ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি,শনিবার, ২৮ জানুয়ারি ২০২৩ : রাজধানীতে প্রকাশ্যে মোবাইল ছিনতাই চক্রের বেশির ভাগই ড্যান্ডাডাইডসহ বিভিন্ন ধরনের নেশায় আসক্ত শিশু বা তরুণ। নেশার টাকা জোগাড় করতে রাতের আঁধারে তারাই হয়ে উঠছে ছিনতাইকারী। এসব ছিনতাইয়ের মালও বিক্রি হয় নেশার আখড়ায়। সেখানে থেকে রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে প্রকাশ্যেই বিক্রি হচ্ছে চোরাই পণ্য।
রাজধানীর আবদুল্লাহপুর, ২৩ জানুয়ারি রাতে চলন্ত গাড়ি থেকে এক যাত্রীর মোবাইল টান দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই জনতার হাতে ধরা পড়ে চোর। যদিও ভুক্তভোগীর বাস ততক্ষণে আবদুল্লাহপুর ছেড়ে বহুদূরে।
প্রতিনিয়তই এ রাস্তায় মোবাইল কিংবা মূল্যবান সম্পদ খোয়াচ্ছেন যাত্রীরা। খোয়া যাওয়া সম্পদের গন্তব্য কোথায়, সে প্রশ্নই ছিল আটক হওয়া ছিনতাইকারীর কাছে। ছিনতাইকারীর বলেন, ‘অন্যজন করেছে এটা, আমাকে ফাঁসিয়ে দিয়ে চলে গেছে।’
এ ঘটনায় পুলিশ জানায়, তারা তো একদিন এইদিকে থাকে, অন্যদিন ওইদিকে থাকে। আমাদের অনুপস্থিতিতে তারা কাজ করার চেষ্টা করে।
রাজধানীতে প্রকাশ্যে কারা ছিনতাই করছে, আর মালামালগুলোই-বা কই যাচ্ছে, সে প্রশ্নের উত্তর জানতে টানা কয়েক দিন আব্দুল্লাহপুর এলাকায় অনুসন্ধান চালায় আরটিভি। অবশেষে মেলে এক ছিনতাইকারীর সাক্ষাৎ।
পরিচয় না প্রকাশ করার শর্তে তিনি জানান, একটা মোবাইলের দাম ধরেন পাঁচ হাজার টাকা, টঙ্গী গিয়ে সেটা দিয়ে দুই হাজার টাকা নিলাম। সেটার খাবার কিনলাম। ধরা পড়লে মাফ চাই। যে যেভাবে পারে আরকি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নেশার আখড়া থেকে হাতঘুরে চোরাই মোবাইলগুলো চলে যায় রাজধানীর প্রতিষ্ঠিত কিছু চোরাই মার্কেটে। মিরপুর ১১ নম্বরের বাউনিয়াবাঁধ এলাকা। নিশ্চিন্তে ব্যবসা চলছে চোরাই মোবাইলের। কাছে যেতেই কিছু চোরাকারবারি সটকে পড়লেও বাকিরা নিজেদের সৎ দাবি করেন।
তবে এক সবজি বিক্রেতার অভিজ্ঞতায় সব স্পষ্ট হয়। গত সপ্তাহে এ মার্কেট থেকে একটি ফোন কিনে থানা পর্যন্ত যেতে হয়েছে তাকে। অভিজ্ঞতার কথাও জানালেন তিনি।
তিনি বলেন, পুলিশ আমাকে ফোন দিয়ে বলে মোবাইল কি দেবে নাকি জেলে যাবে? আমি বলছি, ফোনটা তো আমি কিনেছি। আমি তো চুরি করিনি। একপর্যায়ে পুলিশের কাছে মোবাইলটা দিয়ে দিয়েছি।
পুলিশ জানায়, বাউনিয়াবাঁধ চোরাই মার্কেটের বেশির ভাগ দোকানির বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।
ডিএমপির পল্লবী জোনের সহকারী কমিশনার আবদুল হালিম জানান, এদের সংখ্যা এত বেড়ে গেছে যে, আমাদের ব্যাক টু ব্যাক অভিযানেও কোনোভাবেই কিন্তু এটাকে নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। অসংখ্য মামলা আছে তাদের বিরুদ্ধে।
তবে কামরাঙ্গীচরের লোহারব্রিজের পাশে এ চোরাই মার্কেটের অবৈধ কার্যক্রম প্রমাণে কারো অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হলো না। আরটিভির ক্যামেরা দেখেই লাপাত্তা সবাই। পরদিন পুলিশের অভিযানে পরিষ্কার হয় সবকিছু।