দেখে মনে হবে ৭-৮ বছরের শিশু, কিন্তু পড়ছেন অনার্স ১ম বর্ষে (ভিডিও)

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),পাবনার আটঘরিয়া উপজেলা প্রতিনিধি,২৬ জুলাই, ২০২২ : বই হাতে গ্রামের পথ ধরে হেঁটে যাওয়া তানিয়াকে দেখে মনে হবে ৭-৮ বছরের কোনও শিশু প্রাইমারি স্কুলে যাচ্ছে। কিন্তু পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার হাপানিয়া গ্রামের তাজুল ইসলাম ও নাছিমা খাতুন দম্পতির মেয়ে তানিয়ার বয়স ১৯ বছর। অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী তিনি।

২০০৩ সালে স্বাভাবিক শিশুর মতই জন্ম নেন তানিয়া। কিন্তু পরবর্তীতে বয়স অনুযায়ী বৃদ্ধি পায়নি তার শারীরিক গঠন। ফলে দিন দিন দুশ্চিন্তা জেঁকে বসছে তানিয়ার বাবা মায়ের মনে। তাকে বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা করিয়েও সুফল পাননি তারা।

তানিয়ার মা বলেন, আমরা টাকার অভাবে আমাদের মেয়েকে আর ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে পারলাম না। দুঃখ-কষ্ট নিয়ে এভাবেই আমার মেয়েকে লেখাপড়া করাচ্ছি। তানিয়ার বাবা বলেন, মেয়েটাকে হয়তো বিয়ে দিতে পারবে না যখন এ কথাটা বলে তখন আমার অন্তরে লাগে।

তবে তানিয়ার প্রবল ইচ্ছাশক্তির কাছে হার মেনেছে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা। সমাজের বাঁকা চোখ ও কটু কথা উপেক্ষা করে চালিয়ে গেছেন শিক্ষা জীবন। ২০১৯ সালে এসএসসি ও ২০২১ সালে এইচএসসি পাশ করে রেখেছেন মেধার স্বাক্ষর। বর্তমানে আটঘরিয়া সরকারি কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী তানিয়া।

তানিয়া বলেন, অনেকে বলে এই মেয়েটা ছোট, বাওন এমন অনেক কথা বলে। যে কোনও একটা ভালো চাকরি পেয়ে যাতে আমি নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারি। গরীব বাবা মায়ের পাশে দাঁড়াতে পারি।

চিকিৎসক জানিয়েছেন, আধুনিক চিকিৎসা পেলে এখনো স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবে তানিয়া।

চিকিৎসক বলেন, এটা নিতান্তই দুর্ভাগ্য। অনেক প্রতিবন্ধীই আছে যেটা আধুনিক চিকিৎসায় স্বাভাবিক হয় বা স্বাভাবিকের কাছাকাছি জীবন যাপন করানোর মতো অবস্থায় নিয়ে আসা যায়। আর্থিক ও চিকিৎসাগত সহায়তা সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা প্রয়োজন।

আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে তানিয়ার আইনজীবি হবার স্বপ্ন। তবে আশার কথা হলো তানিয়ার চিকিৎসায় পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন স্থানীয় শিক্ষক ও জনপ্রতিনিধিরা।