ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি,বৃহস্পতিবার, ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ : বাঁশের খুঁটি বাঁধার সাধারণ জিআই তার দিয়ে জোড়া লাগানো ইঞ্জিনের ব্রেক দিয়েই চলছে দূরপাল্লার ট্রেন। এতে ঝুঁকিতে আছেন যাত্রী সাধারণ।
Advertisement
লোহার যে পাত ট্রেনের চাকাকে চেপে রেখে ব্রেক নিয়ন্ত্রণ করে, সেটি ক্ষয় হয়ে সরে গেছে বহুদূর। ফলে ব্রেক ছাড়াই যেন চলছে ট্রেন। ইঞ্জিনের ৪টি চাকারই প্রায় এক দশা!
বিভিন্ন পরিসংখ্যান ও সরেজমিন দেখে জানা যায়, স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ রেলওয়ের ইঞ্জিন ছিল ৪৮৬টি। আর ৫১ বছরে এখন কমে দাঁড়িয়েছে ২৬০টিতে, যার ৭০ শতাংশই আবার মেয়াদোত্তীর্ণ।
এসব সংকট কাটাতে মেরামতের সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি নতুন ইঞ্জিন সংগ্রহের পরামর্শ দিয়েছেন যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ কাজী সাইফুন নেওয়াজ।
সাইফুন নেওয়াজ বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ ইঞ্জিনে বাড়ছে দুর্ঘটনা, কমছে ট্রেনের গতি। আর এ সংকট সমাধানে দ্রুত উদ্যোগ না নিলে হুমকির মুখে পড়বে গোটা রেলব্যবস্থা। তাইতো নিরবচ্ছিন্ন যাতায়াতের জন্য রেলে নতুন লোকোমোটিভ সংযোজন করা দরকার।
তিনি বলেন, চুক্তি হওয়া ৪০টির মধ্যে ইঞ্জিন এসেছে ১৬টি; বাকিটা জুনের মধ্যে পেয়ে যাব। রেলে চরম সংকট ছিল, আছে – সেটা আমরা কাটিয়ে উঠব আশা করি।
যাত্রীদের নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছে দেয়ার দায়িত্বে থাকা ট্রেনের চালকরাই এখন নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত।
কমলাপুরে গিয়ে দেখা গেছে, জাপান থেকে কেনা ইঞ্জিনটির জীবনকাল শেষ হয়েছে ২০ বছর আগে। গতি নিয়ন্ত্রণের তিনটি যন্ত্রের একটি ডেডম্যান ফুট প্যাডেল, যা পুরোপুরি বিকল বলে জানান ট্রেনচালকরা। কাজ করে না হ্যান্ড ব্রেক, গতি সামলানোর অন্যান্য ইলেকট্রিক ডিভাইসও পুরোপুরি বিকল। প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়েই চলতে হচ্ছে তাদের।
আর লোকোশেডের ইঞ্জিন মেরামতের শ্রমিকরা জানান, প্রতিটি ইঞ্জিনের জীবনকাল ২৫ বছর হলেও রেলবহরে যুক্ত আছে ৫০-৬০ বছরের ইঞ্জিনও। কোনো রকম জোড়াতালি দিয়ে চলছে। অনেক পুরনো হওয়ায় মেরামতের জন্য যন্ত্রাংশ পাওয়া যায় না ঠিকমতো।
পুরনো এসব মডেলের ইঞ্জিন বিশ্বের আর কোথাও নেই দাবি করে শ্রমিকরা বলছেন, মেরামতের যন্ত্রাংশ মেলে না কোথাও।
জানা গেছে, ২০০৯ সালে ৭০টি মিটার গেজ ইঞ্জিন কেনার প্রকল্প নেয়া হলেও ১২ বছর পর ২০২২ সালে তা বাতিল করা হয়।