ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি,সোমবার, ০৩ অক্টোবর ২০২২ : জ্যোতির্বিদ্যা ও মহাকাশ প্রযুক্তির ব্যবহার করে মহাকাশ সম্পর্কে জানার প্রয়াসকেই মহাকাশ অনুসন্ধান বলে।
প্রাচীনকালে জ্যোতির্বিদরা দূরবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে মহাকাশ নিয়ে অনুসন্ধান করতেন। কিন্তু সেই গবেষণাগুলো সম্পূর্ণ যৌক্তিক ধারণা দিতে ব্যর্থ হত। কিন্তু বর্তমান পৃথিবীতে আছে নাসার মতো কিছু মহাকাশ গবেষণা সংস্থা যা মহাকাশ নিয়ে জ্ঞানের ভাণ্ডার দিন দিন করে চলছে সমৃদ্ধ।
মার্কিন বেসরকারি মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা যার পূর্ণরূপ ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে এর সদর দপ্তর অবস্থিত। ১৯৫৮ সালে রাষ্ট্রপতি ডিউইট ডি. এইসেনহাওয়ারের হাত দিয়ে প্রথম শুরু হয় এ সংস্থাটির যাত্রা। ১৯৫৮ সালের ১ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করে নাসা। যাত্রার শুরু থেকেই মহাকাশ নিয়ে মানুষকে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন তথ্য দেওয়ার মাধ্যমে এবং মহাকাশের প্রতি মানুষের জ্ঞানের পরিধি বাড়িয়ে দিয়ে মানব জগতকে সমৃদ্ধ করে চলছে নাসা।
প্রতিষ্ঠার পর থেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বেশিরভাগ মহাকাশ অনুসন্ধানের নেতৃত্বে নাসা প্রধান ভূমিকা পালন করে, যার মধ্যে অ্যাপোলো মুন ল্যান্ডিং মিশন, স্কাইল্যাব স্পেস স্টেশন এবং স্পেস শাটল মিশন অন্যতম। ১৯৭২ সালে, নাসা স্পেস শাটল প্রোগ্রাম শুরু করে, যা ২০১১ সাল পর্যন্ত চলে।
নাসার মহাকাশ গবেষণায় সবচেয়ে বড় অর্জন মানুষকে চাঁদে পাঠানো। প্রথমবারের মতো পৃথিবী ছাড়া অন্য কোনো গ্রহে মানুষের পদচিহ্ন পরে ২০ জুলাই, ১৯৬৯।
১৯৯৭ সালে শনি গ্রহ নিয়ে গবেষণায় নামে নাসা। মিশনের নাম ছিল ক্যাসিনি মিশন এবং শনিগ্রহ নিয়ে নাসার গবেষণায় মানুষ পায় সৌরজগতের সবচেয়ে শ্বাসরুদ্ধকর কিছু ছবি। এবং সে যাত্রায় চাঁদ এবং শনি গ্রহ সম্পর্কে প্রচুর তথ্য সংগ্রহ করে নাসা।
সৌরজগতের সবচেয়ে সুদূরপ্রসারী আবিষ্কার ছিল প্লুটো। নয় বছরের যাত্রার পর ২০১৫ সালে নাসার রোবটযান নিউ হরাইজনস প্রোব প্লুটোর কক্ষপথে ছেদ করে এবং সেই গবেষণাও মানবজাতিকে উপহার দেয় আরও অজানা অনেক তথ্য।
২০১২ সালে নাসার মহাকাশ যান পৌঁছায় মঙ্গলগ্রহে। আর মঙ্গলগ্রহ নিয়ে নাসার গবেষণা এখনও চলছে। মঙ্গলগ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব খোঁজা থেকে শুরু করে নানা গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে বিজ্ঞানীরা।
নাসা, রসকসমস, জাক্সা, এসা এবং সিএস এ নিয়ে গঠিত আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন একটি যৌথ প্রকল্প। পৃথিবীর কক্ষপথে এই মানবসৃষ্ট স্টেশনটি মহাকাশ গবেষণায় অনন্য ভূমিকা রেখেছে। এ স্টেশনটি ২০০০ সালে কাজ শুরু করে। মহাকাশচারীদের গবেষণায়, এবং মহাকাশে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানোর জন্য এ পদক্ষেপটি সত্যি অবিস্মরণীয়।
মহাকাশ গবেষণায় নাসার এসব অবদান মহাকাশ নিয়ে মানুষের জানার আগ্রহকে দিন দিন বাড়িয়ে দিচ্ছে। আর বিশাল এই সৌরজগতকে আমরা ঠিক কতটুকু চিনি বারবার সেই ধারণাই পাল্টে দিচ্ছে নাসা।