মিটার চুরি করে ‘মুক্তিপণ’ দাবি, টাকা দিলেই ফেরত

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি,২৯ জুলাই, ২০২২ : চুরি হয়েছিল বিদ্যুতের মিটার, আবার ছয় হাজার টাকার বিনিময়ে সেই মিটার ফেরত পেলেন মানিকগঞ্জ সদরের আসলাম নামে এক ব্যক্তি। মুক্তিপণ আদায়ের অনেক ঘটনার কথা শোনা যায়, তবে মিটার চুরি করে তা টাকার বিনিময়ে ফেরত এমন ঘটনা নতুন। মানিকগঞ্জের সদর উপজেলায় এ ধরনের কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। তবে তিন-চার মাস ধরে মিটার চুরির ঘটনা ঘটলেও চোরদের শনাক্ত করা যায়নি।

চুরি হওয়া কয়েকজন মিটার মালিকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চুরির পর চোরের দল মিটার বোর্ডে একটি মোবাইল নম্বর রেখে যায়। ওই নম্বরে যোগাযোগ করে তাদের দাবি করা টাকা বিকাশের মাধ্যমে পরিশোধ করলে মিটার ফেরত দেওয়া হয়। চুরি যাওয়া মিটারের বদলে নতুন মিটারের সংযোগ নিতে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা খরচের পাশাপাশি নানা ঝামেলা পোহাতে হয়। মূলত ঝামেলা এড়াতেই চোরের প্রস্তাবে রাজি হন মিটার মালিকরা। আর চোরের দলও এই সুযোগটি নিয়ে থাকে বলে জানান ভুক্তভোগীরা।

ঢাকা-আরিচা মহাসড়কসংলগ্ন মানিকগঞ্জের হারুন শিকদারের সরিষা ভাঙানো তেলের মিল। মিলের দায়িত্বে আছেন বড় ভাই আলমাস শিকদার। তিনি জানান, গত ঈদের কয়েক দিন আগে সকালে মিল চালু করতে গিয়ে দেখেন বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন। মিলঘরের বাইরের ওয়ালে সংযুক্ত মিটারটি নেই। এর বদলে মিটার বোর্ডে ঝোলানো রয়েছে একটা পলিথিনের প্যাকেটে মোড়ানো সাদা কাগজ। কাগজে একটা মোবাইল নম্বর লেখা। ওই নম্বরে যোগাযোগ করা হলে ওপর প্রান্ত থেকে মিটারের বদলে ১০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। দুদিন ধরে দুপক্ষের মধ্যে বেশ কয়েক দফায় দরাদরি করে অবশেষে ছয় হাজার টাকায় রফা হয়। সেই নম্বরে আলমাস শিকদার ছয় হাজার টাকা পরিশোধ করেন। এরপর নির্দেশনা অনুযায়ী ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের জাগীর ব্রিজের পশ্চিমের একটি জঙ্গল থেকে মিটারটি উদ্ধার করা হয়।

একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে মানিকগঞ্জ পৌর এলাকার লৌখণ্ডা গ্রামের শুকুর আলীর সেচ প্রকল্পে। এ ঘটনায় তিনি সদর থানায় একটি জিডিও করেন। তিনি জানান, মিটার বোর্ডে ঝুলিয়ে রাখা মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে ১০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। অনেক দরাদরি করে বিকাশের মাধ্যমে ছয় হাজার টাকা দেওয়া হয়। পরে তাদের নির্দেশ অনুযায়ী, ব্র্যাক অফিসের পেছনের জমি থেকে উদ্ধার করা হয় মিটার।
ভুক্তভোগী জামাল উদ্দিনের ভাই আসাদুল ইসলাম বলেন, নতুন মিটারে সংযোগ নিতে হলে কমপক্ষে ৩০ হাজার টাকা খরচ হবে।

এ ব্যাপারে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম ওবায়দুল্লা আল মামুন বলেন, মিটার চুরির বিষয়টি লোকমুখে আমরা জানতে পেরেছি কিন্তু গ্রাহকদের কাছ থেকে কোনো অভিযোগ পাইনি।

মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ গোলাম আজাদ খান বলেন, বিদ্যুতের মিটার চুরির রহস্য উদ্‌ঘাটনে পুলিশের কয়েকটি টিম কাজ করছে। তিনি আরও জানান, তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে।