ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি,৩০ জুলাই, ২০২২ : পাকিস্তানের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রথম নারী হিসেবে সহকারী পুলিশ সুপার (ডিএসপি) হয়ে নতুন ইতিহাস রচনা করলেন মনীষা রূপেতা।
২৬ বছর বয়সী মনীষা সিন্ধু পাবলিক সার্ভিস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে পাকিস্তানে একটি পুরুষ-শাসিত পেশায় নিজের নাম লিখিয়েছেন।
মনীষা বড় হয়েছেন পাকিস্তানের পশ্চাৎপদ ছোট একটি জেলা জাকুবাবাদে। সেখান থেকেই তিনি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা লাভ করেন। তার বাবা ছিলেন ব্যবসায়ী। মনীষার বয়স যখন ১৩ বছর, তখন মারা যান তার বাবা।
মনীষার মা একাই পাঁচ সন্তানকে বড় করেছেন। সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে এক সময় তিনি করাচিতে চলে যান। জাকুবাদের জীবনের কথা স্মরণ করে মনীষা বলেন, মেয়েদের শিক্ষার পরিবেশ সেখানে নেই। মেয়েদের শুধুমাত্র মেডিকেল শিক্ষার জন্যই উপযুক্ত বলে মনে করা হয়।
মনীষার তিন বোন এমবিবিএস ডাক্তার, আর তার একমাত্র ও ছোট ভাই মেডিকেল ম্যানেজমেন্ট নিয়ে পড়াশোনা করছে।
মনীষাও চিকিৎসক হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু নম্বর কম থাকায় এমবিবিএসে ভর্তি হতে পারেননি। এরপর তিনি ফিজিক্যাল থেরাপি নিয়ে পড়াশোনা করেন। এক সময় কাউকে কিছু না জানিয়ে তিনি সিন্ধু পাবলিক সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকেন। তিনি এ পরীক্ষাতে ১৫২ জনের মধ্যে ১৬তম স্থান লাভ করেন।
পাকিস্তানে নারীরা সাধারণত পুলিশ স্টেশন ও আদালতের ভেতরে যান না। এই জায়গাগুলো নারীদের জন্য উপযুক্ত বলে মনে করা হয় না। কিন্তু মনীষা বলেন, ভালো পরিবারের মেয়েরা থানায় যায় না, এই ধারণাটা বদলাতে চাই।
তিনি বিশ্বাস করেন যে নারীরা অনেক অপরাধের প্রাথমিক লক্ষ্য এবং দেশে সবচেয়ে নিপীড়িত। মনীষা বলেন, নারীদের সুরক্ষার জন্য নারীদেরই প্রয়োজন। এ কারণেই আমি সব সময় পুলিশ বাহিনীর অংশ হতে চেয়েছি।
ডিএসপি হিসাবে নিয়োগ পাওয়া আগে মনীষাকে করাচির সবচেয়ে দুর্গম এলাকা লিয়ারিতে প্রশিক্ষণ নিতে হয়েছে। মনীষাই প্রথম নারী যিনি ওই এলাকার পুলিশ বিভাগে অফিসার হয়েছেন।