যেভাবে বিএনপির রাজনীতিতে এলেন রুমিন ফারহানা (ভিডিও)

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি,শনিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২২ : বিএনপির রাজনীতিতে রুমিন ফারহানা বেশ আলোচিত নাম। পেশায় আইনজীবী এই তরুণ নেত্রী রাজনীতিতে এসে স্বল্প সময়েই বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। সমসাময়িক ইস্যুতে তার ক্ষুরধার বক্তব্য, আইনি ব্যাখ্যা, যুক্তি দিয়ে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার ক্ষমতা তাকে নিয়ে গেছে এক অনন্য উচ্চতায়।

রুমিন ফারহানার ব্যক্তিত্ব, রুচিবোধ, বাচনভঙ্গি, টক শোতে সরব উপস্থিতি, পারিবারিক ঐতিহ্য, দল ও নেতৃত্বের প্রতি প্রতিজ্ঞা এবং রাজনীতির মাঠ থেকে সংসদে সোচ্চার ভূমিকার প্রশংসা রয়েছে রাজনৈতিক মহলে।

রুমিন ফারহানার বাবা অলি আহাদ ছিলেন এদেশের একজন প্রথিতযশা ও আদর্শবান রাজনীতিক। ভাষা আন্দোলনে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। তিনি রাজনীতি করেছেন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, শেরে বাংলা একে ফজলুল হক, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে। প্রতিষ্ঠালগ্নে তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ছিলেন।

ADVERTISEMENT

বাবার মৃত্যুর পর রুমিন ফারহানা রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। তার বিএনপির রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ার নেপথ্যে কী কারণ সেটি নিয়েও পাঠকদের আগ্রহ রয়েছে। যুগান্তরের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় বিএনপির রাজনীতিতে যোগদানের কারণ ও প্রেক্ষাপট নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন রুমিন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন যোবায়ের আহসান জাবের

তিনি বলেন, আমার বাবা যখন অসুস্থ তখন দেশনেত্রী খালেদা জিয়া আমাদের বাসায় এসেছেন, আমার বাবাকে দেখে গেছেন।আমার বাবা যেদিন মারা যান ২০ অক্টোবর, সেদিন সকালের ফ্লাইটে উনি চীন থেকে আসেন। এটা একটা বেশ দীর্ঘ ফ্লাইট এবং বেশ কষ্টকর। উনি পারতেন বাসায় এসে বিশ্রাম নিয়ে পরবর্তীতে আমাদের বাসায় এসে সমবেদনা জানাতে। কিন্তু উনি তা করেননি। উনি এয়ারপোর্ট থেকে সরাসরি হাসপাতালে এসেছেন।

ADVERTISEMENT

তিনি বলেন, আমি আমার বাবার একমাত্র সন্তান। আমি আমার বাবাকে যেদিন হারাই সেদিন মনে হয়েছে আমি পৃথিবীর সবকিছু হারিয়ে ফেলেছি। এ সময় উনি যখন আমার মাথায় হাত দিয়ে আমাকে সান্ত্বনা জানিয়েছিলেন, তখনই তার প্রতি আমার একটা ঋণ তৈরি হয়ে যায়। তারপর থেকে আমি সর্বস্ব দিয়ে চেষ্টা করেছি সেই ঋণ পরিশোধের।

রুমিন বলেন, ২০১৩-১৪ সালে যখন দেশে উত্তাল সময়; কাউকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।আমি এ কথাগুলো আগে কখনো বলিনি। তবে অনেকেই বলে তো যে হঠাৎ কিভাবে রুমিন ফারহানা উদয় হলো।

তাদের উদ্দেশেই আজকে বলি- কাউকে দেখা যায়নি ২০১৩-১৪ সালে। সবাই গর্তের নিচে ছিলেন। তখনই রুমিন প্রত্যেক রাতে দুটো-তিনটা চ্যানেলে টকশো করেছে। কারণ চ্যানেলগুলো কি করবে, পরিচিত মুখগুলো তো নেই। পরিচিত মুখগুলো হারিয়ে গেছে। তখন এই অপরিচিত রুমিনকেই নিতে হয়েছে। অপরিচিত রুমিনই চ্যানেল থেকে চ্যানেলে ঘুরে ঘুরে বিএনপির কথা বলেছে।

২০১৩-১৫ সাল, আজকাল তো কোনো কিছু মুছে যায়না; আর্কাইভে সব থাকে। ওই সময় কারা গেছেন, কাদের চেহারা দেখা গেছে, আর্কাইভ ঘাটলেই দেখা যাবে। তো সুতরাং ওই সময় আমি চেষ্টা করেছি দেশনেত্রীর ঋণ কিছুটা হলেও শোধ করার। আমার তো অনেক ঋণ উনার কাছে।

তিনি বলেন, আমার বাবার মৃত্যুর এক বছর পর উনি আমাকে একরকম না জানিয়েই ফরেইন অ্যাফেয়ার্স টিমের মেম্বার করেন। তখন ফরেইন অ্যাফেয়ার্স টিমের মেম্বার ছিলেন মাত্র ১০ জন। আমি বাদে বাকি ৯ জনই আমার বাবার সঙ্গে রাজনীতি করা। অর্থাৎ অত্যন্ত সিনিয়র রাজনীতিবিদ।

২০১২-১৩ সালে আমি তখন একদমই ছোট। কিন্তু উনি আমাকে সেই টিমের সদস্য করেন। সেই টিমের মিটিংয়ে আমি যখন ঘরের দরজা খুলে ঢুকি, তখন আমি ভেবেছিলাম ভুল ঘরে ঢুকে পড়েছি। কারণ সেখানে সবাই আমার বাবার বন্ধু। ওসমান ফারুক, শমসের মুবিন চৌধুরী, রিয়াজ রহমান, সাবিউদ্দিন আহমেদ এত সিনিয়র মেম্বার চারপাশে। আমি ভেবেছি নিশ্চয় আমি ভুল ঘরে এসেছি। পরে আমাকে বলা হলো, না আমাকে আসলে এই কমিটির সদস্য করা হয়েছে। তো এই ঋণগুলো উনার কাছে আমার আছে।