ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি,২ সেপ্টেম্বর ২০২২ : রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে রূপান্তরকামী নারী মাকসুদুর রহমান ডায়না হত্যা মামলার রহস্য উদ্ঘাটিত হয়েছে। বুধবার (৩১ আগস্ট) ঢাকা মহানগর পুলিশের ওয়ারী বিভাগের উপকমিশনার জিয়াউল আহসান তালুকদার সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন।
জিয়াউল আহসান বলেন, সম্প্রতি বিয়ে করা লাদেন ‘মুক্তি চাইছিলেন’ ডায়নার কাছ থেকে। কিন্তু ডায়না তাকে ছাড়তে চাইছিলেন না। এর পর গত ১৬ আগস্ট শারীরিক সম্পর্কের একপর্যায়ে বাসার টেবিলে থাকা হাতুড়ি দিয়ে ডায়নার মাথায় আঘাত করে লাদেন।
গত ২৭ আগস্ট গোলাপবাগের ওই বাসা থেকে ডায়নার অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তার মরদেহ ১১ দিন ঘরে পড়ে ছিল।
একতলা ওই বাড়িতে একাই থাকতেন মাকসুদুর রহমান ডায়না।
ডায়নার ছয় ভাই-বোন যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন। তিনি নিজেও আগে সেখানে থাকতেন। দু-বছর আগে দেশে ফিরে গোলাপবাগে নিজেদের ওই বাসায় থাকতে শুরু করেন।
পুলিশ কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান জানান, ডায়নাকে হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে গত সোমবার নালিতাবাড়ি থেকে লাদেনকে তারা গ্রেফতার করেন। মঙ্গলবার আদালতে তোলা হলে লাদেন ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
তিনি আরও বলেন, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ ডায়না সমাজের কারো সঙ্গে মিশতেন না। লাদেন তার বাসায় কাজ করতেন। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিছু দিন আগে লাদেন অন্য একজনকে বিয়ে করেন। বিয়ের পরও লাদেন ও ডায়নার মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক চলতে থাকে। কিন্তু লাদেনের ওই বিয়ে আর নতুন জীবন কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলের না ডায়না। লাদেনও চাইছিলেন ডায়নার সঙ্গে সম্পর্ক শেষ করে মুক্ত জীবনে ফিরতে।
জিয়াউল আহসান বলেন, আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী ডায়না ছাড়তে চাইছিলেন না লাদেনকে। শারীরিক সম্পর্ক চালিয়ে যাওয়ার জন্য তিনি লাদেনকে অর্থ দিতেন। লাদেন বলেন, অতিষ্ঠ হয়ে তিনি ১৬ আগস্ট হাতুড়ি দিয়ে ডায়নার মাথায় আর হাঁটুতে আঘাত করেন। রক্তাক্ত ডায়না অচেতন হয়ে পড়লে লাদেন বাড়ির ফটক না খুলে টপকে পালিয়ে যান।
পুলিশ বলছে, বাড়ির দেয়াল অনেক উঁচু হওয়ায় এবং প্রতিবেশীদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ না থাকায় ডায়নার মরদেহ ঘরের মধ্যেই পড়ে ছিল, আশপাশের কেউ বিষয়টি টের পায়নি।
https://youtu.be/ao2gXceczxU