (পিএএস) বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। শুক্রবার এ দলটির যুব শাখার সদস্যরা তেরেঙ্গানুতে ভুয়া তরবারি, বর্শা এবং ঢাল নিয়ে র্যালি করেছেন। এর প্রেক্ষিতে পুলিশ তদন্ত করছে। তেরেঙ্গানু পুলিশ প্রধান রোহাইমি মো. ইসার দেয়া তথ্যমতে, প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে তেরেঙ্গানু এলাকার সেটিউ অবকাশ যাপন এলাকায় শুক্রবার ওই র্যালি করেছে পিএএসের যুব শাখার সদস্যরা। সোমবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ওই কর্মসূচির সময় কোনো অপরাধ সংঘটিত হয়েছিল কিনা তা তদন্ত করে শনাক্ত করবে পুলিশ। এরপর এর বিরুদ্ধে যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন চ্যানেল নিউজ এশিয়া।
Advertisement
ওই পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, যেসব অস্ত্রের রেপ্লিকা বা নমুনা নিয়ে র্যালি করা হয়েছে, সে সম্পর্কে আগেভাগে তাদেরকে অবহিত করা হয়নি। তবে র্যালির বিষয়ে তাদেরকে আগে থেকে জানানো হয়েছিল। রোহাইমি মো. ইসা বলেছেন, র্যালিতে অস্ত্রের রেপ্লিকা ব্যবহারের বিষয় আমরা জানতাম না। এসব রেপ্লিকা ব্যবহারের ফলে অস্বস্তি বেড়েছে।
জনমনে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ। এ নিয়ে যেসব ছবি ও ভিডিও প্রকাশ হয়েছে তাতে পিএএসের সদস্যদেরকে দেখা যায় ইসলামিক পোশাক পরিহিত। তারা তরবারি, বর্শা এবং ঢাল নিয়ে র্যালি করছেন। যা দেখে মনে হচ্ছে, তারা যুদ্ধে নেমেছেন। এসব ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
Advertisement
র্যালি আয়োজন করা হয় পিএএসের যুব শাখার দুই দিনের সম্মেলনকে ঘিরে। এর নাম দেয়া হয়েছে হিমপুনান পেমুদা ইসলাম তেরেঙ্গানু (এইচআইএমপিআইটি) অথবা তেরেঙ্গানু মুসলিম ইয়ুথ গ্যাদারিং। পুলিশ কর্মকর্তা রোহাইমি মো. ইসা বলেন, বিভিন্ন জেলা থেকে ওই দলটির যুব শাখার নেতাকর্মীরা সম্মেলনে সমবেত হয়েছেন। এ সময় তারা পোশাক, অস্ত্রশস্ত্র এবং ইসলামিক ঐতিহ্য প্রদর্শন করে থাকেন। এটা তাদের প্রতিযোগিতার একটি অংশ। ওদিকে সেটিউ পুলিশের কর্মকর্তা আফান্দি হুসিনকে উদ্ধৃত করে দ্য মালয়েশিয়ান ইনসাইট বলেছে, র্যালির বিষয়ে তদন্তে সহায়তা করতে আয়োজকদের তলব করা হয়েছে।
এমন র্যালিকে অনভিপ্রেত বলে আখ্যায়িত করেছেন প্রধানমন্ত্রীর ডিপার্টমেন্ট বিষয়ক মন্ত্রী ড. মোহামেদ নাইম মোখতার। তিনি বলেছেন, এটা ইসলাম এবং মালয়েশিয়ার একটি বাজে ভাবমূর্তি তুলে ধরতে পারে। তিনি আরও বলেন, আয়োজকদের উচিত ইসলামিক মূল্যবোধকে তুলে ধরা, যা শান্তিপূর্ণ, ঐক্য ও সমৃদ্ধির আহ্বান জানায়। তিনি বিবৃতিতে বলেন, সমাজে শান্তি এবং সম্প্রীতি বজায় রাখার দায়িত্ব সব পক্ষের। যে পদক্ষেপ জনমনে অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে বা উস্কানি দেয়, তা বাদ দেয়াই ভাল। তিনি মনে করেন এ বিষয়টি কর্তৃপক্ষ তদন্ত করে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। অবশ্য যদি আয়োজকরা জাতীয় নিরাপত্তার কোনো নিয়ম ভঙ্গ করে থাকেন।
Advertisement
তবে র্যালির পক্ষে কথা বলেছেন তেরেঙ্গানু পিএএস ইয়ুথের প্রধান হারুন ইসা। তিনি একে পোশাকের একরকম ইভেন্ট হিসেবে বর্ণনা করেছেন। বলেছেন, প্রাচীনকালে যুদ্ধের যে পোশাক পরা হতো, এতে তাই ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এটা শুধুই একটি প্যারেড। নিজেদের মধ্যে ঐতিহ্যের এক রকম প্রতিযোগিতা। ১৯৯১ সাল থেকে এমন র্যালি হয়ে আসছে প্রতি বছর। আমরা কর্তৃপক্ষকে তদন্তে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।