ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি,সোমবার , ২৯ আগস্ট ২০২২ : রাজধানীর দক্ষিণখানে ছাদ থেকে লাফিয়ে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী আত্মহত্যার ঘটনায় বাবাকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে নিহতের মা বাদী হয়ে দক্ষিণখান থানায় মামলা করেন। পলাতক আসামি বাবা শাহীন ইসলামকে ধরতে মাঠে নেমেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
এদিকে, মহাখালীতে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেছে নিহত শিক্ষার্থীর সহপাঠীরা।
শনিবার (২৭ আগস্ট) দুপুরে দক্ষিণখান মোল্লারটেক এলাকার বাসিন্দা ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী সানজানা বাসার ছাদ থেকে লাফ দেন। মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে তাকে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে পঙ্গু হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত সানজানার কাছ থেকে একটি চিরকুট পাওয়া যায়। বাবাকে ‘পশু’ ও ‘রেপিস্ট’ বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তার মৃত্যুতে ক্ষুব্ধ সহপাঠীরা মহাখালীতে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেছেন। আত্মহত্যা নয়, পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তার সহপাঠীরা।
এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের কিছু ফ্রেন্ড ওখানে গিয়েছে। শরীরে চিহ্ন দেখে স্পষ্ট বোঝা গেছে সহিংসতা চালানো হয়েছে।
আরেক সহপাঠী বলেন, সানজানা কখনোই আত্মহত্যাপ্রবণ মেয়ে ছিল না। তার শরীরে নির্যাতনের যে দাগ দেখা যাচ্ছে, তা থেকে স্পষ্টভাবে বোঝা যায় যে তাকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা যে মরদেহ দেখতে পেয়েছি, ১২ তলা থেকে পড়ার পর যেভাবে থেঁতলে যাওয়ার কথা, সে রকম কিছুই হয়নি।
এ ঘটনায় নিহতের বাবাকে অভিযুক্ত করে মামলা করেছেন তার মা। দক্ষিণখান থানায় দায়ের করা মামলার আসামি বাবা শাহীন ইসলামকে অচিরেই গ্রেপ্তারের কথা জানায় পুলিশ।
ঢাকা মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ফারুক হোসেন বলেন, আত্মহত্যার কারণ সে সুইসাইডাল নোটে লিখে যায়। এতে তার বাবাকে দায়ী করে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দক্ষিণখান থানাতে একটি মামলা হয়েছে। আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে তার বাবাকে আসামি করা হয়েছে। আমরা তার বাবাকে গ্রেপ্তার করব। মামলা তদন্ত শেষে আমরা আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করব। তার বাবা ও মায়ের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে যে বিরোধ চলছিল, এ বিরোধকে কেন্দ্র করে প্রায়ই তার বাবা তার মাকে মারধর করত। সেই বিষয়টি নিয়ে ভুক্তভোগীর মা থানায় মাঝে মাঝে আসত। ইতিপূর্বে থানায় জিডিও করেছিল। সেই বিষয়টা নিয়ে পুলিশ তাদের পারিবারিক বিরোধ মিটাতে পুলিশ কাজ করেছিল। আইনগত যে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার, সেগুলো নিয়েও পুলিশ কাজ করছিল। এরমধ্যেই সানজানা আত্মহত্যা করে।
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে লাশ।