ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),বিনোদন প্রতিনিধি,সোমবার, ২৮ নভেম্বর ২০২২ : সংগীতশিল্পী ন্যান্সি গান করার পাশাপাশি মাঝে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। বিএনপির অঙ্গ সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার সহ-সভাপতি হিসেবে ২০১৪ সালের ১১ সেপ্টেম্বর দায়িত্ব নিয়েছিলেন। তবে সংগঠনটিতে বেশিদিন দেখা যায়নি তাকে। সংগঠনটি থেকে সরে আসলেও এখনো বিএনপির রাজনীতির আদর্শে বিশ্বাসী এই সংগীতশিল্পী।
সম্প্রতি ‘চ্যানেল 24 অনলাইন’-এর সঙ্গে সংগীত ও রাজনীতির ব্যাপারে খোলামেলা কথা বলেন ন্যান্সি। শুরুতেই এই গায়িকা জাসাস ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার সহ-সভাপতির পদের বিষয়ে বলেন, “একসময় এই সংগঠনের সঙ্গে ছিলাম। সেই পদ থেকে অনেক আগেই সরে এসেছি। অন্তত সেই সময় আমি কখনো কোনো পদ চাইনি।”
বিএনপির রাজনীতিকে মনে-প্রাণে সমর্থন করেন ন্যান্সি। পরিবারের সবাই বিএনপির সমর্থক। তার মা নেত্রকোনা জাসাস’র আমরণ সহ-সভাপতি ছিলেন বলে জানান ‘থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার’ সিনেমার ‘দ্বিধা’ গানের গায়িকা। তিনি বলেন, “আমরা বিএনপির রাজনীতির আদর্শে বিশ্বাসী। সেই সময় কোনো পদে থেকে সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাব, সেই সুযোগ ছিল না। রাজনৈতিক দল সমর্থক এবং একটি দলের সঙ্গে শতভাগ নিজেকে সম্পৃক্ত করা—দুটো একদমই আলাদা। তখন মনে হয়নি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে কাজ করতে হবে আমাকে। আমি যে বিএনপির একজন একনিষ্ঠ কর্মী, তা দেশের সবাই জানেন। এটা আমি কোনো পদে থাকি আর না থাকি সবাই জানবে। তবে ভবিষ্যতে সক্রিয়ভাবে রাজনীতি করব কিনা, তা ভবিষ্যৎ পরিবেশ ও পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে। এখন পর্যন্ত এ নিয়ে কোনো ভাবনা নেই।”
“ভবিষ্যতে হলে হতেও পারে। অতীতে অনেকে লিখেছেন, ন্যান্সি এই পদে-ওই পদে জয়েন করছে শিগগিরই। সেসব বিষয়ে কিছুই জানতাম না আমি। অথচ সংবাদ হতো। এমন খবরও এসেছে, ন্যান্সি এমপি হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমি কিছু জানি না। আর কোনো পদের দায়িত্ব নিলে সেটা তো আমি আগে জানব। তবে ভবিষ্যতে যদি এমন পরিস্থিতি আসে, দল কর্মী হিসেবে আমাকে চাচ্ছে, তাহলে অবশ্যই ভেবে দেখব।”
জনপ্রিয় সংগীতশিল্পীদের মধ্যে একজন ন্যান্সি। প্রতিটি শিল্পীর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা থাকে নিজ কর্ম নিয়ে। সুরেলা কণ্ঠের এই গায়িকার কাছে গান নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানতে চাওয়া হয়। সংগীতের প্রতি তীব্র ভালোবাসা থেকে রাজনৈতিক সহিংসতা রোধের কথা জানান এই গায়িকা।
ন্যান্সি বলেন, “গানের পরিবেশ-পরিস্থিতির সঙ্গে রাজনীতির সংযোগ রয়েছে। বিএনপির একজন অনুরাগী হিসেবে খুব কাছাকাছি সময়ে দল পরিবর্তনের সুস্পষ্ট আভাস পাচ্ছি। এ নিয়ে আমরা ভীষণ আশাবাদী। যদি আমার সমর্থিত দল আসীন হয়, তখন আমার অনুরোধ থাকবে—কোনো শিল্পী বা জনসাধারণের সঙ্গে যেন অহিংস আচরণ না হয়। যে দলই ক্ষমতায় থাকুক, লেখক, সংগীতশিল্পী বা অভিনেতা-অভিনেত্রী এবং খেটে খাওয়া মানুষ, দিন শেষে তার কাজই আত্মপরিচয়। কাজ করেই তার জীবিকা নির্বাহ হয়। একজন মানুষের আত্মপরিচয়ে এমন আঘাত করা ঠিক নয় যেন সে গ্লানিতে ভোগে। সব মানুষ সব দল পছন্দ করবে না, এটা স্বাভাবিক।”
প্রতিটি মানুষের বক্তব্য দেয়া, মত প্রকাশের স্বাধীনতা দেয়া উচিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমি যেমন বলছি গত কয়েক বছর ধরে আগের মতো গান করতে পারছি না। এটা সবাই জানেন। একজন মানুষকে আষ্টেপৃষ্ঠে তার অস্তিত্বকে কেড়ে নেয়ার চেষ্টা খুব অন্যায়। আমি যেহেতু শিল্পী, তাই গান নিয়ে ভবিষ্যৎ ভাবতে গেলে এটাই ভাবি।”